বিএনপির দুর্বলতার বিপরীতে আ.লীগের সুশৃঙ্খলা

বিএনপির দুর্বলতার বিপরীতে আ.লীগের সুশৃঙ্খলা

তৌহিদ শান্ত

তৃণমূলে কোন্দল এবং শীর্ষ দুই নেতার শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ, আর ঐ পর্যায়ের মতবিরোধ - জনগনের সামনে বিএনপির এসব দুর্বলতার নগ্নপ্রকাশের বছর ছিলো দুইহাজার বিশ। বিএনপির নিজ ঘরের এমন সব আগুন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য বছরটিকে করে তোলে রাজনৈতিক শান্তির বছর।  

যদিও মহামারিতে জনগনের দায় পালনে দলের অধিকাংশ নেতা যখন নিষ্প্রাণ তখন এককভাবেই বরং তৃণমূল আর সরকার সামলান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বছর শুরু হয়, বাঙালীর স্বাধীনতার এবং স্বাধীন বাংলার জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর পালনের উচ্ছ্বাস দিয়েই।

কিন্তু কঠিন বাস্তবতা, মার্চেই দেশ প্রবেশ করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলোর সারিতে। একে একে বাতিল হয় মুজিব বর্ষের অধিকাংশ অনুষ্ঠান।

মহামারির শুরুতে অস্বত্বিতে পড়ে সরকার, একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠন গুলো মাঠে নামে সংক্রমণ মোকাবেলায়।

যদিও ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব পাওয়া তৃণমুলের কোন কোন নেতার ঘরে খাটের নীচে পাওয়া যায় দুর্স্থদের জন্য বরাদ্দ  শতশত সয়াবিন তেলের বোতল, নয়তো চালের বস্তা।

এবছর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মসূচী ছিল অনেকটাই ওয়েব নির্ভর। অবশ্য সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি আনতে সহযোগী সংগঠন গুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়।

যদিও করোনায় আওয়ামী লীগ হারায় মোহম্মদ নাসিম, সিলেটের সাবেক মেয়র বদুরুদ্দীন কামরান ও আখম জাহাঙ্গীর সহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে।

এ বছর জনগনের সরাসরি অংশগ্রহনের রাজনৈতিক কর্মসূচী ছিলো দুই ঢাকার নগর পিতা নির্বাচন। দুই সিটিতে জিতে আওয়ামী লীগ। ভোটের পরের দিন ২ ফ্রেব্রুয়ারী বছরের প্রথম এবং একমাত্র হরতালটি ডাকে বিএনপি।

করোনায় সাত মাস সাংগঠনিক কাজ স্থগিত করে বিএনপি। তবে মহামারির এই দুর্যোগে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম আর ত্রাণ মানুষের বিএনপির দলীয় অবস্থান ছিলো বেশ ইতিবাচক।


আরও পড়ুন: নতুন বছরে চ্যালেঞ্জ করোনা কূটনীতি


তৃণমূলের বিএনপির কোন্দলের এক পর্যায়ে মনোনয়ন বঞ্চিতদের ক্ষোভের জের পৌছায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে বাসায় ডিম আর পাথর ছুড়ে মারা পর্যন্ত।  

কোন্দল যে শুধু তৃণমূলেই নয় এটি প্রমাণ হয় বছর শেষে। ১৪ই ডিসেম্বর রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে সরকার পতনে বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যানের হঠাৎ আন্দোলনের ডাক। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ঐ দিন বিকেলেই এই দুই ভাইস চেয়ারম্যান, মেজর হাফিজ এবং শওকত মাহমুদকে শোকজ করে বিএনপি।

সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখে ঢাকায় একটি হাসপাতলে মারা যান হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ নেতা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী মারা গেছেন। এরপর থেকেই শফিপন্থী এবং মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থকরা সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে পরস্পর বিরোধী অবস্থানে চলে যায়। নতুন কমিটির মহাসচিব নুর হোসেন কাসেমী মারা যান ১৩ ডিসেম্বর।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এসব ঘটনাকে রাজনীতির স্বাভাবিক ঘটনা বললেও অনেকে মনে করেন ২০২০ সালে রাজনীতির সবচেয়ে বড় ঘটনা হয়তো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রক্রিয়া। বিএনপির নেত্রীর মুক্তি প্রক্রিয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা সরাসরিই দেখা করেন আওয়ামী লীগ নেত্রীর সঙ্গে।

news24bd.tv আহমেদ