কুয়েত দূতাবাসের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় মুক্ত ৫ বাংলাদেশি
হুতিদের হাতে বন্দী

কুয়েত দূতাবাসের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় মুক্ত ৫ বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের হাতে বন্দী ৫ বাংলাদেশি কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় মুক্ত হয়েছে। তাদের শীঘ্রই দেশে পাঠানো হবে।

প্রায় দশ মাস ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের হাতে বন্দী থাকার পর কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় মুক্ত হলেন- পাঁচ বাংলাদেশি।

তাঁরা হলেন- চট্টগ্রামের রাউজানের মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, মিরসরায়ের মোহাম্মদ রহিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, মোহাম্মদ ইউসুফ ও মোহাম্মদ আলমগীর।

কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ইয়েমেনে আটক পাঁচজন বাংলাদেশিকে মুক্তি থেকে শুরু করে হোটেলে থাকা, হাত খরচ এমনকি বিমানের টিকেট সহ সব সহযোগিতা বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো হয়েছে।

মূলত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হাতে প্রায় ১০ মাস ধরে বন্দী বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাবিক। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ভারত ও মিসরের কয়েকজন নাবিকও। গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে ওমান থেকে সৌদি আরব যাওয়ার পথে প্রায়  ২০ জন নাবিক ইয়েমেনের উপকূলে থামলে হুতি বিদ্রোহীরা তাঁদের বন্দী করেন।

ভারতের একটি পত্রিকায় গত রোববার এ খবর জানায়। খবরে বলা হয়েছে, হুতি বিদ্রোহীদের হাতে আটক ২০ জন নাবিকের মধ্যে ১৩ জন ভারতের। আর বাকি সাতজন বাংলাদেশ ও মিসরের নাগরিক। সংবাদে এক অসমর্থিত  সূত্র থেকে জানায়, ওই সাত নাবিকের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশের নাগরিক। ওই বন্দীদের মধ্যে একজন ভারতের কেরালার বাসিন্দা প্রবিন থাম্মাকারানতাবিদা (৪৫)।

তিনিই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভারতের নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানায়, নির্মাণকাজের জন্য তাঁরা ওমান থেকে সৌদি আরবে যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে তাঁরা লোহিত সাগরে একটি জাহাজডুবির খবর পান। ডুবে যাওয়া জাহাজের নাবিকদের উদ্ধারের পর তিনটি জাহাজ ইয়েমেনের উপকূলে নোঙর করে। পরে ইয়েমেন কোস্টগার্ড সদস্যের পরিচয় দিয়ে একদল লোক ২০ নাবিককে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় নিয়ে যায়।

পরে কোস্টগার্ডের পরিচয় দেওয়া লোকজন জানান, তাঁরা হুতি বিদ্রোহী। ইয়েমেনের জলসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশের অপরাধে ২০ নাবিককে আটকের কথা জানায় তাঁরা।

বন্দী নাবিকদের বরাতে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ভারত, বাংলাদেশ ও মিসরের আটক ২০ নাবিককে হুতি বিদ্রোহীরা একটি হোটেলে আটকে রেখেছেন। ভেতরে কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। বাইরে থেকে লোক এসে তাঁদের খাবার দিয়ে যান।
শুরুতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন হুতি বিদ্রোহীরা।

নাবিকেরা অভিযোগ করেছিলেন, ওমানের তিন জাহাজের মালিকেরা এখন পর্যন্ত নাবিকদের ছাড়ানোর চেষ্টা করেনি । হুতি বিদ্রোহীরা মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ ওমানি রিয়াল দাবি করেছিল। মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মালিকেরা।

এই খবর জানার পর থেকে বাংলাদেশের পাঁচজনকে ছাড়িয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিকতার কোনো কমতি ছিলো না বলে জানিয়েছেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান। বাংলাদেশ দূতাবাসের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় তাঁরা এখন মুক্ত। সব সময়ই তাঁদের সাথে কথা হচ্ছে বলে জানান শ্রম কাউন্সিলর আবুল হোসেন।

আরও পড়ুন: নতুন ঠিকানায় রোহিঙ্গারা

প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় দূতালয় প্রধান নিয়াজ মুর্শেদ এবং শ্রম কাউন্সিলর আবুল হোসেন সহ উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার  সুমন, আ হ জুবেদ, মো. জালাল উদ্দিন, শরীফ মিজান,  আল আমিন রানা, নাসরিন আক্তার মৌসুমী, মোহাম্মদ হেবজু।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর