আইনি প্রতিকার চেয়ে নিজের থানায় নিজের বরাবর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন পটুয়াখালীর বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে পুলিশ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, সেখানে থানার ওসিই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন আইনি সহায়তা চেয়ে!
আর যেহেতু কোন নাগরিক সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে সেটি করতে হয় সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর, তাই ওসি মনিরুল ইসলাম নিজের বরাবরই ডায়েরি করেছেন। কারণ, তিনিই ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
কেন তাকে জিডি করতে হলো?
এ প্রশ্নের জবাবে, মনিরুল ইসলাম বলছেন, সম্প্রতি তিনি বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে যোগদান করেছেন। কিন্তু আগে থেকে চলা চাঁদাবাজির একটি মামলায় গত সপ্তাহে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই জামিনে থাকা অভিযুক্ত আসামিরা তাকে ফোনে হুমকি দিতে থাকে।
"তারা সরাসরি আমাকে বদলি করে দেওয়া হবে এমন হুমকি দেয়।
"তখন আমি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবার জন্য সাধারণ ডায়েরি করি। আর ঘটনাটা তো আমার নিজের কর্মক্ষেত্রের মধ্যেই হয়েছে, সেজন্য নিজের থানাতেই নিজের বরাবরে জিডি করেছি। "
কোন নাগরিক সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে সেটি করতে হয় সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর। এরপর অভিযোগ তদন্তে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একজন উপ-পরিদর্শক বা পরিদর্শককে দায়িত্ব দেন। এক্ষেত্রে মনিরুল ইসলামকে নিজের বরাবরেই জিডি করতে হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। আর আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ পুলিশকে বেশ ক্ষমতাশালী মনে করে সমীহ করে। এজন্য অনেক সময় পুলিশের মাধ্যমে হয়রানির স্বীকার হলেও সাধারণ মানুষ পুলিশের কাছে অভিযোগ করে না। তারপরও যতটুকু অভিযোগ জমা পড়ে তার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। বাংলাদেশ পুলিশের দেওয়া এক হিসাবে জানা যায়, ২০১৫ সালে প্রায় ৩০ হাজার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ জমা পড়েছিল। এমন প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিকভাবেই, আইনি প্রতিকার চেয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাধারণ ডায়েরি করার কথা তেমন শোনা যায় না। আর তাই ওসি মনিরুল ইসলামের সাধারণ ডায়েরি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
কিন্তু মনিরুল ইসলাম বলছেন, যেকোনো সাধারণ নাগরিকের মতই পুলিশও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য চেয়ে ডায়েরি করতে পারে। সূত্র: বিবিসি
