কেউ কি আমাকে বলবেন- আমি কি ভুল পথে আছি?

কেউ কি আমাকে বলবেন- আমি কি ভুল পথে আছি?

আমিনুল ইসলাম

যে কোন বিষয়কে খুব স্বাভাবিক ভাবে নেয়ার একটা ক্ষমতা বোধকরি ছোটবেলা থেকেই আমার আছে।  

আমার বাবা মারা গেলেন বছর তিনেক আগে। দেশ থেকে ভাইয়া ফোন করেছে। বসন্ত কাল ছিল।

চমৎকার আবহাওয়া। আমি একটা লেকচার শেষ করে লাঞ্চ টাইম ইউনিভার্সিটি'র পাশে ঘাস বাগানে বসে আছি, এমন সময় ভাইয়ার ফোন।
- হ্যালো ভাইয়া।  
ভাইয়া ওপাশ থেকে বলছে 
-কি করিস? 
-এইতো বসে বসে সূর্যের আলো খাচ্ছি।
 
- বাবা মারা গিয়েছে খানিক আগে।  
আমি শুনলাম। শুনে বললাম 
- আচ্ছা ঠিক আছে।
 
আমার তেমন কিছু'ই মনে হলো না। একবারের জন্যও জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করলাম না- কিভাবে কি হলো? ফোন ছেড়ে দুপুরের ক্লাস নিলাম। এরপর আমার বড় বোন, যে কিনা এই শহরে'ই থাকতো; ওর সঙ্গে দেখা করলাম। ওর কান্না দেখে মনে হলো - আমারও তো কাঁদা উচিত। কিন্তু আমার কান্না আসছে না।  
তখন মায়ের ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছে। মা এসছেন বিদেশে আমার এখানে। আমার উপর দায়িত্ব পড়েছে মা'কে বলার- বাবা মারা গিয়েছেন। এই কথা মা'কে কিভাবে বলব, সেটাই বুঝতে পারছিলাম।  

মা'র মুখেই শুনেছি ১২ বছর বয়েসে নাকি মা'র বিয়ে হয়েছে। আমার ঠিক ধারণা নেই, সত্যি সত্যিই ১২ বছর বয়েসে কারো বিয়ে হওয়া সম্ভব কিনা! মাঝে মাঝে'ই যখন বাবা'র সাথে ঝগড়া করতেন; তখন আমাদের এসে বলতেন ।
- ১২ বছর বয়েস থেকে তোদের সংসারের দেখভাল করছি। আর পারব না। আমি চলে গেলাম গ্রামে! 
শুনলে হয়ত মনে হবে, আমার বাবা-মা সব সময় ঝগড়া করতেন। সত্যি বলতে কি- এরা দুইজন প্রায়'ই ঝগড়া করতেন। এদের ঝগড়া দেখে আমি ভাবতাম- এরা কি আদৌ একজন আরেকজনকে ভালোবাসে? 

অনেক পরে যখন নিজে ভালো করে বুঝতে শিখেছি; তখন বুঝেছি- এটাই ভালোবাসা।  
আমার বাবা-মায়ের ভালোবাসার কথা বলে বোধকরি শেষ করা যাবে না। এরা সেই অর্থে খুব একটা গ্রামে থাকেনি।  
আমার বাবা বোধকরি ১৫ বছর বয়েস থেকেই ঢাকায় থাকেন আর আমার মা তো ১২ বছর বয়েসে বিয়ে হবার পর বাবার সাথে ঢাকায় চলে আসেন। অথচ এদের বাসায় অর্থাৎ আমাদের ঢাকার বাসায় গ্রাম থেকে রাজ্যের মানুষ এসে হাজির হতো।  

নাহ, আজকের এই লেখাটায় না হয় এলোমেলো ভাবনা গুলো তুলে ধরি। সব সময় গুছিয়ে লিখতে হবে, এমনও না। আজ না হয় যা ইচ্ছে হয় লিখি সেই সঙ্গে নিজেকে খানিক জাহির করি।  

তো, আমাদের ঢাকার বাসায় গ্রাম থেকে সব সময় মানুষজন এসে হাজির হতো। আমাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার বক্সগঞ্জ বাজারে। আমার জন্ম ও বেড়ে উঠা অবশ্য আমাদের ঢাকার নাখাল পাড়া'র বাসাতেই। আমি সেই অর্থে গ্রামে যাই'নি। ছোট বেলায় হয়ত দুই একবার আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। কিন্তু সেই অর্থে কোন স্মৃতি আমার নেই।  

