মা ও দুই পরকীয়া প্রেমিকা গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে শিশু রনিকে

মা ও দুই পরকীয়া প্রেমিকা গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে শিশু রনিকে

অনলাইন ডেস্ক

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে রনি দুয়ারী নামে এক শিশুকে হত্যার দায়ে মা ও তার দুই পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শহীদ হোসেন এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- নিহত শিশু রনির মা কনা বেগম এবং তার দুই পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন নলি ও শাহীন নলি। শাহীন কনা বেগমের আপন চাচাতো ভাই এবং রুহুল আমিন দণ্ডপ্রাপ্ত শাহীন নলির বন্ধু।

তারা সকলে কাজীরহাট থানাধীন পশ্চিম রতনপুর এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় কনা বেগম ও রুহুল আমিন নলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত এবং শাহীন নলি পলাতক ছিলেন।

২০১৩ সালে ওই হত্যাকাণ্ডের সময় নিহত রনি দুয়ারী স্থানীয় কাজীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, কনা বেগমের স্বামী লকিতুল্লাহ দুয়ারী চট্টগ্রামের চাকতাই এলাকায় দিন মজুরের কাজ করতেন।

তার অবর্তমানে কনা বেগমের সাথে চাচাতো ভাই শাহীন নলির পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাসায় যাতায়াতের সুবাদে এক পর্যায়ে শাহিনের বন্ধু রুহুল আমিনের সাথেও কনা বেগমের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিষয়টি লকিতুল্লাহসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জানায় শিশু রনি। এতে তার উপর কনা ও তার দুই পরকীয়া প্রেমিক শাহীন ও রুহুল আমীন ক্ষিপ্ত ছিল।  

ঘটনার দিন ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে কনার বাসায় প্রথমে শাহীন নলি ও পরে রুহুল আমীন নলি পর্যায়ক্রমে কনার সাথে দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়। রনি দুয়ারী ঘরে ঢুকে তার মাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে চিৎকার করে এবং পুরো ঘটনা তার বাবার কাছে বলে দেওয়ার হুমকি দেয়।

এ সময় কনা এবং তার দুই পরকীয়া প্রেমিক শাহীন ও রুহুল আমীন রনির হাত-পা চেপে ধরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে রনিকে সাপে কেটেছে অপপ্রচার চালিয়ে দ্রুত তার লাশ দাফনের প্রস্তুতি নেয় কনা।

কিন্তু রনির গলায় বৃত্তাকার দাগ দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ রনির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি রনির বাবা লতিকুল্লাহ দুয়ারী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ রুহুল আমীনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেন।  

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ২০১৪ সালের ১৯ জুন কনা, শাহীন ও রুহুল আমীনকে অভিযুক্ত করে আদালত এই মামলার অভিযোগপত্র দেন।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর