বিকেলে শাহবাগে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ‘মহাসমাবেশ’

বিকেলে শাহবাগে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ‘মহাসমাবেশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিপীড়ন বন্ধ, আইন সংশোধন এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভের চতুর্থ দিন গতকাল বৃহস্পতিবারও উত্তাল ছিল রাজধানীর শাহবাগ মোড়। এই দাবিতে আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে আন্দোলনরত বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম 'ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ'।

একই স্থানে বিকেল ৪টায় ধর্ষণবিরোধী সমাবেশের ডাক দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র জনতার মঞ্চ’।

ধর্ষণ ও নিপীড়ন বন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ এনে তারা এ সমাবেশের ডাক দেয় তারা।

 

বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহবাগে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি থেকে মহাসমাবেশের ডাক দেন এ প্ল্যাটফর্মের অন্যতম আহ্বায়ক ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়।

এ ছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট শুক্রবার বিকালে সারা দেশে সব শহীদ মিনারে ধর্ষণবিরোধী সমাবেশের ডাক দিয়েছে।

নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে ধর্ষণসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার থেকেই শাহবাগে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগে ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।

সেখানে স্লোগান ওঠে- 'ধর্ষকদের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও', 'আমার মাটি, আমার মা, ধর্ষক তোদের হবে না', 'বুকের ভিতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর', 'মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই', 'এক দুই তিন চার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গদি ছাড়'।

এ দিকে অব্যাহত ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।


আরও পড়ুন: চিঠি এসেছে চিঠি, এই ডাক আজ শুধুই স্মৃতি


সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ার কারণে, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ার কারণে ধর্ষণ আজ মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে এক হাজার ধর্ষণের মধ্যে চারজন বিচার পাচ্ছে। অর্থাৎ সামাজিক সমস্যার সঙ্গে আইনগত সমস্যাগুলো আছে, সেগুলোও প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. লুৎফুর রহমান বলেন, ধর্ষকরা সংখ্যায় কম হলেও, তারা অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা রাজনৈতিক এবং পেশীশক্তির মাধ্যমে এসব কাজ করে বেড়ায়। ধর্ষণের আইন সংশোধন করতে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করলে ধর্ষণের মাত্রা কমবে। ছাত্র সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো যেভাবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, সেভাবে আমাদের সবার জেগে উঠা উচিত।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মঈন, ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, থিয়েটার অ্যান্ড পাফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীন, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জিন্নাত হুদা, স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট সাইফুল ইসলাম খান, সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মকবুল হোসেন ভূঁইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য ড. হুমায়ুন কবির, সহাকরী প্রক্টর আবদুর রহিমসহ  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের  প্রায় অর্ধশত  শিক্ষক এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

news24bd.tv নাজিম