টাইম ট্রাভেল কুরআনের পথেই হাটছে বিজ্ঞান

টাইম ট্রাভেল কুরআনের পথেই হাটছে বিজ্ঞান

অনলাইন ডেস্ক

পবিত্র কুরআন এমন একটা গ্রন্থ যার মধ্যে সংক্ষিপ্ত বাক্যে অনেক কিছু বলা হয়। আর এটা কোন বিজ্ঞান গ্রন্থ নয়। এটা ধর্ম গ্রন্থ, কিন্তু পবিত্র কুরআনে বিজ্ঞানের অনেক কিছুর সমাধান পাওয়া যায়, যা বিজ্ঞান স্বীকার করে নিয়েছে এবং কুরআনের কোন আয়াত আজও কেউ ভুল প্রমাণ করতে পারেনি।   এই মহাবিশ্ব যিনি সৃষ্টি করেছেন তার কাছেই রয়েছে সব কিছুর সঠিক সমাধান।

টাইম ট্রাভেল আসলে কী?
আধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে আলোচিত এবং লোভনীয় থিওরি হচ্ছে টাইম ট্রাভেলিং এবং টাইম ডিলেশন। আমরা সকলেই তিনটি মাত্রা সম্পর্কে অবগত,  দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা। এই তিনটি মাত্রা বরাবর স্থান পরিবর্তন সম্ভব। তবে ন্যূনতম চতুর্মাত্রিক একটি ধারণা হচ্ছে সময়ের ধারণা।

আজ পর্যন্ত এই চতুর্থ মাত্রা দিয়ে স্থান পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। এই সময়ের অক্ষ বরাবর স্থান পরিবর্তনকে কালমাত্রিক সরণ বলা হয়। এক সময় থেকে আরেক সময়ে পরিভ্রমণকেও আমরা সময় ভ্রমণ বলে থাকি। এটি হতে পারে অতীতে ভ্রমণ, হতে পারে ভবিষ্যতে ভ্রমণ।   বিজ্ঞানের ধারণা আলোর গতিতে বা তার চেয়ে বেশী গতিতে চলতে পারলেই টাইম ট্রাভেলিং সম্ভব। আবার নিউট্রিনো কণা যেহেতু যেকোন বস্তুর মধ্য দিয়েই অনায়েসে চলে যেতে পারে, সেহেতু সহজেই কোন ধরনের বাধা ব্যাতীতই চলা সম্ভব। কিন্তু এখানেও সমস্যার সম্মুখীন।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আল-মা’আরিজ এর ৪ নং আয়াতে বলেন: ফেরেশতা এবং রূহ আল্লাহর দিকে আরোহণ করে এমন এক দিনে, যার পরিমান (তোমাদের হিসাব মতে) পঞ্চাশ হাজার বছর।

অর্থাৎ ফেরেশতারা মহান রবের দরবারে এমন একটি দিনে উপস্থিত হয় বা হবে যেদিনের এক দিন সমান দুনিয়ার ৫০ হাজার বছরের সমান। জ্বি। ঠিক শুনেছেন। যে থিওরি পুরো পৃথিবীর বিজ্ঞান কে পরিবর্তন করে দিয়েছে। সেই থিওরি কিন্তু ১৪০০ বছর পূর্বেই মহান আল্লাহ তায়ালা তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে দিয়েছেন।

ফেরেশতারা নূরের বা আলোর তৈরী, তাদের জগৎও আলোর। সুতরাং বিজ্ঞানীদের টাইম ডিলেশনের সাথে পুরোপুরিই মিলে যাচ্ছে। টাইম ডিলেশনের আরো চমকপ্রদ কিছু নিয়ম রয়েছে। গতিশীল বস্তুর গতির আধিক্যতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে সময়েরও পূর্বে কাজ হয়ে যায়। সহজভাবে বললে, মনে করুন একজন মানুষের চেয়ে মেশিন কাজ করার দিক দিয়ে বেশী গতিশীল। মানুষ যে কাজ ১০ ঘন্টায় করে মেশিন সেটা এক ঘন্টায় করে। অর্থাৎ গতিশীলতার কাছে কাজের সময় কমে যায়।

আরও পড়ুন:


চৌদ্দশ বছর পুর্বের নবী (সা.) এর বাণীকে মেনে নিল বিজ্ঞান

কালো জাদু : বাবার হাতে খুন দুই বোন

মহানবী (সা.) এর বাণীকে সত্য প্রমাণ করল বিজ্ঞান

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম


 

এমন যদি হয় একটি বস্তুর গতি এতটাই বেশী যে, দুনিয়ার মুহুর্ত যাওয়ার পূর্বেই সে বহু বছরের কাজ করে ফেলে। লক্ষ বছরের রাস্তা ঘুরে আসে। হ্যা ! বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটাও অসম্ভব নয়। সম্ভব। কিন্তু এটা করতে হলে আলোর চেয়েও কোটি কোটি গুন বেশী গতিসম্পন্ন যানের প্রয়োজন, যেটা বিজ্ঞান মহলে কোনদিনও সম্ভব নয়।

কিন্তু এই কাজটিই করেছেন আমাদের প্রিয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি সকল সৃষ্টি জগত ঘুরে এসেছেন মূহুর্তের মধ্যেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, তিনি যাত্রা করার পূর্বে যেখানে অজু করেছেন, ফিরে এসে দেখেন যে, সেখানের পানি এখনও গড়িয়ে পড়তেছে।

