কি এমন ইউনিক উপায়ে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলো দিহান?

কি এমন ইউনিক উপায়ে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলো দিহান?

Other

নিউইয়র্ক শহর স্পেশালি নিউইয়র্ক এর সাবওয়ে ষ্টেশন হল হোমলেস, ড্রাগ এডিক্ট আর পাগলের আখড়া। সাবওয়ে দিয়ে চলতে ফিরতে অসংখ্য পাগল দেখা যায়। কোন এক বিশেষ কারনে এই পাগলদের নিরানব্বই দশমিক নয় নয় ভাগই কালো ভাই।

এই দুইমাসে আমি পিওর সাদা পাগল দেখেছি মাত্র একজন।

সে আবার পাগল হলেও খুব ক্লাসি পাগল। অপেরা গেয়ে গেয়ে ট্রেন এর মধ্যে নিজের মনে নৃত্য পরিবেশন করছিলো। অন্য কোনদিকে তার উৎসাহ নাই।  

আর কালো পাগলদের আচরণ দেখলেই পিলে চমকে যায়।

এদের পোশাক আশাক চাল চলন সবই ভয়ঙ্কর। এদের কেউ কেউ ড্রাগ এর নেশায় এমন বুদ হয়ে থাকে যে কিছু বোঝার আগেই চোখের সামনে ধরাম ধরাম করে মাটিতে পড়ে যায়।

তবে কিছুদিন এই পাগলদের দেখার পর আমি রিয়েলাইজ করেছি এইসব পাগলদের কর্মকাণ্ড যতই ভয়ঙ্কর হোক এরা মানুষকে এটাক করে না।

কিন্তু যত যাই হোক পাগল তো পাগলই। পাগলের কোন বিশ্বাস নাই। আগে কাউকে এটাক করে নাই বলে কোনদিন করবে না এর গ্যারান্টি কি? এদের দেখলেই আমার কলিজা শুকায়ে যায়।  

যাই হোক আসল ঘটনায় আসি, কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়। একটু আগে ট্রেনে করে বাসায় ফিরছিলাম। পথিমধ্যে একবার ট্রেন চেঞ্জ করে ভুল ট্রেনে উঠে গেলাম। উল্টা পথে এক ষ্টেশন যাওয়ার পরে নেমে দেখি ষ্টেশনে কাকপক্ষীও নাই। শুধু পাঁচ সাতজন পাগল আছে।
 
এদের মধ্যে দুইজন ড্রাগের নেশায় দুলছে, যেকোন মুহুর্তে মাটিতে চিতপটাং হয়ে যাবে। একজন প্রচণ্ড ভায়োলেন্ট, বিভিন্ন যায়গায় লাত্থি দিচ্ছে আর মুখ দিয়ে ভয়ংকর শব্দ করছে। বাকিরা অপেক্ষাকৃত ধিরস্থির হলেও চেহারা অতিশয় ভয়ংকর।  

এদের দেখে আমার শরীর অসাড় হয়ে গেল। কিন্তু করার কিছু নাই। বাসায় তো যেতে হবে। একমাত্র হাতিয়ার হাতের ফোনটা। বিপদ দেখলে ৯১১ কল করবো ডিসিশন নিয়ে ফেললাম।

ট্রেন আসতে তখনো দুইমিনিট বাকী। আমি যত সুরা জানি সব মনে মনে পড়তে শুরু করলাম। কিন্তু কাহিনী সেখানেই শেষ হল না। কিছুক্ষণ আগে একবার মেট্রোকার্ড সুয়াইপ করার কারনে এইবার আমি সেইম কার্ড আবার পাঞ্চ করে প্লাটফর্মেও ঢুকতে পারছিলাম না।  


ট্রাম্পের অভিশংসন: এরপর কী?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দল চীনে পৌঁছেছেন


ভয়ে, নার্ভাসনেসে, কাজ হবে না জেনেও বার বার কার্ড সুয়াইপ করছি আর প্রতিবার রিজেক্টেড হচ্ছে। এত হেল্পলেস লাগছিলো মনে হচ্ছিলো চিৎকার করে কাঁদি।  

এমন সময় হঠাৎ সেই পাগলদের একজন আমার দিকে এগিয়ে এলো। আমার প্রায় হার্ট এটাক হবে এমন সময় সে নিজের নোংরা ঝোলা থেকে একটা মেট্রোকার্ড বের করে সুয়াইপ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল- যাও।

আমি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে প্লাটফর্মে ঢোকার এক মুহূর্ত পরেই ট্রেন এলো। তবে এবার আমি ভয় না, একেবারে অন্য এক অনুভূতি নিয়ে ট্রেনে উঠলাম। মনে পড়লো, আমার ভালোবাসার বাংলাদেশে সমবয়সী বন্ধু তার কিশোরী বান্ধবীকে বাসায় ডেকে নিয়ে না জানি কি এমন ইউনিক উপায়ে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলো, যে মেয়েটা মরেই গেলো।  

আর এই দূরদেশে একদল হোমলেস পাগল যাদের দেখে পটেনশিয়াল রেপিস্ট মনে হয়। তাদের একজন নিজের তিন ডলার খরচ করে আমাকে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে প্লাটফর্মে ঢুকিয়ে দিলো।  

অবাক বিস্ময়ে ভাবি, পৃথিবীর কোথাও কোথাও পাগলেরও মানবিকতা আছে, পাগলেরাও মেয়েদের সম্মান দিতে জানে। অথচ সেই পৃথিবীর কোথাও তথাকথিত সুস্থ মানুষই মানুষের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ, বন্ধুও বন্ধুকে রেইপ করে মেরে ফেলে...

news24bd.tv আয়শা