ফেনীতে ২৮ বছর পর চাকুরি ফিরে পেলেন শিক্ষক জয়নাল

ফেনীতে ২৮ বছর পর চাকুরি ফিরে পেলেন শিক্ষক জয়নাল

নজির আহম্মদ রতন, ফেনী:

দীর্ঘ ২৮ বছর আইনী লড়াইয়ের পর চাকুরি ফিরে পেলেন মো. জয়নাল আবেদীন নামের এক স্কুল শিক্ষক। ১৯৮২ সালে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন তিনি।

সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলেও তিনি প্রধান শিক্ষকের সকল দায়িত্ব পালন করতেন। ১০ বছর চাকুরি করার পর ১৯৯২ সালে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের তৎকালীন সভাপতি শেখ নুরুল আলম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সময়ের এ শিক্ষককে অব্যাহতি প্রদান করেন।

শিক্ষক জয়নাল আবেদীন জানান, ১৯৭৬ সালে ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন শেখ মমিনুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ও শেখ মোহাম্মদ লোকমান সহ স্থানীয়রা। জরাঝীর্ণ স্কুলে ১৯৮২ সালে যোগদান করার পর থেকে নিরলসভাবে পরিশ্রম করেন তিনি।  

স্কুলের ঝরাজীর্ণ ভবন, আসবাবপত্র সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকা স্কুলটিকে তিলে তিলে তৈরি করতে থাকেন। কিন্তু এক শ্রেণির কুচক্রী মহল তা সহ্য করতে পারেননি।

তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শাহ মোহাম্মদ ইসহাক নিজামীর একটি কেলেংকারীর ঘটনার কারণে সকল শিক্ষক থেকে বাধ্যতামূলকভাবে পদত্যাগপত্র নেয় পরিচালনা পরিষদ। পরে সকল শিক্ষকের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে দেয়া হলেও প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় ব্যক্তি এবং আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে জয়নালের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে না দিয়ে তা কার্যকর করা হয়।

তিনি আরও জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তাকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি তা কোনভাবে মেনে নিতে পারেননি। চাকুরি ফিরে পেতে ১৯৯৩ সালে তিনি বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর মামলা চলার পর চলতি বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্টের রায়ে জয়নাল চাকুরি ফিরে পান। যোগদান পত্র পেতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইউসুফের কাছে রায়ের কপি জমা দেন।

জয়নাল আবেদীন জানান, ১৯৮৩ ও ৮৪ সালে ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ ও সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র

তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণেই তাকে স্কুলের শিক্ষকতা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এছাড়া তিনি শর্শদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁঞা জানান, আদালতের রায়ের কপি পেলে ওই শিক্ষকের যোগদানের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

news24bd.tv তুষার

সম্পর্কিত খবর