এই বয়সে দলবেধে ধর্ষণের চিন্তা কেন?

এই বয়সে দলবেধে ধর্ষণের চিন্তা কেন?

Other

মেয়ের বয়স ১৭/১৮, ছেলে/ছেলেগুলোর বয়সও তাই। এই বয়সে নিজের সমবয়সী, ক্লাসমেট একটা মেয়েকে ধর্ষণের চিন্তা মাথায় আসে কীভাবে? দলবেধে তাও?

আমি সব সময় বলি আমাদের এখনকার জেনারেশনের বেশিরভাগ ছেলেদের চিন্তাধারায় বেশ বড় ধরনের সমস্যা আছে| বেশ বড় ধরনের।   নিজে বিনয়ী হওয়া, অন্যকে সম্মান দেওয়া, অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করা, নিজের সীমারেখা জানাকে কেনোজানি আজকালকার ছেলেরা দুর্বলতা, কাপুরুষতা ভাবে। জোর করে দখল, এরোগেন্সকে মাসকুলার সিম্বল ভাবে তারা।

হাজার হাজার প্রমাণ এর স্বপক্ষে আছে। মোটরসাইকেল না দেওয়ায় বাবাকে কোপানে থেকে শুরু করে কিশোর গ্যাং। আমার মনে হয় ছেলে সন্তানের অভিভাবকরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে ছেলে সন্তানকে বড় করার ব্যাপারে। মানুষ বানানো তো আরো অনেক দূরের ব্যাপার।

আরও পড়ুন: যে দোয়া করলে আল্লাহ অবশ্যই কবুল করবেন?

নারীরা কি বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে?

এখন অনেকে বলতেই পারেন, বিবাহ বহির্ভূত মেলামেশা, পর্দা, ধর্মীয় অনুশাসন সহ অনেক ব্যাপারের কথা। আমি বলি, ভাই থামেন। এর সাথে কোনোভাবেই অপরাধীর অপরাধ করার মানসিক গঠন তৈরিতে তার অভিভাবক এবং সমাজের দায় কমে না। প্রথমেই মেনে নিতে হবে আমরা আমাদের ছেলে সন্তানদের সঠিকভাবে প্রতিপালন করতে পারিনি। আমরা তাদের মানুষকে সম্মান দিতে, মানুষের কনসেন্স এর মূল্য দিতে শেখাতে পারিনি।

আমরা বোঝাতে পারিনি, যদি তোমাকে কেউ তার শরীরে হাত দিতে মানা করে, এর অর্থ তুমি তার শরীরে হাত দিতে পারবে না। এটাই শেষ কথা। তার অনুমতি ছাড়া তুমি তার শরীরে হাত তো দূরের কথা, তার সাথে কথাও বলতে পারবে না।

আমরা তাদের শেখাতে পারিনি, তুমি তোমার জীবনে সব পাবে না। তুমি চাইলেই যে কোনো কিছু করতে পারবে না। তুমি জীবনে অনেক "না" শুনবে, অনেকবার হেরে যাবে। বেশ কয়েকবার অপমানিত হবে। এসব তোমাকে মানতে হবে। এসব মেনেই তোমাকে আগাতে হবে। যে তোমাকে না বলেছে, তুমি তাকে হাত দিয়ে জবাব দেবে না। তুমি তোমার নিজের কাজ করে, নিজের উন্নতি করে জবাব দেবে। যে তোমাকে অবহেলা করেছে, তাকে আঘাত করায় তোমার পুরুষত্ব বাড়ে না, বরং কমে।

আমরা আমাদের ছেলে সন্তানদের শেখাতে পারিনি। তার ফল ভোগ শুরু হয়েছে। করোনাকালে বনের মাঝে মাকে ফেলে রেখে আসতেও দেখেছি।

এখনই সময় ছেলে সন্তানদের মানুষ বানাবার চেষ্টাটা অন্তত শুরু করার। আর এর প্রধান ভার তাদের অভিভাবকদের।

শুধু ছেলে সন্তানদের অভিভাবকরা সচেতন হলেই সমস্যার ৮০% শেষ হয়ে যাবে। ধর্ষণ অনেক অনেক কমে যাবে। কনসেন্স এর অর্থ বোঝা এবং মানা সহজ হবে। সমাজ বদলে যাবে।

কিন্তু আমাদের ছেলে সন্তানের অভিভাবকেরা কি এই কষ্ট টুকু করবেন? 

করলে আলহামদুলিল্লাহ, আর না করলে, তাদেরও হয়তো কোনো জঙ্গলে তাদের ছেলে সন্তান ফেলে আসবে আর না হলে রাস্তায় অন্যকারো ছেলে সন্তানের হাতে কোপ খেতে হতে পারে।

আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

রুবাইয়াত সাইমুম চৌধুরী: সহকারি অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি, ঢাকা।

news24bd.tv তৌহিদ