গুম হওয়া যুবক জীবিত: ৬ বছর পর অব্যাহতি ৬ আসামির

গুম হওয়া যুবক জীবিত: ৬ বছর পর অব্যাহতি ৬ আসামির

অনলাইন ডেস্ক

জীবিত যুবককে অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে গুমের অভিযোগে বিভিন্ন সময় জেলের ঘানি টানা সেই ৬ আসামিকে অবশেষে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌস মামলাটি থেকে ওই ছয়জনকে অব্যাহতি দেন। একই সাথে মামলার বাদী ও মিথ্যা সাক্ষীর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে?

সে বিষয়ে কারণ দর্শনোর আবেদন করেছে আসামিপক্ষের আইনজীবী। অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন- মামুনের কথিত প্রেমিকা তাসলিমা, তার বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সোহেল, সাগর ও মামা সাত্তার মোল্লা।

গত ১ নভেম্বর একই বিচারক মৃত মামুনের জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় মামলাটির বিভিন্ন সময়ে তদন্তের দায়িত্বে থাকা ৩ কর্মকর্তাকে ৫ নভেম্বর স্বশরীরে আদালতে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে ওই তিন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে একজনকে বাদ দিয়ে পরবর্তী শুনানীন দিন অপর দুইজনকে নথিসহ আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন সোহেল জানান, মামুনের জীবিত ফেরার কারণে মামলাটি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।

সেহেতু আমরা বিজ্ঞ আদালতের নিকট গত রোববার দিন মামলাটি থেকে নিরাপরাধ মক্কেলদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করি। আজ (গতকাল) বিজ্ঞ আদালত সেই মামলাটি থেকে আমার ৬ মক্কেলকে অব্যাহতি প্রদান করেন।

অ্যাডভোকেট সোহেল আরো জানান, এর আগে গত ১ নভেম্বর আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি ও পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে স্বশরীরে তলব করেন আদালত। গতকাল (৫ নভেম্বর) ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বল আদালতে স্বশরীরে হাজির হন। পরে বিচারক সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে বাদ দিয়ে অপর দু’জনকে পরের শুনানিতে নথিসহ হাজির হতে বলেছেন।

২০১৪ সালের ১০ মে চাঁদপুরের মতলব নিজ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হন মামুন। তখন কোন ডায়েরি কিংবা অভিযোগ করা হয়নি। এরপর ছেলেকে না পেয়ে ঘটনার ২ বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে মেয়ের সাথে প্রেম করায় তার ছেলে মামুনকে ‘অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে খুম’র অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করে বাবা আবুল কালাম। আসামি করা হয় মামুনের কথিত প্রেমিকা তাসলিমা, তার বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সোহেল, সাগর ও মামা সাত্তার মোল্লাকে। মামলা দায়েরের পরে সকল আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে পুলিশের আবেদনে মাকসুদা বেগম নামের এক নারীর জবানবন্দি চাক্ষুস সাক্ষী হিসেবে দেওয়া ‘অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে গুম’র বর্ণনা ১৬১ ও ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করা হয়। ভিকটিমের কথিত প্রেমিকা আসামি তসলিমা ও তার ভাই রফিক দেড় বছর কারাবাস করেছেন। আর আসামি রকমত আলী, সাগর ও সাত্তার ছিলেন দেড় থেকে তিন মাস।  
৩০ সেপ্টেম্বর প্রায় ৬ বছর আগে গুম হওয়া সেই মামুন জীবিত আদালতে হাজির হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর