ভাঙা পড়বে কমলাপুর রেলস্টেশন

ভাঙা পড়বে কমলাপুর রেলস্টেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কমলাপুর রেলস্টেশন স্থানান্তরের প্রস্তাব এসেছে। বর্তমান স্থানে স্টেশনটি থাকলে নির্মাণাধীন ঢাকা মেট্রোরেলের স্থাপনার আড়ালে পড়ে যাবে।

আবার কমলাপুর স্টেশনকে ঘিরে নেওয়া মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ প্রকল্পও বাধাগ্রস্ত হবে। এ বিবেচনায় স্টেশনটি কিছুটা উত্তরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা দিয়েছে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠান।

এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান স্টেশন ভবনটি ভাঙা পড়বে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর)  রেল ভবনে এ–সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারিখাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বর্তমান স্থানে স্টেশনটি থাকলে নির্মাণাধীন ঢাকা মেট্রোরেলের স্থাপনার আড়ালে পড়ে যাবে।

আবার কমলাপুর স্টেশনকে ঘিরে নেওয়া মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ প্রকল্পও বাধাগ্রস্ত হবে। এ বিবেচনায় স্টেশনটি কিছুটা উত্তরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা দিয়েছে জাপানের ওই প্রতিষ্ঠান। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি সাপেক্ষে নেওয়া হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।


আরও পড়ুন: চিফ হুইপের নামে ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণা


সংশ্লিষ্টরা জানান, উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণকাজ চলমান। মেট্রোরেল ও এর সব স্টেশনই হবে উড়ালপথে মাটি থেকে কমবেশি ১৩ মিটার ওপরে। এর ফলে শেষ স্টেশনটি বিদ্যমান কমলাপুর রেলস্টেশন ভবনের সামনের অংশ ঢেকে দেবে। এতে কমলাপুর রেলস্টেশনের সৌন্দর্যহানি হবে। এ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ও ডিএমটিসিএল এর মধ্যে আলোচনা চলছিল।

শেষ পর্যন্ত জাপানের কাজিমা করপোরেশনের নকশা ধরে কমলাপুর স্টেশনটিই ১৩০ মিটার উত্তরে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছে। আগের ভবনটি ভেঙে ফেলতে হবে। এতে মেট্রোরেলেরও কোনো পরিবর্তন করা লাগবে না। এখন প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান বলেন, কমলাপুর স্টেশন ঘিরে মাল্টিমোডাল হাব গড়ে তোলা হবে, যা শাহজাহানপুরসহ আশপাশের রেলের জায়গাজুড়ে বিস্তৃত হবে। এ  প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান কমলাপুর রেলস্টেশনের আদলেই নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হবে। পাঁচ বছরের মধ্যেই কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। বাস্তবায়ন শেষ হতে ১০ বছর লাগতে পারে।   

তিনি বলেন, মেট্রোরেলের কারণে কমলাপুর স্টেশন আড়ালে পড়ে গেলে এর সৌন্দর্য আর থাকবে না। তাই সরিয়ে নেওয়াই উত্তম বিকল্প।

অন্যদিকে ২০১৮ সালে সরকারি–বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে (পিপিপি) কমলাপুর স্টেশন ঘিরে মাল্টিমোডাল হাব করার প্রকল্প সরকার নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়। এর অধীন কমলাপুর স্টেশনের চারপাশে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। সেখানে থাকবে হোটেল, শপিং মল, পাতাল ও উড়ালপথ। বহুতল আবাসন ভবনও নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানের কাজিমা করপোরেশন আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে তিনটি বৈঠক হয়েছে এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলে কাজিমা করপোরেশন পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি করবে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেল পরিকল্পনা মতোই হবে। এখন স্টেশন সরানোর বিষয়টি একান্তই রেলের বিষয়। যেভাবে করলে ভালো হয়, রেল সেভাবেই পরিকল্পনা করবে।

news24bd.tv নাজিম