এটা কি আমেরিকার গণতন্ত্রের সংকট ?

এটা কি আমেরিকার গণতন্ত্রের সংকট ?

Other

১.’সংসদের ভেতরে বাইরে- আন্দোলন’- টাইপের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে ইলেক্টোরাল কলেজের কার্যক্রমকে ব্যহত এবং দীর্ঘায়িত করা আর বাইরে বিক্ষোভ। নিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেপক্ষে টানতে না পারলেও ভেতরে ঝামেলা পাকানোর লোক পেতে তার সমস্যা হয়নি।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভেতরের আন্দোলনের চেয়ে বাইরের আন্দোলনটাই মুখ্য হয়ে ওঠে ট্রাম্প সমর্থকদের কাছে।

বাইরের জনতা নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে তান্ডবের জন্ম দেয়। বুধবারের সন্ধ্যায় আমেরিকায় যা ঘটেছে তার বিবরণ এখন সবার নখদর্পনে। বিভিন্ন মিডিয়া নানাভাবে এর বিবরন প্রচার করে যাচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে তাণ্ডবের তীব্র প্রতিক্রয়া বিশ্বনেতাদের

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব, গোলাগুলি


২.অনেকেই বুধবারের ঘটনাটাকে আমেরিকার গণতন্ত্রের সমস্যা হিসেবে দেখার চেষ্টা করছেন।

’গনতন্ত্র আক্রান্ত’- এমন কথাও অনেকে বলছেন। কিন্তু আসলেই কি এটা আমেরিকার গণতন্ত্রের সমস্যা? আর কিছুই কি নেই? কানাডার টরন্টো স্টারের সাংবাদিক আলেক্স ম্যাককিনের পর্যালোচনার মধ্যে আমি নিজে এর একটা উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি।

ক্যাপিটল বিল্ডিং এর বারান্দায় অস্ত্রের ঝনঝনানী, হল রুমে ফেডারেশনের পতাকা উড়িয়ে দেয়ার দৃশ্যের চেয়েও আলেক্সের দৃষ্টি কেড়েছে টুইটারে পোষ্ট করা একটি ভিডিও। ভিডিওটি পোষ্ট করেছেন ট্রাম্প সমর্থক একজন সাংবাদিক। সেই ভিডিওতে বিশেষ কিছু যে আছে তেমন নয়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে পুলিশকে ঠেলে উদ্যতভঙ্গিতে সাংবাদিক সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। সাংবাদিক যতোই এগিয়ে যাচ্ছেন অফিসারটি ততোই পিছিয়ে যাচ্ছে। সামনে এগুতে এগুতে উদ্যত ভঙ্গিতে সাংবাদিকটি বলে উঠেন- ’দিস ইজ আওয়ার আমেরিকা। ’

৩. ‘দিস ইজ আওয়ার আমেরিকা’- এই ঘোষণাটির মধ্যেই আলেক্স বুধবারের সকল ঘটনাপ্রবাহের ব্যাখ্যা খুঁজতে চাচ্ছেন আলেক্স। আমি তার সাথে দ্বিমত করার কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। আলেক্সের ব্যাখ্যা, বুধবারের সন্ধ্যায় আমেরিকায় যারা বিশৃংখল আচরণ করেছেন- তারা আসলে এই মতবাদেরই ধারক বাহক। ’আওয়ার আমেরিকা’র ‘আদর্শে বিশ্বাসীরা তাদের আমেরিকাকে রক্ষার জন্য এভাবে উশৃংখলতা দেখিয়েছে।

৪. বিকেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বক্তৃতাটা দেন- সেখানেও কিন্তু এই আদর্শের কথাই আছে। ‘ট্রু প্যাট্রিয়ট’ ট্রু ‘আমেরিকানদের’ জেগে উঠার ডাক দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই ডাকে ‘আ্ওয়ার আমেরিকার’ আদর্শধারীরা মারদাঙ্গা হয়ে নমে এসেছে।

৫.ট্রাম্পকে ঘিরে ‘দিস ইজ আওয়ার আমেরিকা’ বোধের যে বিস্তার ‘ট্রু আমেরিকানদের’ মনের ভেতর ঢুকেছে, সেটিকে কেবলমাত্র গণতন্ত্রের সংকট বা ট্রাম্পের ক্ষমতালোভ হিসেবে দেখলে সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হবে বলে আমার ধারনা।

শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ, কানাডা।

news24bd.tv / কামরুল