আমিরাতে বাংলাদেশিদের পাশে ইউনুস মিয়া চৌধুরী

আমিরাতে বাংলাদেশিদের পাশে ইউনুস মিয়া চৌধুরী

অনলাইন ডেস্ক

আমিরাতে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থান তৈরিতে ভুমিকা রাখছেন প্রবাসী আলহাজ মো. ইউনুস মিয়া চৌধুরী। নিজগুণে ও মেধায় বাড়িয়ে তুলেছেন একের পর এক প্রতিষ্ঠান।

আমিরাতজুড়ে ইউনুস মিয়া চৌধুরী এখন একজন ডায়নামিক ব্যবসায়ী। সংযুক্ত আরব আমিরাতে যে কয়জন বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ব্যবসায় অভাবনীয় সাফল্য এনেছেন, তাদের মধ্যে ইউনুস মিয়া চৌধুরী অন্যতম।

বিভিন্ন সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে অসংখ্য বড় ব্যবসায়ীর ছন্দপতন ঘটলেও, ব্যবসায়িক সমীকরণে সঠিক ও সৃজনশীল ধারা বজায় রেখেছেন ইউনুস মিয়া।

তার নিজ হাতে তৈরি 'ইউনুস ট্রেনিং এস্টাবলিশমেন্ট'। একটি ছোট্ট প্রতিষ্ঠান থেকে আজ মধ্যপ্রাচ্যে এক পরিচিত প্রতিষ্ঠানে পরিচিতি ঘটেছে।

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার এই সন্তান ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ১৯৮১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছুটে এসেছিলেন।

 

জীবনের স্বর্ণালি ৪০টি বছর আমিরাতের মাটিতে কাটিয়েছেন তিনি। কারিগরি শিক্ষায় পড়াশোনা শেষ করে জীবনের লক্ষ্য পূরণে হাজার মাইল দূরে ১৯৭৯ সালে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের সমৃদ্ধশালী দেশ আমিরাতে। সর্বপ্রথম তিনি আবুধাবিতে এসে গ্লোরিয়াস ইলেকট্রিক সার্ভিসেস নামে একটি কোম্পানিতে দুই বছর চাকরি করেন। তারপর শুরু হয় নিজের স্বপ্ন পূরণের পথচলা। ১৯৮২ সালে এসে ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তার প্রথম ব্যবসায়িক লাইসেন্স ইউনুস ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রাক্টিং এস্টাবলিশমেন্ট। দীর্ঘদিন কন্ট্রাক্টিং জগতে বিচরণের পর ১৯৯৪ সালে এসে তিনি ইউনুস ট্রেডিং এস্টাবলিশমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। যে প্রতিষ্ঠানের নাম শুধু অনলাইনে নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি ও গ্রাহকদের কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে। সে সঙ্গে ব্যবসায়িক ইউনুসকেও নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।

গ্রিন সিটি অনলাইনের সানাইয়া এলাকায় দুটি বৃহৎ শোরুম ও পাঁচটি ওয়্যারহাউস মিলে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী কাজ করছেন তার প্রতিষ্ঠানে। এ ব্যবসায়ীর আরও দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি হচ্ছে সালতানাত অব ওমানে আজইয়াল আল খাজিল ট্রেডিং এলএলসি; অন্যটি ইলিয়াছ মোহাম্মদ ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডিং এস্টাবলিশমেন্ট আমিরাতের শিল্পনগরী আজমানে।

ইউনুস মিয়া চৌধুরী শুধু ব্যবসার পেছনে ছুটে বেড়িয়েছেন, তাই নয়। নিজের পরিবারকে কীভাবে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা যায়, তা নিয়েও সংগ্রাম করেছেন প্রবাস জীবনে। তাই এ ব্যবসায়ীর প্রতিটি সন্তান শিক্ষার আলো নিয়ে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। তিনি তার পাঁচ সন্তানকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছেন, তেমনি নিজ এলাকায় যেন শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ে সে ব্যাপারেও সচেতন ছিলেন সবসময়। নিজ এলাকায় গড়েছেন অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষিত প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

ইউনুস মিয়া চৌধুরীর পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে ডাক্তার মুন্নি বেগম বর্তমানে লন্ডনের লিচিস্টার কুইন এলিজাবেথ হসপিটালে নিয়মিত চিকিৎসক হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। একই হসপিটালের পাশাপাশি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তার স্বামী ডা. মোহাম্মদ হাসান।

তার দ্বিতীয় সন্তান নুরুন্নবী চৌধুরী অস্ট্রেলিয়ার ব্রিজবেন থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে বর্তমানে আল-আইনে বাবার সঙ্গে ইউনুস ট্রেডিং এস্টাবলিশমেন্টে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইউএই ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করে ইউনুস ট্রেডিং এস্টাবলিশমেন্টের অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

তৃতীয় সন্তান রুমি আক্তার বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে মাস্টার্স করছেন কানাডার ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটিতে। চলতি বছরের আগস্টে ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হোসেন তানজিলের সঙ্গে রুমি আক্তারের বিয়ে হয়।

চতুর্থ সন্তান মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধূরী অনলাইনে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনার পাশাপাশি হিফজুল কোরআন সম্পন্ন করেন। পরে সাউথ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে সালতানাত অব ওমানে আজিয়াল আল খাজিল ও তার নিজের নামের প্রতিষ্ঠান ইলিয়াস মোহাম্মদ ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডিং এস্টাবলিশমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেতাকে কোপাল স্ত্রী

পঞ্চম সন্তান মরিয়াম বেগম কানাডার গুয়েলফ ইউনিভার্সিটি থেকে জেনারেল অ্যাকাউন্টিং নিয়ে মাস্টার্স করছেন।

তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ভবিষ্যত স্বপ্নের ব্যাপারে। তিনি জানান, কীভাবে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় সেটি নিয়ে পরিকল্পনা।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর