বাংলাদেশে মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে তরুণরা মগজধোলাই হয়ে বের হয়

বাংলাদেশে মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে তরুণরা মগজধোলাই হয়ে বের হয়

তসলিমা নাসরিন

প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি স্কুল। স্কুলের ইতিহাস-ভূগোলের ৪৭ বছর বয়সী শিক্ষক ১৩/১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। পড়াতে পড়াতে প্যারিসের শার্লি আব্দো পত্রিকা অফিসে একটি কার্টুন ছাপানোর কারণে ১২ জন খুন হয়েছিল বলেছেন, বলতে বলতে ছাপা হওয়া কার্টুনটিও দেখালেন শিক্ষার্থীদের।  

এরপর কী হলো? শিক্ষার্থীদের মুসলমান অভিভাবকেরা স্কুল প্রধানের কাছে অভিযোগ করলেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

কেন তিনি ওই কার্টুনটি শিক্ষার্থীদের দেখালেন।   

আরও পড়ুন:


কী আর বলব এসব নিয়ে?


এর পর? এরপর স্কুল থেকে যে পথ দিয়ে শিক্ষক বাড়ি ফেরেন, সেই পথের ওপরই শিক্ষকের মুণ্ডু কেটে ফেলে রাখলো এক ১৮ বছর বয়সী ছেলে।   রান্নাঘরের বড় একখানা ছুরি দিয়ে মুণ্ডুটা সে কেটেছে।  

ছেলেটি মুসলমান।

চেচনিয়ার ছেলে। বহু বছর প্যারিসেই বাস করে। পুলিশের গুলিতে ছেলেটির অবশ্য মৃত্যু হয়েছে।

মনে আছে বোস্টন ম্যারাথনে প্রেসার কুকার বোমা ছুঁড়েছিল যে দুটো ভাই, ওরাও ছিল চেচনিয়ার। চেচনিয়াও সন্ত্রাসী তৈরি করে। বাংলাদেশের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে নেই।  

বাংলাদেশের মাদ্রাসা, মসজিদ আর ওয়াজ মাহফিল থেকে যত কিশোর-তরুণ মগজধোলাই হয়ে বের হয়, তত বোধহয় অন্য কোনও দেশে বের হয় না। একদিন শুনরবো পয়গম্বরের কোনও ছবি বা কার্টুন  দেখে যে ছেলেটি মানুষের মুণ্ডু কেটেছে, সে বাংলাদেশের ছেলে। অবাক হবো না একটুও।   

এই ধর্মটির প্রতি মানুষের ভয় যে বাড়ে, ঘৃণা যে বাড়ে, এই ধর্মবিশ্বাসীদের কাছ থেকে সভ্য মানুষ যে দূরে থাকতে চায়, তার তো কারণ আছে। এসবই কারণ।