বিরল দৃষ্টান্ত সেনাবাহিনীর, ৮ বছর কোমায় থাকা সেনা কর্মকর্তাকে পদোন্নতি

বিরল দৃষ্টান্ত সেনাবাহিনীর, ৮ বছর কোমায় থাকা সেনা কর্মকর্তাকে পদোন্নতি

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বে এমন বিরল দৃষ্টান্ত আছে কি না বলা মুশকিল। এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। হাসপাতালে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত কোমায় থাকা সেনা কর্মকর্তা দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজাকে চাকরি জীবনের শেষ দিনে লে. কর্নেল থেকে পদোন্নতি দিয়ে কর্নেল পদমর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। হাসপাতালের বিছানাতেই তাকে পরানো হয় ব্যাচ।

২০১৩ সালের ১১ মার্চ হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার। এরপর মস্তিষ্কের কিছু অংশ হারিয়ে ফেলে কার্যক্ষমতা। চলে যান কোমায়। সেখানেই কেটে গেছে জীবনের প্রায় ৮ বছর।

পুরো সময় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) অফিসার্স ওয়ার্ডের নন্দকুঁজা নামের একটি কক্ষে চিকিৎসাধীন তিনি। হাত-পা নাড়াতে পারলেও গভীর কোমায় আচ্ছন্ন।

news24bd.tv

লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া সেনাবাহিনীর চৌকস এই কর্মকর্তা কর্মক্ষম থাকলে হয়তো পৌঁছে যেতেন সাফল্যের কাঙ্খিত শিখরে। কিন্তু জীবনের এক নির্মম বাস্তবতা তাকে দেয়নি সেই সুযোগ। তবে বাহিনীর প্রতি তাছাওয়ারের অবদান ভুলে যায়নি সেনাবাহিনী। বিদায় লগ্নে বিরল এক সম্মান পেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। গত সোমবার (১২ অক্টোবর) তাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদ থেকে কর্নেল হিসেবে পদোন্নতির সম্মানে ভূষিত করা হয় তাকে।

বাহিনীর এই সম্মাননায় গর্বিত মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজার জীবন সঙ্গী মোসলেহা মুনীরা রাজা ও তাদের তিন সন্তান।
 
মোসলেহা মুনীরা রাজা বলেন, তার স্বামী চাইতেন তাদের দুই ছেলে বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিবেন। সন্তানেরাও নিয়োজিত হবেন দেশের সেবায়। কিন্তু স্বামীর অসুস্থতার পর সবকিছু পাল্টে গেলেও দেশপ্রেমিক বাবার আদর্শেই বড় হচ্ছে তিন সন্তান।
 
এ অবস্থা থেকে মুক্তির সুসংবাদ দিতে না পারলেও সিএমএইচ সবসময় তাছাওয়ার রাজার পাশে থাকবে বলেও জানান সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ মজুমদার।


আরও পড়ুন: ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বাবুবাজার অংশ খুলছে ২০২১ সালে (ভিডিও)


বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা বাউল শিল্পী হাছন রাজার বংশধর। ১৯৮৯ সালের ২৩ জুন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাজোয়া বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীন ইরাক-কুয়েত ও ২০০৭ সালে সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেন। প্রায় অর্ধ শতাধিক দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

চাকরি জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও লেখালেখিতে হাত পাকিয়েছিলেন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। কবি হাছন রাজার জীবন ও কর্ম নিয়ে হাছন রাজা সমগ্র, মেজর জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে নিয়ে ‘ও জেনারেল মাই জেনারেল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসসহ একাধিক বই লিখেছেন তিনি।

news24bd.tv আহমেদ