কোথায় লেখা আছে বিসিএস ক্যাডারকে স্যার ডাকতে হবে ?

কোথায় লেখা আছে বিসিএস ক্যাডারকে স্যার ডাকতে হবে ?

আমিনুল ইসলাম

পত্রিকায় পড়লাম "ভাই" সম্বোধন করায় এক সাংবাদিকের উপর ভীষণ খেপেছেন এক বিসিএস ক্যাডার!

ঘটনা দাঁড়াচ্ছে এমন- সুনামগঞ্জের স্থানীয় এক সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখনাকার ইউএনও'কে ফোন দিয়েছিলেন।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওই ইউএনও'র বক্তব্য নেওয়ার পর "আচ্ছা ঠিক আছে, ধন্যবাদ ভাই" বলে সাংবাদিক ফোন রাখেন।

এর দুই মিনিট পর ওই ইউএনও সাংবাদিক'কে ফোন করে জিজ্ঞেস করেছেন 
- আপনি কোন পত্রিকায় কাজ করেন? 

সাংবাদিক নিজ পত্রিকার নাম বলার পর, ইউএনও মশাই বলেছেন 
-পত্রিকার সাংবাদিক হয়ে আমাকে "ভাই" ডাকছেন! আপনার সাহস তো কম না। ইউএনও'কে "ভাই" ডাকা যাবে না।

এরপর এক টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক ফোন করে ঘটনার সত্য'তা জানতে চাইলে ওই ইউএনও বলেন 
-সাংবাদিক তো আমার আত্মীয় না, পরিচিতও না। "ভাই" ডাকবে কেন? 
এই হচ্ছে ঘটনা।

কেউ কি আমাকে বলবেন- দেশের কোন সংবিধানে লেখা আছে এদেরকে "স্যার" সম্বোধন করতে হবে? 
বিসিএস ক্যাডার'রা তো রাষ্ট্রের কর্মচারী। এরা দেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পায়।

সকল সুযোগ সুবিধা পায়।

"স্যার" যদি কাউকে ডাকতে'ই হয়; তাহলে এইসব ক্যাডার'রা "স্যার" ডাকবে দেশের সাধারণ মানুষদের। যারা তাদের কাছে সেবা নিতে যায়।

প্রতিটা সাধারণ মানুষ যখন তাদের অফিসে সেবা নিতে যাবে; এইসব ক্যাডার'দের উচিত সবাই'কে "স্যার" বলে সম্বোধন করা।

এদের তো পাবলিক সার্ভিস দেওয়ার কথা। এদের মানসিকতা যদি হয় রাজা-মহারাজাদের মতো; এদের মানসিকতা যদি হয় উপনিবেশিক শাসক'দের মতো; তাহলে এরা মানুষকে সেবা দেবে কীভাবে?

আরও পড়ুন: যে পোস্ট করে বয়কট অনন্ত জলিল

আমি সাধারণত আমার কোনো লেখায় কারো নাম, পরিচয় সেই অর্থে প্রকাশ করি না। তবে আজ এই ইউএনও'র নাম পরিচয় প্রকাশ করছি।

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের ইউএনও তিনি। তার নাম শফি উল্লাহ।

আমি জানি না আইন কী বলে। তবে এমি এটা জানি- আইন দেশের মানুষের জন্য'ই।

সরকারের উচিত হবে ঘোষণা দিয়ে এই ইউএনও'কে একটা পদ নিচে নামিয়ে দেওয়া। এমন মানসিকতা ধারণ করার জন্য তাকে এই শাস্তি দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। যাতে অন্যরাও সতর্ক হয়ে যায়।  
নিজদের মানসিকতা বদলাতে পারে।

প্রতিটা বিসিএস ক্যাডার দেখুক এবং জানুক- তাদের স্বগোত্রীয় একজনকে এমন মানসিকতা ধারণ করার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

আপনারা বিসিএস ক্যাডার হয়ে একেক জন নিজেদের ফেরেশতা মনে করেন। নিজদের আর মানুষের কাতারে ভাবেন না!

তাও ভাগ্য ভালো ওই সাংবাদিক সামনা-সামনি ছিলেন না। নইলে হয়ত চড়-থাপ্পড় কিংবা জেল-জরিমানা গুনতে হত!

আমিনুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, অস্ট্রিয়া।

আরও পড়ুন: অনন্ত জলিলকে বয়কট করলাম: শাওন

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর