আল্লামা শফীর মৃত্যুর মামলাটি চক্রান্তের
সংবাদ সম্মেলনে বাবুনগরী

আল্লামা শফীর মৃত্যুর মামলাটি চক্রান্তের

অনলাইন ডেস্ক

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুকে ‘স্বাভাবিক’ উল্লেখ করে তাঁকে হত্যার অভিযোগে করা মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলে দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের বর্তমান আমির জুনাইদ বাবুনগরী। তিনি এই মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হলে হেফাজত কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বুধবার দুপুরে আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় (বড় মাদরাসা) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এবং হাটহাজারী মাদরাসার যৌথ উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বাবুনগরী বলেন, ‘শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল। তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্জলা মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। তাঁর মৃত্যুর তিন মাস পর এটিকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে। এটি রাজনৈতিক চক্রান্ত এবং দেশের স্থিতিশীল অবস্থা বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি বলে আমরা মনে করছি।

হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির শতবর্ষী আহমদ শফী চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার কর্তৃত্ব হারানোর পরদিন গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর হেফাজতের বিরোধের মধ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে আল্লামা শফীর শ্যালক মো. মইন উদ্দিন একটি মামলা করেন; যাতে আল্লামা শফীকে ‘মানসিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে’ হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় ৩৬ জন আসামির বেশির ভাগই হেফাজতের বর্তমান আমির জুনাইদ বাবুনগরীর অনুসারী।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বাবুনগরী বলেন, ‘আজকের সংবাদ সম্মেলনে আমাদের দাবি হলো, আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আল্লামা আহমদ শফীর বিরুদ্ধে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। উনার ওপর নির্যাতনের প্রশ্নই আসে না। আল্লামা আহমদ শফী যখন অসুস্থ হন, তখন শুরা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ’

এর আগে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ তুলে যারা মামলা করেছে, তারা একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী। সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছায় উনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল এমন কোনো মেডিক্যাল রিপোর্টও দালালগোষ্ঠী জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। দায়েরকৃত মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে এবং বিবরণে যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা কেউ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত না।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়, অবিলম্বে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামদের সঙ্গে পরামর্শ সাপেক্ষে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ড. নুরুল আবছার আল আজাহারী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘একটি কুচক্রীমহল আহমদ শফীকে জিম্মি করে হাটহাজারী মাদরাসায় ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করেছিল। তারা অনিয়ম এবং ছাত্রদের ওপর অব্যাহত হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়ে তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। কিছু স্বনামধন্য শিক্ষককে মাদরাসা থেকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করে বের করে দেওয়া হয়েছিল, যা ছিল অবমাননাকর। ’

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি তাঁর পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে দেশবাসীকে জানিয়েছিল। আগে থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা এতই নাজুক ছিল যে বেশ কয়েকবারই তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁকে হত্যার অভিযোগ তুলে যারা মামলা করেছে, তারা একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী। ’

মামলায় ‘তথাকথিত হত্যার’ যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো ‘অতিরঞ্জন ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেন আজাহারী। তিনি বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে মাদরাসার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের হয়রানির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ’

সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, নোমান ফয়জী, তাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ শোয়াইব, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ, মুফতি জসিম উদ্দীন, লোকমান হাকিম, কবির আহমদ, হাবিবুল্লাহ আজাদি, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদি, দিদার কাসেমী, মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনীর, মাওলানা মীর ইদরিস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ।

শেরপুর থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ

নাট্যজন মান্নান হীরা আর নেই

পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম আর নেই


নিউজ টোয়েন্টিফোর / কামরুল