যাঁরা ‘ইসলামী শাসন’ কায়েম করে ‘আল্লাহর আইন’ দিয়ে দেশ চালাতে হবে বলে দাবি করেন, মানুষের লিখিত ও নির্বাচিত আইনসভায় প্রণীত আইনের প্রয়োজন নেই। কারণ কুরান ও সুন্নাহ অনুসরণ করে চললে তাতে মানবজীবনের সব সমাধান আছে এবং ইসলাম নারীর সর্বোচ্চ মর্যাদা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে প্রভৃতি বলে আসছেন।
তাঁদেরকে চিন্তায় ফেলে দিতে পারে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমানের বক্তব্য এবং সে-দেশের বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের সিদ্ধান্ত। কারণ আল্লাহর রাসুল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মস্থান বর্তমান সৌদি আরবে লিখিত সংবিধান নেই।
বাদশাহ ঘোষিত অল্প কিছু বিধিবিধান ছাড়া লিখিত আইন নেই; শরিয়া আইনে দেশ শাসন ও বিচারকার্য চলে বলে দাবি করা হয় (যদিও বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র কিভাবে ইসলাম ও শরিয়াসম্মত তা কখনও ব্যাখ্যা করা হয় না)। যুবরাজ সালমান বলছেন, লিখিত আইনি কাঠামো না থাকায় বিভিন্ন বিচারকের আদেশে অসামঞ্জস্য থাকে, যা অনেক ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য বেদনাদায়ক হয়েছে, বিশেষত নারীদের জন্য। তিনি বলেছেন, নতুন আইনগুলো আন্তর্জাতিক বিচারিক মান ও রীতি অনুসরণ করবে এমনভাবে যেন শরিয়ার নীতির সঙ্গে বিরোধ না হয়।
আরও পড়ুন:
জিয়াউর রহমান এবং আত্মস্বীকৃত ৪ খুনির ‘মুক্তিযোদ্ধা খেতাব’ বাতিলের সিদ্ধান্ত
সম্মানবোধের শিক্ষাটা আসে পরিবার থেকে: সামিয়া রহমান
শ্রমিক নেয়াসহ যে বিষয় নিয়ে আলোচনা হল মালদ্বীপের সাথে
যে তাসবিহ পাঠ করলে অধিক নেকি লাভ ও গোনাহ মাফ হয়
বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিমপ্রধান দেশে মানুষের লিখিত সংবিধান ও আইন আছে।
এখনও বাংলাদেশে ওই শ্রেণীর লোক তাই-ই মনে করে এবং যথেচ্ছ বহুবিবাহ (অনধিক চার) ও বাল্যবিবাহ চালু করতে চায়। কিন্তু ১৯৬১-র আইন পাকিস্তান ও বাংলাদেশে টিকে গেছে। ওই আইনটি হয়েছিল পাকিস্তানে সামরিক শাসনামলে। আর বাংলাদেশী সামরিক শাসনামলে ১৯৮৪ সালে 'সিডও' নামক আন্তর্জাতিক কনভেনশন (নারীর প্রতি সব ধরণের বৈষম্য বিলোপের উদ্দেশ্যে) ৪টি ধারায় আপত্তি রেখে স্বাক্ষর করা হয়। তার দু'টিতে আপত্তি এখনও বহাল আছে।
মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু: সিনিয়র সাংবাদিক
news24bd.tv আহমেদ