ব্যবসায়ী হতে চাইলে সত্যি কত্ত কি যে লাগে!

ব্যবসায়ী হতে চাইলে সত্যি কত্ত কি যে লাগে!

Other

নিজেও ২/৩ টি গ্রুপ অব কোম্পানিজের অধীনে চাকরি করেছি তখন কিছুই বুঝতাম না। কি অদ্ভূত! তখন দেখতাম এক একটা কোম্পানিতে কতজন চাকরি করে!

এখন নিজের খুব ছোট্ট কাজ করতে গিয়ে টের পাচ্ছি। সত্যি আর এই খুব ক্ষুদ্র কাজের সঙ্গেই জড়িত আছেন কত মানুষ!

প্রথমেই আসিসি মিষ্টি প্রসঙ্গে।

মিষ্টির অন্যতম উপাদান ছানা।

আর এই ছানা তৈরি হয় দুধ থেকে। আর দুধ আসে কৃষকের গোয়ালের পরম যত্নের গরু থেকে।
তার মানে মিষ্টির প্রথম যোগানদাতা কৃষক।

মিষ্টি বানাতে চিনি লাগে।

চিনি আসে আখ থেকে। যদিও বাংলাদেশে লাল আখের চিনি পত্রিকার পাতায় পাওয়া যায়, বাস্তবে নয় তাই বিদেশি সাদা চিনিই ভরসা। আবারও সেই চিনির মূল উৎস কৃষক। অর্থাৎ কৃষকের হাত ধরেই শুরু হলো মিষ্টি তৈরির প্রথম ধাপ।

এরপর আসি সবগুলো উপকরণ - চিনি, ছানা, মেওয়া, কখনও সুজি, সিরকা, ভুররা।  

প্রতিটি উপকরণ তৈরিতে লাগে দক্ষ হাতের ছোঁয়া। অদক্ষ হাতে এই উপকরণগুলো কোনটাই ঠিকমতো হয় না। আর সামান্য ভুল হলেই মিষ্টির স্বাদ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। এর মূল স্বাদটা পাওয়া যাবে না।

মিষ্টি বানাতে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি ধাপ পার করতে হয়।

প্রথমে ছানা তৈরি, এরপর সবগুলো উপকরণ একসঙ্গে মাখানো, মিষ্টির লেই তৈরি করা, সেগুলো কড়াইতে ভাজা, এরপর সেগুলোকে সিরায় ডোবানো। প্রতিটি কাজ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়। এর জন্য লাগে চুলা, লাগে খড়ি, লাগে হাড়িপাতিল আর দক্ষ কিছু হাত- যে হাত পরম যত্নে তৈরি করবে নির্দিষ্ট স্বাদের ও সাজের মিষ্টি।

মিষ্টি তো বানানো হলো এবার চাই মানুষজনকে জানানো। কেউ জানেই না তাহলে মিষ্টি নেবে কিভাবে? এখানেও প্রচুর কাজ। সবাইকে জানানো, আস্থা অর্জন এরপর অর্ডার।

অর্ডার হলে প্যাকেজিং এবং ডেলিভারির ব্যবস্থা। প্যাকেজিংয়ের জন্য চাই বক্স বা বাটি। পার্সেল বহনের জন্য ব্যাগ। প্রতিটি উপকরণ আসে আলাদা আলাদা খাত থেকে।


আরও পড়ুন: অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু না ফেরার দেশে


কাছাকাছি স্থানে হলে একজন ডেলিভারি পার্সনই যথেষ্ট। আর যদি দূরে হয় কুরিয়ার সার্ভিস একমাত্র ভরসা। কুরিয়ার অফিসে পৌঁছালে সেখান থেকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছানো এবং সবশেষে ডাইনিং টেবিল বা বিকেলের নাশতার টেবিলে মিষ্টি পৌঁছানো এ এক অনেক বড় যজ্ঞ।

আর পুরো যজ্ঞে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের আছে বিশাল ভৃমিকা। সবই হলো কিন্তু কোন ট্রান্সপোর্ট থাকল না তাহলে সেই মিষ্টি শুধু ঘরের মানুষ খাবে। বাইরের কেউ খাবার সুযোগ পাবে না।  

আছে পেমেন্ট ব্যবস্থা। যেক্ষেত্রে ব্যাংক, বিকাশ, নগদ বড় ব্যবস্থা। খুবই সামান্য একজন মিষ্টি বিক্রেতা হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা হলো। এখন এটুকুই বুঝছি আমার মতো এত ছোট উদ্যোগ যদি দেশের অর্থনীতির চাকা এভাবে সচল করতে পারে তাহলে বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানিজগুলো দেশের চাকা সচল রাখতে কত বড় ভূমিকা পালন করে!

জয় হোক দেশীয় অর্থনীতির। জয় হোক আমার মিষ্টির উদ্যোগের।

news24bd.tv আহমেদ