তবে গ্রাম থেকে সব সময় মানুষজন যাতায়াত করতো এবং আমার বাবা-মা'ও হয়ত প্রতি বছর না হলেও দুই-তিন বছর পর পর গ্রামে যেতেন। তো, আমার নানা বাড়ি আর দাদা বাড়ি আসলে এক'ই এলাকায় পাশাপাশি দুটো গ্রামে। একটা গ্রামের নাম মলংচর। অন্য'টির নাম বড়রা। এই দুটো গ্রাম'কে আলাদা করেছে একটা খাল। দুই গ্রামের মানুষকে নৌকা করে যাতায়াত করতে হতো।  

তো, গ্রামের লোকজন এসে বাবা'কে বলত- এটা কেমন কথা, নৌকা করে আপনার শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়! এইসব শুনে আমার বাবা শেষমেশ খালের উপর আস্ত একটা ব্রিজ বানিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করলেন! চিন্তা করে দেখুন- প্রায় একক প্রচেষ্টায় আস্ত একটা ব্রিজ বানিয়ে ফেলেছেন! সেই ব্রিজ শুনেছি এখনও আছে।  
এই হচ্ছে আমার বাবা-মায়ের ভালোবাসা। এরা কোন দিন এক মুহূর্তের জন্য আলাদা থাকেনি বিয়ের পর। সব সময় এক সাথেই থাকতো। আমরা ভাই-বোনরা যে জগতের সমূদয় ভালোবাসা নিজেদের মাঝে পেয়েছি; এর কারন বোধকরি আমাদের বাবা-মা।  

তো, বাবার মৃত্যু'র পর আমার উপর দায়িত্ব পড়লো মাকে বলার। আমার পক্ষে তো কোন ভাবেই সম্ভব না। আমি সাত দিন কেবল চিন্তা করেছি, কিভাবে বলা যায়। শেষমেশ অষ্টম দিন রাতে মা'কে বললাম 
-মা, বাবা তো আর বেঁচে নেই।  

আজব কাণ্ড! ঠিক সেই মুহূর্তে আমার চোখ দিয়ে গড়গড় করে পানি বের হওয়া শুরু করেছে! যখন দরকার নেই; ঠিক তখন'ই রাজ্যের আবেগ এসে ভর করেছে! আমার মা আমার দিকে তাকালেন, এরপর বললেন 

- তুই একদম মন খারাপ করবি না। কারো বাবা-মা'ই আজীবন বেঁচে থাকে না। তোর বাবা একজন সফল মানুষ। সে তার সকল ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছে। সফল একটা জীবন কাটিয়েছে। তার বয়েস হয়েছিলো। সে চলে গিয়েছে। মন খারাপ করার কিছু নেই।  

ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করছে সেই মুহূর্তে আমার মা। সেই রাতে আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। দুইজনে'ই শুয়ে আছি। কেউ কারো সাথে কথা বলছি না। একটু পর পর চোখ পরিষ্কার করার জন্য বাথরুমে যাচ্ছি। গভীর রাতে মা বললেন 

- তোর বাবা যুদ্ধের সময় কতো কষ্ট করেছে। কতো ভাবে চেষ্টা করেছে আমাদের রক্ষা করতে।  
আমি মা'কে কিছু জিজ্ঞেস করিনি এই ব্যাপারে। এর মাস খানেক পর মা চলে গেলেন দেশে। যাবার আগে বলে গেলেন
- আমি তো তোর বাবা'কে ছাড়া থাকতে পারব না। ওই বাসায় তো এখন আর তোর বাবা নেই। দেখিস, তোর বাবা আমাকে খুব দ্রুত'ই নিয়ে যাবে তার কাছে।  
এর আট মাসের মাথায় মা'ও চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। পর্তুগালে গিয়েছি সেখানকার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং লেকচারার হিসেবে। এক সন্ধ্যায় আমার বোন ফোন করে বললেন 
- মা তো আর নেই! 
আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই বললাম 
- ও আচ্ছা! 

