বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননায় জড়িতদের শাস্তি পেতেই হবে: কাদের

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননায় জড়িতদের শাস্তি পেতেই হবে: কাদের

মো. হৃদয় খান, নরসিংদী

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘যারাই জড়িত ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শাস্তি পেতেই হবে’।

রোববার (৬ ডিসেম্বর) ‘নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।   ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় যুক্ত হন।

ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশব্যাপী ধর্মীয় বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এদেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা দেশের চেতনার মর্মমূলে আঘাত হানা’।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার প্রতিকৃতি প্রদর্শন ও সংরক্ষণ সাংবিধানিকভাবেই বিধিবদ্ধ বিষয়, তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা প্রকারান্তরে সংবিধানের অবমাননা’।


আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ জন আটক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কুষ্টিয়ায় বিএনপি অফিসে হামলা সরকারের নীল নকশার অংশ: ফখরুল

সব জেলায় আন্টিজেন টেস্ট চালু করা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু বিরোধী কোনো অপশক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না: কুষ্টিয়ায় হানিফ

বঙ্গবন্ধুর দর্শন আর অবদানের কারণে আজ দেশ স্বাধীন: তাজুল ইসলাম


দেশের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ ও কর্মী আজ ক্ষুব্ধ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের হৃদয়ের আবেগ অনুধাবন করি’।

কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে আক্রমণ করে না, তবে আক্রমণের শিকার হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এক বিন্দুও পিছপা হয় না’।

উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক হয়েছে, এবার থামুন’।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানে এদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু মানে দেশ এবং সংবিধান, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা মানে দেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আক্রান্ত করা’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অর্ধ শতকের স্মৃতি মধুদার ভাস্কর্যের আংশিক ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আওয়ামী লীগ ওই নেতা বলেন, ‘ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবেন না’।

এখনও দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, আবারও বাড়াবাড়ি করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না বলে যোগ করেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা।

মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সবার মিলিত রক্তের স্রোতধারায় অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, এ স্বাধীনতা কোনো নির্দিষ্ট বা সম্প্রদায়ের স্বার্থের কাছে জিম্মি হতে দেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘পবিত্র সংবিধান ও দেশের আইন পরিপন্থি কোনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য, মন্তব্য ও আচরণ বরদাস্ত করা হবে না’।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম বিষয়েও কথা বলেন।

তিনি বলেন, নরসিংদীর একজন ব্যক্তির জন্য সারাদেশে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমি জানি না তাদেরকে দলে কারা ঢুকিয়েছে। একটা খারাপ কাজ অনেক ভাল কাজকেও ঢেকে দিতে পারে। আজকে দুয়েকজনের জন্য পুরো দল বিতর্কিত হতে পারে না। যাদের জন্য বিতর্ক তৈরি হবে তাদেরকে বহিস্কার করতে হবে। আওয়ামী লীগে কর্মীর অভাব নেই। আমরা এতটা সংকটে পড়িনি যে বিতর্কিতদের ঢেকে এনে জায়গা করে দিতে হবে।  

তাদেরকে দূরে রাখাই ভাল। তারা দলের ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যুব মহিলা লীগ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কার শেল্টারে যুবমহিলা লীগের শীর্ষ পদে পাপিয়ার মত একটা মেয়ে জায়গা পায়? সেখানে দলের কিছু শীর্ষ নেতাদের সাপোর্ট না থাকলে কি করে হয়? এইসব ব্যাপারে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা দুই মেরুতে অবস্থান করায় তাদেরকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। দলকে গতিশীল করার লক্ষেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ইতিপূর্বে যারা দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তারা যদি বিজয়ী কিংবা পরাজিত হয়ে থাকেন। তাদেরকে আমরা মনোনয়ন দিব না। এই বিদ্রোহের পিছনে যেসব নেতাদের বা জনপ্রতিনিধিদের মদদ বা উস্কানি আছে তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন অপকর্ম না করতে পারেন সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।

নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল ফারুক খান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন এমপি, আ.বি.এম. রিয়াজুল কবির কাউছার, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী, শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান কামরুলসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

news24bd.tv নাজিম