শীতেও ধরে রাখুন সজীব-কোমল ত্বক

মোমেনা সরকার বিউটি

শীতেও ধরে রাখুন সজীব-কোমল ত্বক

মোমেনা সরকার বিউটি

শীতকাল অনেকের পছন্দের ঋতু হলেও  শুষ্ক ও খসখসে ত্বকের জন্য এর আমেজ পুরোপুরি উপভোগ করতে পারেন না সবাই। কারণ শীতে ত্বক তার উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পারে না। এ সময় ত্বকও শুষ্ক হয় খুব বেশি। তাই ত্বকের নিয়মিত সঠিক যত্ন না নিলে তখন দেখতে বয়স্কদের মতো দেখায়।

তাই বলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।   কিছু নিয়ম মেনে চললে শীতেও আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সজীবতা ধরে রাখা মোটেও কঠিন হবে না। আর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কিছু টিপস দিয়েছেন, বিউটিশিয়ান মোমেনা সরকার বিউটি।  

ত্বকের যত্ব নিতে হলে আপনার ত্বকের ধরণ কি সেটা জানা জরুরি।

স্বাভাবিক ত্বক ছাড়াও সাধারণত তিন ধরনের ত্বক দেখা যায়- শুষ্ক ত্বক (২) তৈলাক্ত ত্বক (৩) এবং মিশ্র ত্বক।  

আপনার ত্বকের ধরণ কিভাবে বুঝবেন?

স্বাভাবিক ত্বকে সাধারণত কোন তেল বের হয় না। তবে মিশ্র ত্বকে কিছু কিছু জাযগায় তেল বের হয় যেমন - কপালে, নাকে, গালে ঠোঁটের নীচে তেল নি:সরণ হয়। আর তৈলাক্ত ত্বকে পুরো মুখ থেকেই তেল বের হয়।   বিশেষ করে ঘুম থেকে উঠার পুরো মুখই তেল চটচটে থাকে। আর শুষ্ক ত্বক অতিরিক্ত খসখসে ও নিষ্প্রাণ থাকে। তাই প্রতিটি ত্বকের যত্নের ধরণও আলাদা।

তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন:

তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের প্রধান কাজ হলো মুখ পরিষ্কার রাখা। এজন্য বার বার মুখ ধুতে হবে। নাহলে ময়লা বসে গিয়ে ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করবে। যাঁদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত, তাদের ক্লিনজিং ও ময়েশ্চারাইজিংয়ের ক্ষেত্রে  অয়েল ফ্রি পণ্য ব্যবহার করতে হবে। আর বাইরে বের হলে যে কোন পাউডার ব্যবহার করলে ভালো। এতে মুখে ময়লাটা বসে না। তৈলাক্ত ত্বকে ক্লিনজিং ও টোনিংয়ের পর লেটুসপাতার রস, টমেটোর রস, নিম প্যাক দেয়া যেতে পারে। এই ত্বকে মধু ও উপটান ব্যবহার না করাই ভালো। তবে কমলার রস দেয়া যেতে পারে। শীতকালে তৈলাক্ত ত্বক বেশ ভালো থাকে। এমনকি তৈলাক্ত ত্বকে বলিরেখা বা রিনক্যালস কম পড়ায় বয়সের ছাপও পড়ে বেশ দেরিতে।

শুষ্ক ত্বকের যত্ন:

শুষ্ক ত্বকের অধিকারী যারা, তাদের শীতকালে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ শীতে এই ত্বক হয়ে উঠে আরও বেশি রুক্ষ। শীতে আবহাওয়ার কারণেই ত্বক অতি মাত্রায় শুষ্ক হয়ে যায়। এমনকি নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরও ত্বক ফেটে যায়। সেক্ষেত্রে  গ্লিসারিনের সঙ্গে গোলাপ পানি বা সাধারণ পানি মিশিয়ে লাগাতে পারেন। বেবী ওয়েলও লাগাতে পারেন মুখের ত্বকে। পাকা কলা, কয়েক ফোটা মধু, ডিমের সাদা অংশ, আর চায়ের লিকার মিক্সড করে মুখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি মশ্চারাইজারের কাজ করবে। এটি মুখের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। তবু মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই টোনার ব্যবহার করবেন।  


আরও পড়ুন: 

কুয়েতে করোনায় বাংলাদেশির মৃত্যু

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী আর নেই

অহেতুক টাকা নেয় হাসাপাতাল !


শীতকালে গ্লিসারিনযুক্ত সাবান  ব্যবহার করা উচিৎ। এতে ত্বকে খসখসে ভাব কমে আসবে। শীতে শরীরে লোশন ব্যবহার করবেন। বডি ওয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। তবে  ব্যবহারের আগে দেখে নিতে হবে সেটি আপনার ত্বকের উপযুক্ত কি না। শীতে শুষ্ক ত্বকে গাজরের রসের সঙ্গে কাঁচা দুধ ও বেসন বা ময়দা মিক্সড করে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। ঘরে তৈরি প্যাকেই ত্বকের জন্য বেশি ভালো। কারণ এগুলোর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।   কাঁচা গাজর খাওয়াও যেতে পারে। এটি ত্বক উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ভেতর থেকে মশ্চারাইজারের কাজ করবে। শুষ্ক ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ায় বয়সের ছাপ পড়ে বেশ তাড়াতাড়ি। তাই এই ত্বকের সঠিক যত্ব জরুরি। আর শীতে তো আরো জরুরি।

মিশ্র ত্বকের যত্ন:

আপনার ত্বকের সঙ্গে মানানসহ কোন ক্রিম বা লোশন ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে মুখে আলতো করে চাপ দিয়ে তেলটা মুখ থেকে শুষে নিতে হবে। টক দয়ের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে দিতে পারেন। এটি আপনার ত্বকে ডিপ ক্লিনিং এর পাশাপাশি মশ্চারাইজারের কাজ করবে। প্যাকটি সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করতে পারেন।

স্বাভাবিক ত্বকের অধিকারীদের সাধারণত তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। যে কোনভাবেই এই ত্বকের যত্ন নেয়া যায়। তবে আপনার ত্বক যেমনই হোক, সঠিক যত্বের পাশাপাশি প্রচুর পানি, ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে। সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমও বেশ জরুরি।

লেখক: মোমেনা সরকার বিউটি, মেকআপ আর্টিস্ট, নিউজ টোয়েন্টিফোর

news24bd.tv নাজিম