পূজা দেখে ফেরার পথে তরুণীকে ধর্ষণ, শ্রমিক লীগ নেতাসহ কারাগারে ৫

পূজা দেখে ফেরার পথে তরুণীকে ধর্ষণ, শ্রমিক লীগ নেতাসহ কারাগারে ৫

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বাগেরহাটে ‍বিজয়া দশমীর দিন সোমবার রাতে পূজা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ২২ বছর বয়সী এক গার্মেন্টস কর্মী ধর্ষণের ঘটনায় সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শেখ মিজানুর রহমানসহ পাঁচজনকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার শেখ মিজানুর রহমান (৩৫) বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং বাকপুরা গ্রামের আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে।

গ্রেপ্তার অন্য চারজন হলেন- বাগেরহাট সদর উপজেলার চিন্তারখোড় গ্রামের অমল মৃধার ছেলে বিকাশ মৃধা (১৯), নারায়ন চন্দ্র সরকারের ছেলে সুকান্ত সরকার (৩২), অসীম বিশ্বাসের ছেলে বিধান বিশ্বাস (২৮) ও মো. আনোয়ার ফকিরের ছেলে মো. সোহেল ফকির (২৩)।

গ্রেপ্তারদের সন্ধ্যায় আদালতে পাঠালে বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবীর পারভেজ তাদের কারাগারে পাঠাবার নির্দেশ দেন।

এই আগে সোমবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই গার্মেন্টেস কর্মী নিজে বাদী হয়ে মোঙ্গলবার বিকেলে বাগেরহাট মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যতন দমন আইনে বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শেখ মিজানুর রহমানসহ ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মামলার প্রধান অভিযুক্ত আউইপাড়া ইউপি সদস্য ও ওই ইউনিয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট মডেল থানার এসআই মো. শফিকুর রহমান জানান, সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল থেকে বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন মন্ডপে পূজা দেখে যাত্রাপুর বাজারে থেকে রাতে ভ্যানযোগে বাড়ি রওনা দেয় ওই গার্মেন্টস কর্মী। রাত দশটার দিকে বাকপুড়া মোড়ে পৌঁছালে ইউপি সদস্য ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেখ জানতে চায় এত রাতে কোথা থেকে আসছিস।

পরে ভ্যান থেকে নামিয়ে রাখে।

ভয়ভীতি দেখিয়ে বাকপুড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নতুন ভবনের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে মিজানুর রহমান। পরে রাত পৌনে ১২ টার দিকে ওই তরুণীকে চিন্তিরখোড় এলাকায় রেখে চলে যায় মিজান। মেয়েটি একা একা রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে। রাত ১২টার দিকে আসামি বিকাশ মৃধা, সুকান্ত সরকার, বিধান বিশ্বাস, মো. সোহেল ফকিরসহ কয়েকজন হদেরহাট বাজারস্থ আবুল হোসেনের বিল্ডিংয়ের পেছনে নিয়ে ওই গার্মেন্টস কর্মীর শ্লিলতাহানী ঘটায়।

নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা-মা জানান, এক বছর আগে আর্থিক কষ্টে মেয়েকে গার্মেন্টস এ কাজ করতে ঢাকায় পাঠাই। পূজার ছুটিতে মেয়ে বাড়িতে আসছিল। বন্ধুদের সাথে ‍বিজয়া দশমীর দিন সোমবার রাতে পূজা দেখেতে যাওয়া-ই কাল হলো আমার মেয়ের। আমাদের মেয়ের উপর নির্যাতনের বিচার চাই।

এদিকে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাস্থা নেওয়া হবে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, মামলা দায়েরের পর আমরা তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানকে এবং শ্লিলতাহানীর অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি।

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের ওয়েবসাইটে চলছে কয়েক হাজার হ্যাকারের মুহুর্মুহু হামলা

গ্রেপ্তারদের মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাচটায় অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবীর পারভেজের আদালতে তোলা হলে তিনি তাদেরকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর