আসামির সঙ্গে ঘুষ বাণিজ্যে ব্যস্ত এসআই, ঘটনাস্থলে হাজির কমিশনার

এসআই মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

আসামির সঙ্গে ঘুষ বাণিজ্যে ব্যস্ত এসআই, ঘটনাস্থলে হাজির কমিশনার

অনলাইন ডেস্ক

সর্বক্ষণ চলেন মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে। বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীকে ব্যবহার করে খুচরা ব্যবসায়ীদের ধরে এনে আদায় করেন বড় অংকের টাকা। এসবই এতদিন ছিল আরএমপির তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাসুদ রানার রোজনামচা।  

তার নামে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ কমিশনার গত মঙ্গলবার বিকালে আকস্মিকভাবে নিজেই হাজির হন ফাঁড়িতে।

ঠিক ওই সময় এসআই মাসুদ রানা এক মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দরদামে ব্যস্ত ছিলেন। হাতেনাতে ধরে পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক তাৎক্ষণিকভাবে এসআই মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন। মাসুদ রানা ফাঁড়ির চার্জ হারিয়ে এখন পুলিশ লাইনে।

আরএমপির তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়িটি নগরীর অভিজাত এলাকা পদ্মা আবাসিকে অবস্থিত।

গত দু’বছর ধরে ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন মাসুদ রানা। এতদিন ফাঁড়িটি ছিল মাদক ব্যবসায়ীদের মহব্বতখানা।

বড় বড় মাদক ব্যবসায়ী নিয়েই কাটত মাসুদ রানার দিনরাত। অভিজাত এলাকা হওয়ায় পদ্মা আবাসিক মাদক কারবারের বড় মোকাম। এলাকায় মাদক বিক্রি ওপেন সিক্রেট। এসআই মাসুদ রানার নিয়োজিত মাদক সম্রাটরাই নিয়ন্ত্রণ করেন কারবার। দিনশেষে নোটের বান্ডিল এসে ঢুকত মাসুদ রানার পকেটে।

আরও পড়ুন:


নেহার ফোন থেকে যে তথ্য পাওয়া গেল!

সাইবার ক্রাইমের ফাঁদে শ্রীলেখা!

নারীসঙ্গের গোপন ভিডিও ফাঁসকারীদের খুঁজছে কারা অধিদপ্তর

বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্ব রক্তের অক্ষরে লেখা: প্রধানমন্ত্রী


অভিযোগে আরও জানা গেছে, মঙ্গলবার সোহেল নামের একজন বড় মাদক ব্যবসায়ীকে হেরোইনসহ জামালপুর এলাকা থেকে আটক করে ফাঁড়িতে নেন মাসুদ রানা। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে ফাঁড়িতে রেখে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দর কষাকষি করছিলেন।

আটক হেরোইন আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির দরদামও করছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আরএমপি কমিশনার নিজেই হাজির হন ফাঁড়িতে। এ সময় তিনি দেখতে পান- আটক মাদক ব্যবসায়ী সোহেল ও তার পরিবারের লোকদের নিয়ে বসে দরদামে ব্যস্ত মাসুদ।

কমিশনার পুরো ঘটনা অবগত হয়ে এসআই মাসুদ রানাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের নির্দেশ দেন। পরে মাদক ব্যবসায়ী সোহেলকে ২৫ গ্রাম হেরোইনসহ মামলা দায়ের করা হয়।

কমিশনারের ফাঁড়ি অভিযানে সঙ্গে থাকা চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মুনীর জানান, এসআই মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থাকা অন্যান্য অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগে আরও জানা গেছে, এসআই মাসুদ রানা ও তার অনুগত কনস্টেবল জামিল প্রতিদিন ধরা-ছাড়ার বাণিজ্য করতেন। কনস্টেবল জামিলের কাছেও রয়েছে একাধিক চোরাই মোটরসাইকেল। মাদক ব্যবসায়ী কাম-সোর্সরা এসব মোটরসাইকেলে দাপিয়ে বেড়ায়।

বড় বড় এসব মাদক ব্যবসায়ী দিয়ে মাসুদ ও জামিল খুচরা কারবারিদের ধরে এনে টাকা আদায় করতেন। মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে ফাঁড়িতে মাসিক আদায় পরিস্থিতি নিয়েও সভা করতেন মাসুদ ও জামিল। এসআই মাসুদ ও কনস্টেবল জামিল তাদের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এদিকে এসআই মাসুদকে বরখাস্ত করা হলেও তার মূল হাতিয়ার কনস্টেবল জামিল থেকে গেছেন ফাঁড়িতে। তবে মাসুদ ও জামিলের চোরাই প্রাইভেটকার ও চোরাই মোটরসাইকেল হেফাজতে রেখে ব্যবহার করাসহ মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

বোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) সোনিয়া পারভীন পুরো বিষয় তদন্ত করছেন। এসি সোনিয়া জানান, তিনি তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন। তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। সূত্র: যুগান্তর

news24bd.tv / কামরুল