‘আমরা স্বাধীন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলে, ফতোয়ায় নয়’

‘আমরা স্বাধীন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলে, ফতোয়ায় নয়’

আশরাফুল আলম খোকন

দ্যাখো ফতোয়ার বাহার...

হরেক রকম ফতোয়া আমরা দেখেছি। আর এই ফোতয়ার ব্যবসায় যুগে যুগে বক ধার্মিকরাই ভূমিকা রেখেছে। আর প্রকৃত ধার্মিকরা সত্যিকারের ধর্মটাই পালন করেছেন। ইসলাম ধর্মের শান্তির বাণী প্রচার করেছেন।

ইংরেজি শিক্ষা হারাম এই ফতোয়া দিয়ে জাতিকে শত বছর পিছিয়ে দিয়েছে তারা। এখন তারা ইংরেজিতে বয়ানও দেয়।  
নারী শিক্ষা হারাম এই ফতোয়া দিয়ে জাতিকে তারা পশ্চাদপদ করে রেখেছে। এখন মেয়েদের জন্য মাদ্রাসাও তৈরি করে।

এই ফোতয়ার বিরুদ্ধে বেগম রোকেয়া’রা দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছে। সহ শিক্ষাকেও তারা হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিল। নারী নেতৃত্বকেও তারা হারাম ফতোয়া দিয়েছে আবার বেগম জিয়ার সাথে জোটও করেছে। তাদের কাছে আলতা দেওয়া হারাম, লিপস্টিক হারাম, নারী নার্স হারাম, মেয়েদের চাকরি হারাম।

১৮১৮ সালে তারা ফতোয়া দিয়েছিল ভারতবর্ষ হচ্ছে দারুল হারব। এখানে জুমা ও ঈদের নামাজ হারাম। এমন ফতোয়াও এই ধর্ম ব্যবসায়ীরা দিয়েছিল।

পাকিস্তানী হানাদারদের প্রতি তাদের এতোটাই দরদ ছিল যে “ যুদ্ধের সময় নারী ধর্ষণ জায়েজ”- এই ফতোয়াও তারা দিয়েছিলো। মহান মুক্তিযুদ্ধে আড়াই লক্ষ মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছিল।

উপ মহাদেশে যখন প্রথম রেল গাড়ি আসে তখন তারা বলছিলো রেলগাড়ি চললে মাটি আজাব পায়। সুতরাং রেল গাড়ি হারাম। এখন তারা রেল গাড়িতে চড়েন না?

শুধু ভাষা দিয়ে গান হয় না। গানের মূল হচ্ছে সুর তাল লয়। তারা ফোতয়া দিয়েছিলো গান হারাম। এখন কিন্তু তারা শিল্পীগোষ্ঠী পর্যন্ত বানিয়েছে। যারা সুর তাল লয় ধরেই গান করে। সে যে গানই হোক না কেন। বাংলা ভাষায় সবচেয়ে বেশি ইসলামী গানের স্রষ্ঠা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকেও তারা নাস্তিক ঘোষণা দিয়েছিলো।

ছবি তোলা হারাম, মাইকে আজান হারাম, রেডিও হারাম ক্যামেরা হারাম, টিভি দেখা হারাম, ভিডিও হারাম, পুরুষ ডাক্তার দেখানো হারাম, জন্মনিয়ন্ত্রণ হারাম, গায়ে হলুদ হারাম, জন্মদিন পালন হারাম, নববর্ষ পালন হারাম- ভাইজানরা হারাম ঘোষণা দিয়ে এখন এর সব কিছুই করেন।  

তাদের এইরকম হারামের তালিকা টানা তিনদিন লিখলেও শেষ হবে না। সর্বশেষ সংযোজন সোস্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ফেসবুক হারাম। ফতোয়া দিয়ে দেদারছে তারা এইসব ব্যবহার করছে। তাহলে ভাস্কর্য হারাম তাদের এই ফতোয়া আমরা কেন শুনবো। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলে, ফতোয়া দিয়ে কোনো দেশ চলে না।

আরও পড়ুন: দেশি বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ, পদ্মা সেতু এখন বাস্তবে

আসেন আমরা তাদের ঈমানের পরীক্ষা নেই

দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ, পদ্মা সেতু এখন বাস্তবে

‘এরা কিন্তু দুইদিন পর বলবে শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ ভাঙতে হবে’

ঐতিহ্যগতভাবে এই দেশ সকলের। আউল, বাউল, লালনের এই দেশ। পীর,ফকির,আউলিয়াদের এই দেশ। তিতুমীর, সূর্যসেন, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতার এই দেশ। মসজিদ, মন্দির, গীর্জা,প্যাগোডার এই দেশ। এটা শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এইখানে সবার সমান অধিকার। (ফেসবুক থেকে )

আশরাফুল আলম খোকন, প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি

news24bd.tv তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর