এক ফোঁটা রক্ত পরীক্ষায় শারীরিক প্রতিবন্ধিতা থেকে রক্ষা পেতে পারে আপনার শিশুও

এক ফোঁটা রক্ত পরীক্ষায় শারীরিক প্রতিবন্ধিতা থেকে রক্ষা পেতে পারে আপনার শিশুও

হাসান পারভেজ

এক ফোঁটা রক্ত দিন, পরীক্ষা করুন এবং থামিয়ে দেন আপনার জন্ম দেয়া শিশুর মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতা। কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড হরমোন অভাব নিয়ে জন্ম নেয়া একটি শিশু সারাজীবন মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধি হয়ে জীবন কাটায়। জন্মের ৪ সপ্তাহের মধ্যে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা গেলে একটি শিশু প্রতিবন্ধিতা থেকে রক্ষা পাবে। বাংলাদেশে এমন রোগের চিকিৎসা দিচ্ছে পরমাণু শক্তি কমিশন।

থাইরয়েড হরমোন শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ও বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখে। যদি কোন কারণে শিশু থাইরয়েড হরমোনের অভাব নিয়ে জন্ম নেয় তবে সারাজীবন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধি হয়ে জীবন কাটায়।

বিশ্বে প্রতি ৪ হাজার শিশুর মধ্যে একটি শিশুর এমন রোগ পাওয়ায় যায়। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতি ২২শ শিশুর মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড এলায়েন্স সায়েন্সেস একটি প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছে।

স্কিনিং অব কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম ইন নিউবোর্ন বেবিজ প্রজেক্ট ডা. মো. আনোয়ার উল-আজিম বলছেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারছেন আপনার অনাগত সন্তানের কোন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিশুর পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২৩ জন শিশুর থাইরয়েড হরমোন জনিত সমস্যা পাওয়া গেছে। সেসব শিশু এখণ চিকিৎসাধীন।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড এলায়েন্স সায়েন্সেসের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নূরুন নাহার জানান, সন্তান জন্মের এক মাসের মধ্যে চিকিৎসা করা গেলে শিশুর মানসিক বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা হবে। তবে এর বেশি দিন হলে শিশু প্রতিবন্দি হবে বলেও জানান তিনি।


আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি: গুচ্ছ পদ্ধতিতে না অনলাইন পরীক্ষায়


শিশুর জন্মের পরই কিংবা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নাড়ী বা গোড়ালী থেকে কয়েক ফোঁটা রক্ত নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা করে জানা যায় জন্মগত কোন সমস্যা আছে কিনা।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন জানান, এক ফোঁটা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যাবে ওই শিশুর কোন সমস্যা আছে কিনা। যদি থাকে তা চিকিৎসার মাধ্যমে ভাল হবে। তবে চিকিৎসা না করা হলে সন্তান বিকলঙ্গ হবে।

জন্মের পরই শিশুকে বাধ্যতামূলক স্কিনিং বা রোগ নির্ণয় করা গেলে প্রতিবন্ধিতার অভিশাপ থেকে রক্ষা পেতে পারে প্রতিটি শিশু।

news24bd.tv আহমেদ