ভিসি স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। ১৩০০ দিনের মধ্যে ১১০০ দিনই তিনি অনুপস্থিত। আজ হঠাৎ তার আগমনের খবর পেয়ে আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলাম। তবে কখন যে তিনি চলে গেলেন টের পেলাম না।
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এভাবে তার কর্মস্থলে না আসলে বিশ্ববিদ্যালয়টা চলে কিভাবে?কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেরোবির ভিসি অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ দীর্ঘ এক বছরেও বেশি সময় ধরে ক্যাম্পাসে আসেন না। হঠাৎ করে গোপনে ঢাকা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের মূল প্রবেশ পথ ব্যবহার না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের পথ দিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেন।
এটাই ছিলো টিকা উৎপাদক কোম্পানির সুপারিশ
রাত পোহালে নির্বাচন, কে বেশি শক্তি দেখাচ্ছে?
শেষমেষ ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে সাড়ে তিন ঘণ্টা অবস্থান করেও তার সাক্ষাৎ পাননি বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকরা। শিক্ষকদের অভিযোগ ভিসি তাদের আসার খবর পেয়ে বাসভবনের পেছনের দরজা দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। এ ঘটনায় শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে বেরোবির অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে ভিসি ক্যাম্পাসে আসেন না। শুক্রবার সকালে গোপনে তিনি ঢাকা থেকে আসার খবর পেয়ে নিজেই ভিসির পিএস আমিনুর রহমানকে ফোন করি। পরে নিশ্চিত হই ভিসি সকাল ৯টার দিকে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে এসেছেন এবং তার বাসভবনে অবস্থান করছেন। এ কথা জানার পর ভিসির সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে জানালে পিএস জানান বিষয়টি ভিসিকে জানিয়ে সময় জানানো হবে। তবে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও কোনও সাড়া না পেয়ে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দ শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বেলা পৌনে এগারটার দিকে ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে সেখানে অবস্থান নেন। সেখানে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অবস্থান করার পর জানা যায় নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ শিক্ষকদের আসার খবর পেয়ে বাসভবনের পেছন গেট দিয়ে গোপনে পালিয়ে গেছেন।
এ খবর জানাজানি হলে শিক্ষক কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক নেতারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দিনের পর দিন ও বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। এমনকি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্বাধীনতা দিবস, রোকেয়া দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারিতেও আসেন না। তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ধ্বংস হয়ে গেছে। তার ওপর দুর্নীতি-লুটপাট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেই চলেছেন ভিসি। আমরা এর সমাধান চাই।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, উনি এমন কি ক্ষমতাধর হয়েছেন যে তার কর্মস্থলে আসবেন না। তারপরেও এই পদে তিনি কিভাবে থাকেন? বিষয়টি সরকারের নীতি নির্ধারকদের দেখা উচিত।
পরে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে ভিসির অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের সব ফিরিস্তির শ্বেতপত্র প্রকাশ করবো।
এ বিষয়ে জানতে ভিসির সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
news24bd.tv নাজিম