আত্মবিশ্বাসী টাইগারদের লজ্জার সাগরে ডুবালো ক্যারিবীয়রা

আত্মবিশ্বাসী টাইগারদের লজ্জার সাগরে ডুবালো ক্যারিবীয়রা

অনলাইন ডেস্ক

৩৯৫ রানের লক্ষ্যটাও হালে পানি পেল না। শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশের। পরাজয়ের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো টিম টাইগারসকে। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে সফরকারী উইন্ডিজ।

আঠারো বসন্ত আগে (২০০৩ সালের মে) অ্যান্টিগায় এমনই একটা দিন উপহার দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টের সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয় ছুঁয়েছিল। অজিদের বিপক্ষে সেটা ছিল ব্রায়ান লারা, শিবনারায়ন চন্দ্রপাল, রামনরেশ সারওয়ানদের দল।

চট্টগ্রামে তেমনই একদিন ফিরিয়ে আনল অনভিজ্ঞ ওয়েস্ট ইন্ডিজ; অভিষিক্ত কাইল মায়র্স। তার ডাবল সেঞ্চুরির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে 'টাইগার ইলেভেন'।

প্রথম ইনিংসে মিরাজের সেঞ্চুরিতে ৪৩০ রান। পরে মিরাজ-তাইজুল ঘূর্ণিজাদুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৫৯ রানে গুটিয়ে যাওয়া। এরপর ২২৩ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৩৯৫ রানের লিড ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ।

তাইজুল ইসলাম বলে গিয়েছিলেন, জিততে ২৫০ রানই যথেষ্ট। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টার্গেট পেলো ৩৯৫ রানের। অথচ এই লক্ষ্যটাও পেরিয়ে গেলো ক্যারিবিয়ানরা! 

জয়ের স্বপ্ন নিয়ে পঞ্চম দিন মাঠে নামে মুমিনুল বাহিনী। কারণ চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে এতো রান তাড়া করে জেতেনি কেউই।   এ মাঠে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ছিল নিউজিল্যান্ডের। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ৩১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৩ উইকেটে জিতেছিল কিউইরা।  

অর্থাৎ উইন্ডিজ জিতলে নতুন ইতিহাস গড়বে। আর সেই ইতিহাসই গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

আগের দিন ১১০ রান করে চাঙা মনোভাবেই ইনিংস শুরু করেন কাইল মায়ার্স আর এনক্রুমাহ বোনার।

আর এ দুই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানই হতাশার সাগরে ডোবাল বাংলাদেশকে। টেস্ট ইতিহাসে এটি দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি গড়লেন, যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ।  

৪৪২ বলে ২১৬ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়েছেন মায়ার্স ও বোনার। তবে এতো বড় জুটি গড়ে দিতে অবদান রেখেছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররও।   দুই-দুবার জীবন পেয়েছেন মায়ার্স। ৪৯ রানে স্লিপে দেওয়া তার ক্যাচ মিস করেন শান্ত। এরপর এলবিডব্লিউতে আউট হলেও রিভিউ নেননি মুমিনুল।   

একইরকম ভুল করা হয়েছে বোনারের বেলায়। তার বেলায়ও রিভিউ নেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। পরে রিপ্লেতে দেখা গেছে, লেগস্ট্যাম্প উপড়ে ফেলত বলটি।

আর সেই বোনার করেছেন ৮৬ রান আর মায়ার্স খেললেন অবিস্মরণীয় ২১০ রানের ইনিংস।   
  
চা-বিরতির পর কিছুটা হলেও খেলায় ফিরেছিল বাংলাদেশ।   প্রথম ওভারেই বোনারকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল।   কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু এনে দেন। ২৪৫ বলে ৮৬ রানের দারুণ এক ইনিংস সমাপ্ত হয় অভিষিক্ত বোনার।  

এর পাঁচ ওভার পর অফ-স্পিনার নাঈম হাসান বোল্ড করেন জার্মেইন ব্লাকউডকে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। কারণ ম্যাচজয়ী কাইল মায়ার্স অপরাজিত ছিলেন অপরপ্রান্তে।  

এরপর রাহকিম কর্নওয়ালের সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যান মায়ার্স। ৩০২ বলে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান মায়ার্স। এর আগে ৫৯ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন জসুয়া। মেয়ার্সের সঙ্গে জশুয়া ১৩০ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন। তাইজুলের বলে জসুয়া যখন আউট হন তখন জয় থেকে ৩ রান দূরে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর কেমার রোচকে শূন্য রানে ফেরান মিরাজ। কিন্তু তখন উইকেট তুলে নেওয়ার আনন্দ সব মাটি।  

news24bd.tv নাজিম