একটা বিশাল বড় ডুপ্লেক্স বাসায় আমি অচেনা একটা দেশে থাকছি। ঠিক সেই মুহূর্তে কিনা আমাকে শুনতে হলো - আমার মা আর নেই। যেই মা'ই ছিল আমার জীবনের সব কিছু।  

আমার পুরো পৃথিবীটা বদলে গেল। আশপাশের চেনা মানুষ গুলোকে আর চেনা যায় না। চেনা পৃথিবীটা আমাকে বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছিল- ওয়েলকাম টু দ্যা নিউ ওয়ার্ল্ড।  

সত্যি বলতে কি, আমি মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারে'ই মানুষ। ঢাকায় নিজেদের বাড়ি আছে। গ্রামে সেই অর্থে যাওয়া হয়নি। কোন ইমেজও আমার মনে ভেসে উঠে না। তবে জানি- সেখানে আমার বাবার রেখে যাওয়া অনেক সম্পত্তি আছে।  

বাবা বেঁচে থাকতে, গ্রামের চেয়ারম্যান-মেম্বার'রা নির্বাচনের সময় বাবার কাছে আসতেন। আমার মনে আছে একবার মনে হয় হ্যারিকেন মার্কায় কোন এক চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিল। তিনি মাঝে মাঝে আসতেন। হ্যারিকেন মার্কা বলে বোধকরি আমার এখনও মনে আছে! 

এই তো শেষবার যখন দেশে গেলাম, আমার সেজ বোনের ড্রাইভার বলছিল- আপনাদের গ্রামে যেই সম্পত্তি আছে; আপনার কিছু না করলেও চলবে! গাড়ি চালিয়ে জমি গুলোর এক মাথা থেকে আরেক মাথায় যেতেও অনেক সময় লাগে! 

অথচ আমি নিজেই এসবের তেমন কিছু জানি না কিংবা কখনো জানতে ইচ্ছেও হয়নি। কারন আমাদের বাবা-মা, আমাদের খুব সাধারণ ভাবে বড় করেছেন। কখনো'ই কোন কিছু চাইলেই পেয়ে যেতাম না। দুটো পেন্সিল চাইলে একটা হয়ত পেতাম। সব সময় বলতেন 

- নিজের পরিচয়ে বড় হতে হবে। বাবা-মা কে কি করছে সেটা বড় কিছু না। সব সময় পা মাটি'তে থাকতে হবে।  

তো, আমরা ভাই-বোনরাও সেভাবেই বড় হয়েছি অনেকটা খুব সাধারণ ভাবে। সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষ করেছি। যে যার মতো করে চলছি। কখনো'ই 
বাবা-মা'র রেখে যাওয়া কোন কিছু'র আমাদের সেই অর্থে প্রয়োজন হয়নি। আজ হঠাৎ করে একটা পোস্টে চোখ আঁটকে গেল। কে যেন বিশাল একটা পোস্টার সেয়ার করেছে। সেখানে লেখা 

- কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের কৃতি সন্তান অমুক ইত্যাদি ইত্যাদি! 

পড়ে হঠাৎ করে মনে হলো- আচ্ছা, ওই এলাকার মানুষ হয়ত নিশ্চিত ভাবেই আমার বাবা'কে চিনবে। কিন্তু তারা কি আদৌ আমাকে চেনে? আমি হয়ত সেখানে জন্মিনি, কিন্তু আমি তো সেই এলাকার'ই সন্তান।  

এই এলাকার মানুষজন কি জানে, সেই গ্রামের কেউ একজন দেশের পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে, বিদেশে পড়াশুনা শেষ করে বিদেশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছে? তারা কি জানে, ওই এলাকার সন্তানের লেখা বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মিলে লাখো মানুষ পড়ে? 
আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি তারা সেটা জানে না।  
 
এতটুকু পড়ে আমি এও নিশ্চিত জানি, আপনারা ভেবে বসবেন- আমি নিজেকে জাহির করছি।  
হ্যাঁ, অতি অবশ্য'ই করছি। তবে সেটা পুরো ব্যাপারটাকে বুঝিয়ে বলার জন্য। নিজেকে জাহির করা কিংবা কেউ আমাকে কৃতি সন্তান বলে বেড়াবে; সে ইচ্ছে আমার নেই। যদি থাকতো, তাহলে তো অন্য পেশায় যেতাম। কিংবা নিজের ঢোল নিজে'ই পিটিয়ে নাম করার চেষ্টা করতাম। সেটা খুব একটা কঠিন কিছু ছিল না আমার জন্য কিংবা এখনও সম্ভব।  

এখন প্রশ্ন হচ্ছে- দেশের গ্রাম-গঞ্জ কিংবা বিভিন্ন এলাকার কৃতি সন্তান আসলে কারা হচ্ছে? 
সরকারি বড় চাকরিজীবী'রা কিংবা যাদের অনেক ক্ষমতা? 

