রাঙামাটিতে বাংলা ত্রিপিটকের মোড়ক উন্মোচনে পুণ্যার্থীর ঢল

বাংলা ত্রিপিটকের মোড়ক উন্মোচনে পুণ্যার্থীর ঢল

রাঙামাটিতে বাংলা ত্রিপিটকের মোড়ক উন্মোচনে পুণ্যার্থীর ঢল

ফাতেমা জান্নাত মুমু,রাঙামাটি:

বাংলা ভাষার হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ ত্রিপিটক বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হলো। আজ শুক্রবার হয় এই পবিত্র গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন। বাংলা ত্রিপিটকের মোড়ক উন্মোচনে পুণ্যার্থীর ঢল নামে রাঙমাটি রাজবন বিহারে। অনুষ্ঠান ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে রাজবন বিহার এলাকাসহ গোটা রাঙামাটি শহর।

উৎসবে যোগ দিতে রাজবন বিহারে আসে- তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের হাজার হাজার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ। উৎসবের নগরিতে পরিণত হয় পুরো রাজবন বিহার এলাকা। এসময় চারপাশ থেকে ভেসে আসে ভক্তদের সাধু সাধু ধ্বনি। আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন এ সম্প্রদায়ের নর-নারীরা।

 
শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাঙামাটি রাজবন বিহার মাঠে বাংলায় প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ ও সমগ্র ত্রিপিটকের মোড়ক উন্মোচন করেন মহাপরিনির্বাণগত মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান ও রাজবন বিহারের প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির ও চাকমা রানি ইয়ান ইয়ান। পুণ্যার্থী ও ভক্তদের সাধু সাধু ধ্বনিতে কম্পিত হয় পুরো রাজবন বিহার এলাকা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলায় সমগ্র ত্রিপিটক প্রকাশনা কমিটি ও ত্রিপিটক পাবলিশিং সোসাইটি, বাংলাদেশের আহবায়ক ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির, বিধুর মহাস্থবির, কায়নাবংশ স্থবির ও রাঙামাটি রাজবন বিহারের উপাসক-উপাসিকা পরিষদের আহবায়ক গৌতম দেওয়ান, আদিবাসী ফোরামের সভাপতি প্রকৃতরঞ্জন চাকমা, সাবেক পার্বত্য উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিরুপা দেওয়ান প্রমুখ।

ত্রিপিটক পাবলিশিং সোসাইটির আহবায়ক ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির বলেন, বাংলায় ত্রিপিটক অনুবাদের ইতিহাস প্রায় দেড়শ বছরের। বনভান্তের স্বপ্ন ছিল ত্রিপিটক বাংলায় প্রকাশ করার। তিনি ত্রিপিটকের ৫৯খন্ডের মধ্যে ৬টি খন্ড বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন। কিন্তু সম্পন্ন করতে পারেননি। তাই বনভান্তের স্বপ্ন পূরণ করতে ত্রিপিটক পাবলিশিং সোসাইটির ২৩জন অনুবাদক পালিভাষার ত্রিপিটকের ৫৯ খন্ডকে ২৫ খন্ডে বিভাজিত করে সম্পূর্ণ বাংলায় প্রকাশ করেন। এ কমিটির উদ্যোগে ২০১২ সাল থেকে শুরু হয় বাংলায় ত্রিপিটক অনুবাদ করার কাজ। আর শেষ করা হয় ২০১৬ সালে। প্রথম পর্যায়ে বাংলায় ৫৯ গ্রন্তকে ২৫টি খণ্ডে প্রকাশ করা হয়। ছাপানো হয় এক হাজার গ্রন্থ। প্রতিটি গ্রন্থের মূল্য নিধারণ করা হয় মাত্র ২হাজার টাকা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নার-নারীরা সহজে এ বাংলা ত্রিপিটক পড়তে পারবে এবং শিক্ষা লাভ করতে পারবে।
 

সম্পর্কিত খবর