এর মানে হচ্ছে তার বাহনের গতি এতটাই বেশী যে, দুনিয়ার সময় এক মুহুর্ত পার হওয়ার পূর্বেই লক্ষ লক্ষ বছরের রাস্তা পারি দিয়ে এসেছে। তার বাহনে গতি কেমন ছিল? এই সম্পর্কে বুখারী, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ সহ অসংখ্য কিতাবে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, আমার কাছে বোরাক আনা হল। এটি ছিল একটি সাদা লম্বা গাঁধার চেয়ে বড় এবং খচ্চর অপেক্ষা ছোট চতুষ্পদ জন্তু। এর পা আপন দৃষ্টিসীমায় পতিত হত।

অর্থাৎ বোরাকের গতি এতটাই বেশী ছিল যে, সে যেখানে তাকাত সেখানে চলে যেত। তার দৃষ্টি শক্তি কতটা প্রখর ছিল তা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম টাইম ডিলেশনের মাধ্যমে টাইম ট্রাভেল করে এসেছেন। তার বাহনের গতি এতটাই বেশী ছিল যা মুহুর্তেই সব কিছু করতে সক্ষম হয়েছে।

বোরাক অর্থ বিদ্যুৎ। যখন মানুষ বিদ্যুৎ এর সাথে পরিচিতই হয়নি তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদ্যুৎ তথা আলোর বাহনের থিওরি দিয়ে গেছেন। আজকের বিজ্ঞান আলোর বাহন অথবা নিউট্রিনোর বাহন বানানোর জন্য অবিরাম চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ সেটা ১৪০০ বছর পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রাকটিক্যালি ব্যাবহার করেছেন।

আল কুরআনের সুরা ওয়াকিআহ এর ৭৫-৭৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন-
শপথ সে পতন স্থানের, যেখানে নক্ষত্রসমূহ ধ্বংসপ্রপ্ত হয়। যদি তোমরা জানিতে, উহা অবশ্যই এক মহা গুরুত্বপূর্ণ শপথ।
কিন্তু প্রচলিত অর্থে এর অনুবাদ (অথবা মর্ম অর্থ ধরে নেওয়া হয়েছে) করা হয়েছে- শপথ নক্ষত্রসমূহের অস্তগমন স্থানের। যদি তোমরা জানিতে, উহা অবশ্যই এক মহা গুরুত্বপূর্ণ শপথ।

এখানে অস্তগমন এর আরবি শব্দ হল মাওয়াকিয়ি। অর্থাৎ মাওয়াকিয়ি এর অর্থ অস্তাচল বা অস্ত যাওয়া বলে ধরে নেয়া হয়েছে। মাওয়াকিয়ি মূল শব্দ ওয়াকায়া, যার অর্থ হল- ধ্বংস হওয়া, ধ্বংসের টানে পতিত হওয়া, বিস্ফোরিত হওয়া ইত্যাদি। এটি একটি ক্রিয়াপদ, আর ক্রিয়াপদের পূর্বে যবরযুক্ত মিম সংযুক্ত হলে তা ক্রিয়াপদের স্থান বা কালকে প্রতিভাত করে। ওয়াকায়া অর্থ অস্তগমন, অস্তাচল বা অস্ত যাওয়া অভিধানের কোথাও নেই। তাহলে উক্ত আয়াতের সঠিক অর্থ হচ্ছে- শপথ সে পতন স্থানের (ব্ল্যাক হোল), যেখানে নক্ষত্রসমূহ ধ্বংসপ্রপ্ত হয়। যদি তোমরা জানিতে, উহা অবশ্যই এক মহা গুরুত্বপূর্ণ শপথ।

কুরআনের কথার সাথে আধুনিক বিজ্ঞানের সকল থিওরি মিলে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই লক্ষ লক্ষ ব্লাকহোলের আকর্ষণ ভেদ করে সহজেই টাইম ট্রাভেল করে এসেছেন। যেখানে বিজ্ঞানের মতে এত আকর্ষণ বলের ব্লাকহোল ভেদ করা অসম্ভব প্রায়।

ইতিহাসে টাইম ট্রাভেল
১৮১৯ সালে ওয়াশিংটন আর্ভিংয়ের বিখ্যাত ‘রিপ ভ্যান উইংক্যাল’ বেশ সাড়া ফেলে দেয়। ডাচ বংশোদ্ভুত রিপ ভবঘুরে টাইপের ছিলেন। একদিন স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করতে করতে আর এই জগৎ সংসারের ঝামেলা থেকে ক্ষণিক রেহাই পাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের পোষা উলফ কুকুর নিয়ে পর্বতের দিকে রওনা দেন। সেখানে এক কাঠবিড়ালীকে অনুসরণ করে চলে যান পর্বতের একদম চূড়ায়। দেখা হয় দাঁড়িওয়ালা কিছু অদ্ভূত লোকদের সাথে। তাদের সাথে থাকা মদ খেয়ে কাবু হয়ে যান রিপ। ব্যস ঘুম থেকে উঠে দেখেন ২০ বছর গায়েব! টাইম ট্রাভেল নিয়ে তখন থেকেই জল্পনা কল্পনায় বেশ বেগ আসতে শুরু করে।

news24bd.tv/আলী