মানবপাচারে দুই এয়ারলাইন্স জড়িত: সিআইডি

মানবপাচারে দুই এয়ারলাইন্স জড়িত: সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে মানবপাচারের সঙ্গে বিদেশি দুইটি এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ওই দুই এয়ারলাইন্সের ৫-৭ জন কর্মকর্তাকে এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই যাদের পাচার করা হয়েছে, তাদের সবাইকেই ভিজিট ভিসা বা কনফারেন্স ভিসায় নেয়া হয়েছে। এসব ভিসায় কেউ কোনো দেশে গেলে তাদের রিটার্ন টিকিট থাকার কথা।

কিন্তু যাদের পাচার করা হয়েছে তাদের কেউ-ই রিটার্ন টিকিট নেননি।  

মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারে জড়িত পলাতক কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে ইন্টাপোলে আবেদন জানানো হবে। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর ৬ জন পলাতক আসামিকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়।

গত ২৭ নভেম্বর ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে।

এরা হলেন- মিন্টু মিয়া (কিশোরগঞ্জ), তানজিমুল ওরফে তানজিদ (কিশোরগঞ্জ), জাফর ইকবাল (কিশোরগঞ্জ), নজরুল ইসলাম মোল্লা (মাদারীপুর), শাহাদাত হোসেন (কিশোরগঞ্জ) ও স্বপন (কিশোরগঞ্জ)।   গত ২ জুন তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে তানজিমুল ইতালিতে পালিয়ে আছেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের কথাও পুলিশকে জানাতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, গত ২৬ মে লিবিয়ায় ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনার পর মানবপাচারের ২৬ মামলার মধ্যে ২৫টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এসব মামলায় আসামি ২৯৯ জন। এখন পর্যন্ত ১৭১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হবিগঞ্জে করা একটি মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।  

সিআইডির সিনিয়র এএসপি জিসানুল হক জানান, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৮ ব্যক্তিকে উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে যায় পাচারকারীরা। ইতালি ও স্পেনে পাঠানোর কথা বলে অনেককে লিবিয়ার বেনগাজীতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে তাদের ত্রিপলী শহরে উচ্চ বেতনের কথা বলে নিয়ে যায়। ত্রিপলীর মিজদায় বাংলাদেশি মানবপাচারকারীদের সহায়তায় লিবিয়ার মাফিয়া গ্রুপ ভিকটিমদের অমানবিক নির্যাতন শুরু করে এবং মুক্তিপণ দাবি করে।  

তিনি আরও জানান, ভিকটিমদের নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে দেশে স্বজনদের কাছে পাঠানো হতো। মুক্তিপণ আদায়ের পর গত ২৬ মে নির্বিচারে গুলি করে ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১২ জন গুরুতর আহত হয়। গত ৩ অক্টোবর সিআইডির উদ্যোগে ৯ জন ভিকটিমকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

news24bd.tv নাজিম