দেশটা তো মগের মুলুক হয়ে যায়নি

শরিফুল হাসান

দেশটা তো মগের মুলুক হয়ে যায়নি

শরিফুল হাসান

শনিবার দুপুরে লিখিত পরীক্ষা নিয়ে গভীর রাতে ফল দেওয়া হয়েছে । সকালেই শুরু হযেছে ভাইভা। দেখা গেল, পরীক্ষায় অংশ নেননি এমন একজনও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।  

প্রার্থীদের অভিযোগ, এই নিয়োগে বহুবছর ধরেই নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে।

পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও কারও রোল থাকা সেটারই প্রমাণ।  

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিএফআরআই) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদের এই নিয়োগ নিয়ে আজকের ডেইলি স্টারের প্রথম পাতার করা আমার নিউজটা হয়থো আপনারা অনেকেই দেখেছেন। একই নিউজ বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই ডেইলি স্টারের অনলাইনে গতকাল গিয়েছে।  

আপনারা জানেন প্রথম আলো ছাড়ার পর আমি পুরোদমে রিপোর্টিং ছেড়েছি।

কিন্তু চাকুরিপ্রার্থীদের নানান সমস্যা নিয়ে ছেলেমেয়েরা নানা বিষয়ে আমাকে জানান। ফলে নানা ব্যস্ততার মধ্যেও সুযোগ পেলে আমি এসব নিউজ করার চেষ্টা করি। বিশেষ করে এই বছর থেকে ডেইলি স্টারে এসব নিয়ে রিপোর্ট করছি।  

এই ধারাবাহিকতায় গতকাল বাংলাদেশ কৃষি শ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরীক্ষার্থী যখন মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের নিয়োগ পরীক্ষার তথ্য জানালো আমি বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়া শুরু করলাম এবং বেশ বিস্মিত হলাম।  

যে মেয়েটি পরীক্ষা না দিয়েই উত্তীর্ণ হয়েছে সেই মেয়েটি কথাই বলতে চাচ্ছিলেন না। কারণ তাকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। তিনি ও তার পরিবার বেশ ভয় পেয়েছেন।  

পরে তার সঙ্গে আমার কথা হয়। তাকে বলি, দেশটা তো মগের মুলুক হয়ে যায়নি। পরে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের বক্তব্য নেই। তার বক্তব্য আমাকে আশাহত করেছে।  


আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী?


অবশ্য ছেলেমেয়েদের অভিযোগ, এবারই প্রথম অনিয়ম নয়। মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিএফআরআই) নিয়োগে এমন অনিয়ম নাকি বহুবছর ধরে চলেছ। আমি ডেইলি স্টারের যে নিউজটা শেয়ার করেছি সেই নিউজের নিচেঅনেকেই কমেন্ট করেছেন।  

অনেকেই ইনবক্সও করেছেন আমাকে। বেশিরভাগ বলেছেন, কৃষি ও মৎস্য বিষয়ক প্রায় প্রত্যেকটা গবেষণা ইন্সটিটিউটে নাকি একই অবস্থা! 

শুনে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। একজন আমাকে লিখেছেন, মৎস প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের একজন ক্লার্ক নাকি অন্তত ৭০ জনকে চাকরি দিয়েছেন। ২/৩ টা বাড়ী করছেন।   

আমার ধারণা ছিল এই দেশের গবেষণা ইনস্টিটিউটগুেলাতে অনেক কাজ হয়। কিন্তু বেশিরভাগই বললেন কাজের চেয়ে এখানে নাকি অনিয়ম ও দুর্নীতি বেশি হয়। বিশেষ করে নিয়োগে।  

আচ্ছা আমাদের কর্তৃপক্ষ কী করে? আমি বুঝি না এই দেশের সব নিয়োগ কেন পিএসসির মাধ্যমে হয় না? সারাবছরে একটা পরীক্ষা নিয়ে প্যানেল করে আমরা কেন সব জায়গায় নিয়োগ দিতে পারি না। তাতে অন্তত দুর্নীতি বন্ধ হতো! 

যাই হোক, অনেকেই আমাকে অনুরোধ করেছেন, BFRI,  BARI, BRRI,BJRI, BINA সহ সব জায়গার নিয়োগের খোঁজখবর করতে। আমি চেষ্টা করবো। আপনাদের কাছে তথ্য থাকলে বিস্তারিত জানাবেন।

আমাদের সবার মনে রাখা উচিত, এই দেশে নিয়োগসহ নানা বিষয়ে যতো দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে আকাশ থেকে নেমে কেউ সেগুলো থামিয়ে দিতে পারবে না। আমাদের সম্মিলিতভাবেই এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।  

শরিফুল হাসান, উন্নয়ন কর্মী, (ফেসবুক থেকে নেয়া)

news24bd.tv নাজিম