শাকিব ভাইয়ের সাথে কাজ করতে কেমন জানি লাগে: মাহিয়া মাহি

শাকিব ভাইয়ের সাথে কাজ করতে কেমন জানি লাগে: মাহিয়া মাহি

ফাতেমা কাউসার

প্রথমবার সরকারি অনুদানের সিনেমায় অভিনয় করছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। যেখানে প্রথম রোশানের বিপরীতে দেখা যাবে তাকে। শ্যূটিং এর ফাঁকে তিনি গল্প জমিয়েছেন নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার ফাতেমা কাউসারের সাথে। নিজের সংসার ভাঙ্গার গুঞ্জন, ক্যারিয়ার, ইন্ড্রাস্ট্রির নানা বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন মাহি।

প্রশ্ন: করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতি। আবারো শুরু হলো শুটিং। কেমন লাগছে?

মাহিয়া মাহি: খুব ভালো লাগছে। কারণ একটা সময় মনে হয়েছিল আর মনে হয় সব কিছু স্বাভাবিক হবে না।

আর মনে হয় ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো হবে না। বয়সটা মনে হয় করোনার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আর মনে হয় সিনেমা করতে পারব না। আলহামদুলিল্লাহ সে পরিস্থিতি থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। শুটিং শুরু হয়েছে। ভালো লাগছে।

প্রশ্ন: শুটিং ইউনিটে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানা হচ্ছে?

মাহিয়া মাহি: সবাই মেনে চলার চেষ্টা করছে। প্রোডাকশনের পক্ষ থেকেও মাস্ক, সেনিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। আমি শুটিং থাকাতে সব সময় মাস্ক পরে থাকতে পারছি না। কিন্তু বাকিরা পারছে।

news24bd.tv

প্রশ্ন:প্রথম অনুদানের সিনেমায় দেখা যাবে আপনাকে কীভাবে দর্শকদের সামনে আসছেন আপনি?

মাহিয়া মাহি: অবশ্যই ভালো লাগছে। কারণ এর আগে আমার সুযোগ হয়নি কাজ করার। কখনো প্রস্তাবও পাইনি। গল্পটা মুক্তিযুদ্ধের। আমাদের সবার মধ্যেই ৬৯, ৭০এর ফিলিংটা আছে। মুক্তিযুদ্ধ হওয়ার আগের যে পূর্ব প্রস্তুতি সেগুলো নিয়েই সিনেমা। প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস আপু যখনি আমাকে গল্পটা শুনিয়েছে আমি সেকেন্ডটাইম চিন্তা না করেই হ্যাঁ বলে দিয়েছি। এখানে সত্তরের দশকের একটি মেয়ের চরিত্রে দেখা যাবে আমাকে। গল্প বলব না। হলে গিয়ে দেখতে হবে।

প্রশ্ন: আশীর্বাদে অপু বিশ্বাসের কাজ করার কথা ছিল সেই জায়গায় আপনি করছেন এটা কি আপনার জন্য আশীর্বাদ?

মাহিয়া মাহি: অবশ্যই! আশির্বাদ। যেহেতু আগে সুযোগ হয়নি এই ধরনের ছবিতে কাজ করার তাই অবশ্যই আশির্বাদ।

news24bd.tv

প্রশ্ন: অল্প সংখ্যক অনুদানের ছবি আলোচনায় আসে আপনার কাছে কি মনে হয় এই সিনেমা কতটা দর্শক গ্রহণ করবে?

মাহিয়া মাহিয়া: আমরা কাজটা শুরু করেছি অনেক আশা ভরসা নিয়ে। গল্পটাও স্ট্রং। আমার মনে হয় দর্শকরা পছন্দ করবে। এটাও খুব আলোচিত একটা প্রজেক্ট হবে।

প্রশ্ন: অনুদানের সিনেমা দেবী প্রচারণার কারণেই হলে এতো দর্শক টানতে পেরেছে বলে অনেকের ধারণা। আপনাকে কতটা এই সিনেমার প্রচারণায় দেখা যাবে?

মাহিয়া মাহি: ধরেন আপনার এলাকায় একটা মেলা হচ্ছে। কিন্তু সেটার কোনো প্রচারণাই হলো না। মানুষ জানেই না এই মেলা সম্পর্কে। তাহলে যাবে কীভাবে? জানতে জানতে হয়তো মেলাই শেষ হয়ে গেল। সেরকম অনেক সিনেমা পাবলিসিটির কারণেই প্রচুর হিট মনে হয়। আসলে কিন্তু সিনেমা খুব একটা চলে নাই। তবে এটা সত্য প্রচারণা সিনেমার জন্য খুব দরকার। তাই এই ছবির জন্য আমি জান প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করব। মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে আশীর্বাদ আশির্বাদ আশির্বাদ।

প্রশ্ন: আশীর্বাদের চরিত্র আপনার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে?

মাহিয়া মাহি: খুব চ্যালেঞ্জিং কারণ আমি মোটেও শান্ত শিষ্ট না। অনেক চঞ্চল। এটা যারা আমাকে ফলো করে সবাই জানে। তাই এরকম চরিত্র হলেই আমার কষ্ট হয়। যদিও নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক ভাই আমাকে চরিত্রে ঢুকানোর চেষ্টা করছে।

প্রশ্ন: রোশানের সাথে প্রথম কাজ দুজনের কেমিস্ট্রিটা কেমন? আর রোশানের মধ্যে সুপারস্টার হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু দেখছেন আপনি?

মাহিয়া মাহি: ও এতো লম্বা!!আমারওতো পায়ের নিচে ইট দিয়ে তারপর ওর সাথে শুটিং করতে হয়। রোশান খুব ভালো। আশা করি দর্শকও আমাদেরকে একসাথে বড়পর্দায় দেখে পছন্দ করবে। আর সুপারস্টার হওয়ার মতো সব গুণ ওর মধ্যে আছে। তারপরও গড গিফটটেড একটা ব্যাপার আছে। যেটা দর্শককে আকর্ষণ করে। ইনশাল্লাহ আমার কাছে মনে হয় ওরকম একটা পর্যআয়ে ও যাবে।

news24bd.tv

প্রশ্ন: শাকিব খানের সাথে আপনার দ্বিতীয় সিনেমা নবাব এলএলবি। শুটিংও শুরু হয়ে গিয়ছে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ?

মাহিয়া মাহি: শাকিব ভাইয়ের সাথে কাজ করতে মাঝে মাঝে কেমন জানি লাগে। কারণ ওনিতো একজন মেগাস্টার। একজন সিনিয়র আটিস্ট। কাজ করতে গেলে ভদ্র আদব কায়দা টাইপের লুক নিয়ে থাকতে হয়। এগুলো আসলে শুটিং এ যাওয়ার আগে মনে হয়। তার সামন গেলে পুরাই আলাদা। মানুষ যেমন ভাবে আসলে সেরকম না। একবারেই তার উল্টো। আমি এর আগেও কাজ করেছি সে প্রচণ্ড, দুষ্ট টাইপের ছেলে। তার সাথে কাজ করতে খুব মজা লাগে।

প্রশ্ন: বিএফডিসিতে বর্তমান যে সংকট, দলাদলি তার থেকে উত্তরণের উপায় কী বলে আপনি মনে করেন?

মাহিয়া মাহি: সবার আসলে সিনেমার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। দলাদলি করে কোনো লাভ নাই।   প্রতিযোগিতা করা উচিত সিনেমা বানানো নিয়ে। কে কার চেয়ে বেশি সিনেমা বানাতে পারে তা নিয়ে। অকাজের দলাদলির কারণেই সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। শিল্পীদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। কারণ এখন কিছু করলেই ফেসবুকে চলে আসে। মানুষ এগুলো দেখলে খারাপ বলে।

প্রশ্ন: মাহির সংসার ভাঙ্গার গুঞ্জন প্রায়ই শোনা যায় আসলে কেমন চলছে মাহির সংসার?

মাহিয়া মাহি: এরকম অনেক পেপার অনলাইনে দেখেছি আমার নাম দিয়ে এই রকম নিউজ করছে। মাহিয়া মাহি বলেছেন……অথচ আমি এমন কিছুই বলি নাই। এটা ঠিক না। আমি বিয়ে যেরকম ধুমধাম করে করেছি আল্লাহ না করুক এমন কিছূ হলে সেটাও আমি ধুমধাম কর জানাব সবাইকে। আমরা ভালো আছি। যদিও আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৭বার অপুকে বলি থাকব না তোমার সাথে। কিন্তু আমার মনে হয় আমরা শেষ পর্য্ন্ত একসাথে থাকব। তবে দয়া করে এরকম নিউজ করবেন না। কারণ আমার শ্বশুড় বাড়ির অর্থাৎ সিলেটের লোকজন অনেক কনজারভেটিভ। তারা এসব নিউজ দেখলে মেনে নিতে পারে এগুলো আমার উপর প্রভাব ফেলে। অপু এসব নিউজের সাথে খাপ খাইয়ে নিলেও তারা এখনো পারেনি।

news24bd.tv

প্রশ্ন: আপনার কাছে কি মনে হয় কেনো কয়দিন পরপর এমন নিউজ হয়?

মাহিয়া মাহি: আসলে অপু একটুও রোমান্টিক না। এটা আমার সবচেয়ে বড় কমপ্লেইন। আমি হয়তো স্ট্যাটাস দিচ্ছি “আকাশে চাঁদ উঠেছে তোমার কথা মনে পড়ছে” বা অপুর সাথে খুব রোমান্টিক ছবিও আপলোড করছি। কিন্তু অপু বছরে একবারও কোনোদিন একটি স্ট্যাটাস অথবা একটি ছবিও দেয় না। কেনো দেয় না? কারণ ওর লজ্জা লাগে। মাঝে মাঝে ডিসাইট করি ওর সাথে ছবিও দিবো না স্ট্যাটাস দিব না। আর সবাই মনে করে আমাদের সংসার ভেঙে গেছে। আর আমিওতো মানুষ আমারওতো মন খারাপ হতে পারে। আমারতো শুধু জামাইয়ের সাথে ঝগড়া হয় না বান্ধবীর সাথেও হয়। আমার লাইফে শুধু অপুনা আরো অনেক মানুষ আছে।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর