বইয়ের পরিবর্তে ট্যাব পাবে শিক্ষার্থীর : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

বইয়ের পরিবর্তে ট্যাব পাবে শিক্ষার্থীর : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পরিবর্তে একদিন ট্যাব বা ডিজিটাল ডিভাইস পৌঁছে যাবে এবং সেদিন খুবই কাছেই বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার।

বৃহস্পতিবার ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের টেলিকম অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাঝে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়েও প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে গেছেন।

তিনি বলেন, শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা আনন্দময় করে ডিজিটাল শিশু শিক্ষা পাঠ্যক্রম আবশ্যক। আগামাী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রচলিত পদ্ধতির শিক্ষাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরের কোন বিকল্প নেই।

আমি সিঙ্গেল সালমান জাস্ট ফ্রেন্ড : লিয়ানা

সাংবাদিক পরিচয়ে ইয়াবা ব্যবসা : ধরা পুলিশের জালে

১০টি ইউটার্ণের খরচ ৩১ কোটি টাকা

দাঙ্গাকারীদের ‘দেশপ্রেমিক’ বললেন ট্রাম্পকন্যা

বিদ্রোহী প্রার্থীদের আগামীতে আর মনোনয়ন দেওয়া হবে না: কাদের

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে শতকরা ৮৮ভাগ শিশুর হাতে ট্যাব আছে। তাদের বইয়ের দিকে তাকাতে হয় না।

প্রাথমিক শিক্ষা ডিজিটাল রূপান্তরের পথিকৃৎ জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনে সামান্য ফল দেবে কিন্তু প্রাথমিকের ডিজিটাল রূপান্তরে শতভাগ ফল পাওয়া সম্ভব। ১৯৮৭ সালে কম্পিউটারে বাংলাভাষা প্রবর্তনের পাশাপাশি কম্পিউটারে প্রাথমিক শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ৮৭ সালে ৩২টি কেন্দ্র্র থেকে ডিজিটাল শিক্ষার জন্য ডিজিটাল সফটওয়্যার নিয়ে কাজ শুরু করলেও বাংলার উপযোগী ডিজিটাল সফটওয়্যার তৈরি তখন সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ‘১৯৯৯ সালে আমি উপলব্ধি করি এই বিষয়টির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া দরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরে ১৩জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে দেশের প্রথম ডিজিটাল স্কুল নিয়ে যাত্রা শুরু করি।  

তিনি আরও বলেন, অল্প দিনের মধ্যেই তিনি শিক্ষার্থীদের দক্ষতায় মুগ্ধ হলেন উল্রেখ করে বলেন, বাচ্চাদের হাতে পাঠ্য বিষয়টি বাংলায় কন্টেন্ট করে দেওয়ার প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় হলিক্রসের ইংরেজী শিক্ষক জেসমিন জুই এর মাধ্যমে ২০১০ সালে তা সফলতায় রূপ নেয় এবং বর্তমানে প্রাক প্রাথমিকের তিনটি ও প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৫টি সহ মোট আটটি কনটেন্ট প্রাথমিক শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনের যাত্রায় মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে।  

মন্ত্রী ডিজিটাল শিক্ষাকে প্রাথমিক শিক্ষার মূলস্রোতধারায় সংযুক্ত করতে ২০১৫ সাল থেকে তার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে আইসিটি বিভাগ থেকে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও নানা প্রতিকুলতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। দুর্গম অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত অসহায় শিশুদের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধ তহবিলের মাধ্যমে গৃহীত উদ্যোগ শিক্ষার রূপান্তরের একটি ঐতিহাসিক মাইল ফলক বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এর ফলে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর এগিয়ে নেওয়ার পথে পরবর্তি করণীয় ও প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে যা শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখবে । মন্ত্রী শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতা প্রদানে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

বিটিআরসির সার্ভিস অবলিগেসন তহবিলের অর্থায়নে হাওর, প্রত্যন্ত, অনগ্রসর ও দুর্গম এলাকার ৬৫০টি স্কুলে এই প্রকল্প ২ বছরের মাঝে বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল ক্লাশরুম ডিজিটাল হবে। তম্মধ্যে ৩০টি স্কুলে শিশুরা বইবিহীন বা অনলাইনে ট্যাবে লেখাপড়া করতে পারবে। তাদের ক্লাশে ডিজিটাল টিভি, আইপিএস ও ইন্টারনেট থাকবে। তাদেরকে ২০২০ সালে ইনটেলের সাথে উইটসা পুরষ্কার প্রাপ্ত ডিজিটাল কনটেন্ট দিয়ে পাঠদান করা হবে। ডিভাইস ও ইন্টারনেট থাকলে শিশুরা বাড়িতে বসে বা অনলাইনে ক্লাশ করতে পারবে। বেসরকারিভাবে ২০০০ ও ২০১৫ সালে এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেশে চালু হলেও সরকারিভাবে কোন প্রকল্প গ্রহণ করে পাঠ্য বিষয়ের সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেসন করে ডিজিটাল যন্ত্রের সহায়তায় শিক্ষার সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেসন এই প্রথম।

পরে প্রাথমিক অধিদপ্তর ও টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকদ্ধয় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী সুবিধা বঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটালকরণ যাত্রা শুরু হবে। টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জনাব মো: জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন,প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব-গোলাম মো: হাসিবুল আলম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এম মনসুরুল আলম এবং টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহসীনুল আলম বক্তৃা করেন।

news24bd.tv/আলী