মনোহারি পদ্মফুল

পদ্মফুল

মনোহারি পদ্মফুল

অনলাইন ডেস্ক

আমাদের দেশে বর্ষা ও শরৎকালে বিলে-ঝিলে শোভাবর্ধন করে ফুটে থাকতো মনোহারি পদ্মফুল। কিন্তু প্রকৃতি বৈরিতায় আগের মতো বিল-ঝিলের জৌলুস হারিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পদ্মফুলসহ আরও অনেক জলজ উদ্ভিদ আজ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে।

কিন্তু প্রকৃতি বৈরিতায় আগের মতো বিল-ঝিলের জৌলুস হারিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পদ্মফুলসহ আরও অনেক জলজ উদ্ভিদ আজ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। পদ্মফুলের বৈজ্ঞানিক নাম- Nelumbo nucifera।

ইংরেজিতে যাকে Lotus বলা হয়ে থাকে। সাধারণত ইহা sacred lotus বা Indian lotus হিসেবে পরিচিত। এটি ভারতের জাতীয় ফুল। পদ্ম Nelumbonaceae পরিবারের অর্ন্তভুক্ত Proteales বর্গের অর্ন্তগত এক প্রকার হার্ব জাতীয় জলজ উদ্ভিদ।
এটি উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলে জন্মে থাকে। ইরান, চীন, জাপান, নিউ গায়েনা, বাংলাদেশ, ভারত ও অষ্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে পদ্ম জন্মে।

গোল পাতা, ফুল বৃহৎ এবং বহু পাপড়িযুক্ত। সাধারণত বোঁটার উপর খাড়া, ৮-১৫ সেমি চওড়া। ফুলের রং লাল, গোলাপি ও সাদা, সুগন্ধিযুক্ত। হিন্দুদের দুর্গাপূজার প্রিয় ফুল। ফুল ও ফলের ভেষজগুণ আছে। পদ্মের মূল, কান্ড, ফুলের বৃন্ত ও বীজ খাওয়া যায়। পুরাতন গাছের কন্দ এবং বীজের সাহায্যে এদের বংশবিস্তার হয়। এটি ভারতের জাতীয় ফুল।


আরও পড়ুন: ভেজিটেবল চপ রেসিপি


পদ্ম সৌন্দর্য, বিশুদ্ধতা ও পবিত্রতার প্রতীক। বিশুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক হওয়ায় নিচু বংশকূলে জন্ম গ্রহণ করে বিখ্যাত বা উচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হলে তখন সেই ব্যক্তিটি ‘গোবরে পদ্মফুল’ নামক বাগধারায় পরিণত হয় এই পদ্মের কারণে। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন ধমীর্য় আচার অনুষ্ঠানে অনেক উদ্ভিদ ব্যবহূত হয়ে আসছে, এসব উদ্ভিদকে বলা হয় ‘Secred Plant’ বা ‘পবিত্র গাছ’। যেমন- বড়ই গাছ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের নিকট পবিত্র গাছ হিসাবে সুপরিচিত। তুলসী, বট, পাইকর, কলাগাছ ও পদ্ম সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিকট পবিত্র গাছ হিসাবে পুজা-পাবর্ণাদিতে ব্যবহূত হয়ে আসছে সেই সুপ্রাচীনকাল থেকেই । লুম্বিনী নামক স্থানে বটগাছের নিচে তপস্যা করে গৌতম বুদ্ধ সিদ্ধি লাভ করেছিলেন বলেই তো বটগাছ আজ বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্রতার প্রতীক। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজায় পদ্মফুলের প্রয়োজন হয়।

তবে শাপলা ও পদ্ম বলা যায় একই সূত্রে গাঁথা কাছাকাছি প্রজাতির দুটি জলজ উদ্ভিদ। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, ডোবা ও জলাশয়ে এক সময় শাপলা ও পদ্মের অবাধ বিচরণ ছিল। পদ্ম, শাপলা, শালুক, কলমি, হেলেঞ্চা, ঘেচু প্রভৃতি উদ্ভিদ প্রতিবেশি হিসাবে একে অন্যকে জড়িয়ে জলাশয়ে উপস্থিত থেকে নিজেরা প্রস্ফুটিত হয়ে রূপ-সৌন্দর্য সুধা প্রকৃতির মাঝে অকাতরে বিলিয়ে দিতো স্বমহিমায়। ‘পদ্ম’ শুধু যে বিশুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক হিসাবে মানুষের মনোহরণই ড়করে তা নয়, পদ্মফুল প্রস্ফুটিত ও পরিপক্ক হয়ে যখন পদ্মখোঁচায় রূপ নেয় তখন আর এক অন্য রকম স্বাদ বা অনুভূতি।

news24bd.tv নাজিম