এক যুগ আগে সম্পর্ক শেষ হলেও দুজনের বন্ধুত্ব অটুট

এক যুগ আগে সম্পর্ক শেষ হলেও দুজনের বন্ধুত্ব অটুট

মনিজা রহমান

সেদিন স্কুলে আগে ভাগে পৌঁছে যাবার কারণে পুরনো  ক্লাসে গিয়েছিলাম দেখা সাক্ষাত করতে। আমি যাবার মিনিট দুয়েক পরে আমার পুরনো ক্লাসের মেইন টিচারের ফোনে একটা কল আসল। স্কুলে বাইরের কল ধরার নিয়ম নাই। তবু তিনি ধরলেন।

কারণ, মেয়ের হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল ফোন করেছে। ফোন শেষে আমার টিচারের এক চোখে হাসি, আরেক চোখে জল। গভীর আনন্দের সঙ্গে জানালেন, তার মেয়ে অনার রোল পেয়েছে। প্রিন্সিপাল সেটা জানাতে তাকে ফোন করেছে।

সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে ফোন করলেন। বেশীক্ষণ কথা হল না। কারণ মেয়ে অনলাইন ক্লাসে আছে। তারপর আমার দিকে চোখ টিপ মেরে টিচার বলল, ‘লুইসকে ফোন করি’। আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম, লুইস যেন কে? ওর ছেলে মনে হয়। কারণ টিচার একজন সিঙ্গল মম। একাই বড় করেছে দুই ছেলেমেয়েকে। সংসার চালাতে স্কুলের চাকরীর পরে আরেকটা চাকরী করে। আমরা ওকে ফাদার্স ডে, মাদার্স ডে উভয় দিবসে শুভেচ্ছা জানাই।  

টিচারকে দেখি হো হো করে ফোনে হাসছে। হাসি আর থামে না। ফোন কেটে দিয়ে আমার জিজ্ঞাসু চোখের দিকে তাকিয়ে বলল- ‘আমার এক্স হাজব্যান্ড। কি বলেছে জান? মেয়ে এত মেধাবী হয়েছে তার বাবার কারণে। হাহাহা। ’ আমার কি যে ভালো লাগল পুরো বিষয়টা। মেয়ের ভালো খবর পাওয়া মাত্র মা সাবেক স্বামীকে জানালেন। অথচ দুজনে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে তাও প্রায় এক যুগ। সম্পর্ক শেষ হলেও যে পারস্পরিক সম্মানবোধ আর বন্ধুত্ব অটুট থাকে- তাই দেখলাম।


আরও পড়ুন: ফেসবুক নিয়ে সাতকাহন


বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বাংলা মিলে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভাগ্যবান শিশুর নাম হল আইরা। কারণ তার দুই বাবাই অত্যন্ত বিখ্যাত মানুষ। প্রথম জন তাহসান খান বাংলাদেশের নামকরা গায়ক ও নায়ক। দ্বিতীয় বাবা সৃজিত মুখার্জি পশ্চিমবঙ্গের নামকরা চিত্র পরিচালক। দুই জনই মেয়ে আইরাকে নিয়ে ইন্সট্রাগ্রামে পোস্ট দেয়। কিছুদিন আগে মেয়েকে নিয়ে তাহসানের পোস্টে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী মিথিলা মজা করে কি বললেনও। আমার টিচার ও তার এক্স হাজব্যান্ডের আলোচনার মতোই – আইরা কার কাছ থেকে মেধা পেয়েছে- এই জাতীয় নির্মল কৌতুক! খুব ভালো লেগেছিল ব্যাপারটা!

আমাদের আশে পাশে আমার টিচারের মতো বহু সিঙ্গল মম থাকে। অনেকে বিয়ে-ছেলেমেয়ে ছাড়াই সারাজীবন সিঙ্গল থাকে। অনেকে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে থাকে। কেউ হয়ত দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে থাকে। কেউ হয়ত তৃতীয়। প্রত্যেকেরই আলাদা জীবন। তিক্ততা ছাড়া নির্মল জীবন। বাংলাদেশে শুনলাম, ডিভোর্সের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা ডিভোর্সের আবেদন করছে বেশী। এই নিয়ে অনেকে চিন্তিত। জীবনের কোন কিছুই আসলে স্থায়ী নয়। পরিবর্তন আসতেই পারে।

news24bd.tv আহমেদ