আমি ওই পোস্টার দেখে আজ'ই ফোন করে আমার ইউরোপীয় সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করেছি 
- তোমাদের দেশের কৃতি সন্তান বলতে কি তোমরা সকারি বড় অফিসারদের বুঝাও? 
আমার সহকর্মী'রা আমার প্রশ্ন শুনেই চোখ কপালে তুলেছে! 

আর আমরা কিনা সরকারি কর্মকর্তাদের নানান সব এলাকার কৃতি সন্তান বানিয়ে বসে আছি। এদের সংবর্ধনা দিয়ে বেড়াচ্ছে!  এরা তো আর দশটা চাকরিজীবী'র মতোই নিজেদের পেশায় কাজ করছে। আমরা এদেরকে কেন কৃতি সন্তান বলছি? 

সেটা বলতেও আমার আপত্তি নেই। যে কেউ'ই কৃতি সন্তান হতে পারে। কিন্তু নিয়ম করে কেন আমারা বড় বড় সরকারি কর্তাদের'ই শুধু কৃতি সন্তান বলে বেড়াচ্ছি? 
কারন এদের অনেক ক্ষমতা। ক্ষমতার জোরে এরা দিন'কে রাত আর রাত'কে দিন বানাতে পারে। তাই আমরাও এদেরকে'ই কৃতি সন্তান বলছি।  
তাহলে একটা দেশের ভবিষ্যৎ কোথায়? 

আমাদের আদর্শ যদি হয় কিছু সরকারি কর্তা; তাহলে আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-কলায় কিভাবে এগুবো? 
মানুষজন তো তাহলে শুধু সরকারি কর্তা'ই হতে চাইবে। তাহলে সমাজ কিংবা রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায়? 
যা হোক, নিজের গল্প দিয়ে শুরু করেছিলাম, তাই শেষটাও নিজের গল্প দিয়েই করি।  

যেই কঠিন পরিশ্রম করে জীবনের এই পর্যায়ে এসছি; সেই পরিশ্রম এখনও জারি আছে। গতকাল একটা ছবি পোস্ট করেছিলাম। সেখানে একজন এসে মন্তব্য করেছে 
- আপনি তো সফল মানুষ। কিন্তু আপনার জীবনের কঠিন বিষয় গুলো নিয়ে লিখুন।  

আমি এই কমেন্টের উত্তরে লিখেছি- আমি তো নিজেকে সফল মনে করি না। আমি বরং নিজেকে পুরোপুরি অসফল মনে করি। আমি হতে চেয়েছিলাম লেখক। কিন্তু আমাকে চাকরি করতে হয়। কারন আমি দরিদ্র। বাবা- মা বলে গিয়েছেন- নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে। তাই আমাকে সব সময় চিন্তা করতে হয় ভবিষ্যতে কিভাবে চলব। এতো কিছু চিন্তা করে আর যা-ই হোক আমার মতো মানুষের পক্ষে লেখক হয়ে উঠা হচ্ছে না। এখন চাকরি করাকে যদি আপনি সফল মনে করেন, সেটা আপনার ভাবনা।  

তবে আমি আমার চেষ্টা জারি রেখেছি। কারন আমি একজন সফল লেখক হতে চাই। নিজের ভাবনা গুলো অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। পৃথিবীর নানান দেশে পড়াশুনা, উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু ঘুরে বেড়ানো এবং নানান ধরের মানুষের সাথে পরিচয়ের অভিজ্ঞতা গুলো নিজের লেখায় তুলে ধরতে চাই।  
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- আমরা কি আদৌ এই ধরনের মানুষদের সফল বলছি ? নাকি বিসিএস ক্যাডার হইনি বলে কিংবা বড় সরকারি কর্তা হইনি বলে শুনতে হবে- এ আর এমন কি! 

কেউ কি আমাকে বলবেন- আমি কি ভুল পথে আছি? 
আমার মতো মানুষের মনেই যদি এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এসে ভর করে, তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা আসলে কি শিখছে!

আমিনুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, অস্ট্রিয়া। (ফেসবুক থেকে)


বিকাশ প্রতারণার টাকা উদ্ধার করাই তার নেশা!

বাসে ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টার কথা স্বীকার করল হেলপার


news24bd.tv / কামরুল