পি কে হালদারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ

পি কে হালদারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশে পালিয়ে থাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করায় বিচারিক আদালতের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলার পরবর্তীতে শুনানির জন্য আগামী ৯ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

আজ বুধবার পি কে হালদারের দুর্নীতির মামলা তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে দুদকের প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক।

শুনানিকালে দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অর্থপাচারকারী সে যত বড়ই রুই-কাতলা হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীন করেছেন যে লক্ষ্য নিয়ে তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তাবায়নে কাজ করা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। সেই লক্ষ্যে আপনারা কাজ করুন। সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে দুদককে আরো কঠোর হতে হবে।


আরও পড়ুন: ‘জিয়াউর রহমানের নাম মানুষের হৃদয়ে লেখা চাইলেই মোছা যাবে না’


শুনানি শেষে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আমরা দুর্নীতির মামলা তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। প্রতিবেদনে বলেছি, বিচারিক আদালত এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেনি। তবে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছি। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আগামী ৯ ডিসেম্বর শুনানির দিন দিয়েছেন।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পি কে হালদারকে ফেরত আনার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা স্বরাষ্ট্র সচিব ও দুদক সচিবকে ১০ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আজ দুদক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করেছিল আইএলএফএসএল। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত জানিয়েছিলেন, পি কে হালদার কবে, কখন, কীভাবে দেশে ফিরতে চান, তা আইএলএফএসএল লিখিতভাবে জানালে সে বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।


আরও পড়ুন: ৭ মাসের শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে


পরে পি কে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়টি গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্টকে জানানো হয়। পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠান আইএলএফএসএলের পক্ষ থেকে হাইকোর্টকে জানানো হয়, ২৫ অক্টোবর দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা আসার জন্য টিকিট কেটেছেন তিনি। বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। পরে সার্বিক দিক বিবেচনার পর পি কে হালদারকে দেশে ফেরার অনুমতি দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পি কে হালদার দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের আইজি এবং ইমিগ্রেশন পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি কারাগারে থাকা অবস্থায় পি কে হালদার যেন অর্থ পরিশোধের সুযোগ পান, সেই বিষয়ে সুযোগ দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে পরে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আর দেশে ফেরেননি তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সময় গোপনে কানাডায় পাড়ি জমান তিনি।

news24bd.tv নাজিম