করোতোয়ার গতিপথ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ

করোতোয়ার গতিপথ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ

নাব্যতা হারিয়ে বিলিন হচ্ছে নদী
Other

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাটে দুটি নদীর মিলনস্থলে বাঁধ দিয়ে নদীর  ̄স্বাভাবিক গতী প্রবাহ বন্ধ করে দুটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। একটি রাস্তায় চলছে মানুষ পারাপার। নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলন করে বালি পরিবহন চলছে। শুধু বোদা উপজেলাতেই নয় জানা গেছে করোতোয়া নদীর বিভিন্ন  ̄স্থানে এভাবে নদীর বুকে বালি এবং মাটি ফেলে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।

ফলে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। নাব্যতা হারিয়ে প্রায় বিলীন হয়ে যাবার পথে করোতোয়া।

পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে জেলার প্রধান নদী করোতোয়া অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে।

আউলিয়ার ঘাটে ঐতিহাসিক ঘোড়া মাড়া নদী ও পঞ্চগড়ের প্রধান নদী করোতোয়ার মিলনস্থল।

দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের সাকো নির্মাণ করে মানুষ পারাপার হয়ে আসছে এই ঘাটে।

কিন্তু বর্তমানে বাঁশের সাকোটির দুইপাশে নদী ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রী আনুশকাহকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করল বন্ধু দিহান

সেই কবরটির একপাশে লেখা ইয়াসিন, অন্যপাশে মিম হা মিম

পাশেই একটি বালিমহল ঘিরেও নদী বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ওই ঘাটে পারাপার বাবদ নির্ধারিত টাকাও আদায় করা হচ্ছে।

জানা গেছে জেলা পরিষদ থেকে ওই এলাকার কিছু প্রভাবশালী মহল নদীর ঘাটটি ইজারা নেয়। বালুমহল ইজারা নেয় ওই এলাকার রাজনৈতিক নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যানের ভাই আজাদ জুলফিকার । তারা নদী বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করে বালুর ব্যবসা পরিচালিত করছে।

জানা গেছে, করোতোয়া নদীতে ১৬ টি বালুমহল রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি স্থানে বালুর ইজাদাররা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নদীর গতিপথ বন্ধ করে বালু উত্তোলন করছে। ইজারাদাররা বলছেন তারা জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের একটি অংশের সাথে কথা বলেই নদীর গতিপথ বন্ধ করেছেন।  

আউলিয়া ঘাটের ইজারাদার মো. তারামিঞা জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি মেম্বার পদে নির্বাচন করবেন।

তিনি বলেন, বোদা থানা পুলিশ এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে আলাপ করেই নদী ভরাট করে রাস্তা বানিয়েছেন। অন্যদিকে মাড়েয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য মশিয়ার রহমান জানান বালু মহালেরা নির্মাণ ও ঘাটের দুই পাশের রাস্তা নির্মাণে তিনি সহযোগিতা দিয়েছেন। কারণ এতে মানুষের উপকার হচ্ছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইবধাহিম এলিন জানান, নদী যারা বন্ধ করেছে তারা খুব প্রভাবশালী। বাঁধ দেওয়ার ফলে ধীরে ধীরে নদীটি মরে যাবে। তখন তারাই আবার দখল করবে। এই কাজটি তারা দীর্ঘমেয়াদী নদী দখলের পরিকল্পনা করেই করছেন।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. সলেমান আলী জানান, নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এমন খবর আমরা পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, পঞ্চগড়ে ৪৬ টি নদী প্রবাহমান। এজন্য পঞ্চগড়কে নদীর জেলাও বলা হয়ে থাকে। স্থানীয় পরিবেশবাদী ও নদী রক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মী ও বেশ কয়েকটি সংগঠন দীর্ঘদিন থেকে নদী দখলের বিরুদ্ধে এবং নদীর নাব্যতা ধরে রাখার জন্য আন্দোলন করছে।

news24bd.tv তৌহিদ