স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ

থমথমে গৌরীপুর
সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিআরডিবির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান শুভ্রকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে গৌরীপুর পৌর এলাকায়। রোববার দিনভর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ঘটনার সাথে জড়িতদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এমনকি পৌর মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডারের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এদিকে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র (একাংশের) যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদুজ্জামান রিয়াদকে রোববার ভোরে তারাকান্দা উপজেলার হারিগাছা এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ।

এছাড়াও মইলাকান্দার কাউরাট এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর আলম ও রাসেলসহ মোট চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বোরহান উদ্দিন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শক্রতার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড। দ্রুতই রহস্য উম্মোচন করা হবে। এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন র‌্যাব-১৪’র কমান্ডিং অফিসার ল্যাফটেন্যান্ট কর্ণেল এফতেখার উদ্দিন, গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাকের আহমেদ, ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা
সংস্থার কর্মকর্তারা। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

গৌরীপুর শহরে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। পৌর এলাকার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভ মিছিলটি এক পর্যায়ে গৌরীপুর থানা ঘেরাও করে হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানায়।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, তার ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলামের বাড়িঘর, ছোট ভাই সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম জুয়েলের ফার্ণিচারের দোকান, উপজেলা বিএনপির একাংশের আহ্বা য়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ ও তার ভাই মইলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ ও তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে। নেতা-কর্মীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন চন্দনের বাসা-বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

অপরদিকে নান্দাইল স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের ত্রিশালে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের খবর পাওয়া গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার রাত ১০ টার দিকে পৌর এলাকার পান মহালে চায়ের দোকানে মাসুদুর রহমান শুভ্র তার সহযোগীদের নিয়ে চা পান করছিলেন। এ সময় দুটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে আট থেকে ১০ জন দুবৃত্ত এসে শুভ্রকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। শুভ্রর সঙ্গে থাকা আল আমিন ও জাহাঙ্গীর নামের দুজনকেও জখম করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেলে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শুভ্রকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকী দুজনও আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানায় চিকিৎসক।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর