সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ নেই

সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ নেই

Other

সাতক্ষীরা জেলায় রোপা আমন ভালো হওয়ার পর কৃষকরা এখন ব্যাস্ত সময় পার করছে ইরি-বোরো বীজতলা থেকে গাছ সংগ্রহ করতে। গত মৌসুমে ধানের বাজার দর ভালো পাওয়ায় কৃষকরা ইরি-বোরো আবাদের প্রতি উৎসাহ নিয়ে চাষ শুরু করেছেন।

কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা জেলা অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায় যে, এবার জেলার সাতটি উপজেলার ইরি বোরো চাষের জন্য ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৪ হাজার ৫০০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১৪ হাজার হেক্টর, তালায় ২০ হাজার হেক্টর, দেবহাটায় ৬ হাজার হেক্টর, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর, আশাশুনি ৮ হাজার হেক্টর ও শ্যামনগরে ২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।

যে খানে গত বছর আবাদ হয়ে ছিল ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে।

জেলায় বোরো উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ২শ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে জেলায় ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৭৩০ হেক্টর ফসলি জমি আছে।

‘ধর্ষণের’ দৃশ্য দারোয়ান দেখে ফেলায় ‘আত্মহত্যা করে’ কলাবাগানের কিশোরী

কিন্তু পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ও জলাবদ্ধতার কারনে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ফলে বোরো উৎপাদন নিয়ে হতাশায় পড়েছে হাজার হাজার কৃষক। জলাবদ্ধার কারণে শুধু সাতক্ষীরা জেলার ৩৬ হাজার ৮০৪ হেক্টর নিচু জমিতে বোরোর আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।

জেলায় মোট এক লক্ষ ৭৭ হাজার ৮১৪ হেক্টর জমির মধ্যে আবাদি জমির পরিমাণ এক লক্ষ ৩১ হাজার ৭৮৮ হেক্টর। এর মধ্যে স্থায়ী পতিত জমি রয়েছে ৪৫ হাজার ১১০ হেক্টর। এর বাইরে চাষ যোগ্য জমির মধ্যে মাঝারি ও নিচু জমির পরিমাণ ৩৬ হাজার ৮০৪ হেক্টর। এসব জমির বেশির ভাগ অংশ এখনো পানির তলে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সর্ববৃহৎ বিল দাঁতভাঙ্গা, মালিনি ও পদ্মবিলসহ ১৩টি বিল এখনও ফসল শূন্য। এসব বিল ও গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ সীমান্তের ইছামতি নদীর শাখরা সুুইস গেট।

অপরদিকে সাতক্ষীরার বেতনা ও কপোতাক্ষ নদের অববাহিকায় পানি প্রবাহ বন্ধ থাকার কারণে জেলার তালা উপজেলার সরুলিয়া, নগরঘাটা , কুমিরা, খলিসখালি ও সদরের লাবসা, ব্র²রাজপুর ও ধুলিহর ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

সরজমিনে যেয়ে দেখা যায় অধিকাংশ জমিতে এখনও হাটু পরিমান পানি। স্ধসঢ়;হানীয় কৃষকগনের সাথে আলাপ কালে জানা যায় বিলগুলো ডুবে থাকার কারণে আমন মৌসুমে চাষাবাদ হয় না। এবার বোরো মৌসুমেও জমি চাষ করতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন নদীতে পানি আটকে থাকার কারনে এই অবস্ধসঢ়;হার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক এলাকায় উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরী করলেও শীতে চারা নষ্ট হচ্ছে। ইরি মৌসুমের শুরুতে জলাবদ্ধতার কারণে এই অঞ্চলের কৃষক জমি তৈরী করতে পারছে না ফলে কৃষকরা হতাশয় দিন পার করছে।

সাতক্ষীরা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক নূরুল ইসলাম জানান, জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হতে চলেছে। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও জেলার চাষিরা ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করে রেকর্ড সৃষ্টি করবে। জলাবদ্ধতা না থাকলে বোরোর আবাদ আরো বৃদ্ধি পেত বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরো জানান কৃষি জমির পরিমাণ কমে আসায় কৃষক হাইব্রিড জাতের ধান চাষের ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহী। উফশী জাতের তুলনায় হাইব্রিড ধান চাষে ৩০- ৪০% ফলন বৃদ্ধি হয়। বোরো মৌসুমে চাষাবাদ উপযোগী আগাম জাতগুলো হল বিআর১, বিআর৬, ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান৪৫ এবং ব্রি ধান৫৫। যা অল্প দিনে বেশী ফলন দেয়।

স্থানিয় কৃষকরা জানান আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও বাজারে কৃষি উপকরণ সার, তেল সংকট সৃষ্টি না হলে ইরি-বোরো আবাদে তেমন সমস্যা হবে না। এ মনটি মনে করছেন এখানকার কৃষক।

news24bd.tv তৌহিদ