আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে

আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে

অধ্যাপক জিয়া রহমান

গতকাল থেকে আমার দেয়া দেড় বছর আগের একটি বক্তব্যের কিছু অংশকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা জনের মতামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বক্তব্যটি দেড় বছর আগের একটি টক শো এর আলোচনার কেবলমাত্র একটি অংশ। ২ মিনিটেরও কম এই ভিডিও ক্লিপে মূল বক্তব্যের প্রধান বিষয়বস্তু উঠে আসেনি। ধর্মকে অপব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদের বিস্তার এবং এর প্রভাব ছিল আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু।

বক্তব্যটি আংশিকভাবে উপস্থাপনের জন্য এটি মানুষ ভুল উপায়ে গ্রহণ করছে৷ এর প্রতিক্রিয়ায় আমি আমার নিজস্ব ফেসবুক একাউন্ট থেকে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়েছি।

আমি সবাইকে জানাতে চাই যে, দেড় বছর আগের একটি টক শোতে দেওয়া আমার একটি বক্তব্য থেকে কিছু অংশ ব্যবহার করে এক দল মানুষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করার চেষ্টা করছে। এটা খুবই হাস্যকর যে তারা এত পুরানো একটি ভিডিও ক্লিপ কোনো প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে। আমি এ ধরনের জঘন্য কাজের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ করছি।

আরও পড়ুন: শিশুকন্যার দেওয়া তথ্যে উঠোনে পুঁতে রাখা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

আলোচিত ভিডিওতে আমি মূলত ব্যাক্তিগত বিশ্বাস ও প্র্যকটিস হিসেবে ধর্ম এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্ম ব্যবসায়ীরা যেভাবে ধর্মকে  (ইসলাম) ব্যবহার করছে তার মধ্যে পার্থক্য দেখানোর চেষ্টা করেছি। এ ধরনের অপচেষ্টা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়েও লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এই শোতে আমি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি কিভাবে ২০০০ সালের ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার পর সারা বিশ্বের মুসলমানদের হেইট ক্রাইমের শিকার হতে হয়েছিল এবং কি করে এসব ব্যাপার সন্ত্রাসবাদকে উস্কানি দিয়েছিল। এছাড়াও আমি আমার অনেক প্রেজেন্টেশন, পেপার এবং বইতে উল্লেখ করেছি কীভাবে ইরাক অথবা প্যালেস্টাইনে নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা সন্ত্রাসবাদ হিসেবে ইম্পেরিয়ালিস্ট প্রজেক্ট এর অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমার গবেষণার প্রধান ফোকাস।

পরিশেষে আমি নিজেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী একজন লিবারেল ব্যক্তি হিসেবে মনে করি। বঙ্গবন্ধুর উক্তি, “আমি একজন মুসলিম, বাঙ্গালি ও একজন মানুষ। ”-এতে বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি যারা অন্যকে হেয় করার চেষ্টা করে তাদের আল্লাহ পছন্দ করেন না। আমি এই ঘটনাকে আমার বিরুদ্ধে একটি সংঘবদ্ধ অপপ্রচার বলে মনে করি এবং আশা করি আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা ও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এতে বিচলিত হবেন না।

আরও পড়ুন: এবার হাজতিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

এরূপ কার্যকলাপ আমাদের গঠনমূলক আলোচনার জন্য ক্ষতিকর। গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচারের জন্য আমাদের শিক্ষক সমাজ তাদের জ্ঞান সর্বসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন বাঁধা-বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। যা আমাদের তরুণ সমাজ ও তাদের ভবিষ্যতের জন্য খুবই দুঃখজনক একটা ব্যাপার। তাই কোনো বক্তব্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত না হয়ে, প্রসঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা কেবলমাত্র সত্য সম্পর্কে জানা ও বিশ্লেষণ করা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আমাদের উচিত আরও দায়িত্বশীল হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা ও মিথ্যাকে প্রতিহত করে সত্য ব্যাপার সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া।

অধ্যাপক জিয়া রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর