চতুর্থ ধাপে ১৪ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচন হবে। শেষ সময়ের প্রচার প্রচারণায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারা এক গাদা উন্নয়নের স্বপ্ন দিন-রাত পাড়ায় মহল্লায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থণা করছেন। পুরো শহর ছেয়ে গেছে সাদা কালো পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার, লিফলেট ও স্টিকারে।
বিকেল থেকে শুরু হয় প্রচার-প্রচারণা এবং মাইকিং। চলছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের উঠান বৈঠকও। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারী অপরাধের অভিযোগ সহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা।এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ক’জন কিশোর গ্যাং লিডার।
আরও পড়ুন:
ঝিনাইদহে নিহতদের ছয়জন নারী, তিনজন পুরুষ
সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে বসুন্ধরা গ্রুপের শোক
মোশাররফ করিম ‘বাংলাদেশের শাহরুখ খান’: আনন্দবাজার
গাড়িতে উঠিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ
এফ-৩৫ ও এস-৪০০ একসঙ্গে রাখা যাবে না, তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্র
এদিকে নির্বাচন নিয়ে এরই মধ্যে দু’একটি হামলার ঘটনায় গুরুত্বর আহতের ঘটনাও ঘটেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে দু’নৌকা সমর্থকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। প্রচারণায় বাঁধা প্রদানের অভিযোগে রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে এক গাদা। তবে ফুরফুরে মেজাজে প্রচারনা চালাচ্ছেন বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও ইসলামী আন্দোলন’র হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী। তাদের প্রচারণায় কোনো বাঁধা নেই।
স্থানীয়রা বলছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জগ প্রতীকের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী। একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুধু বড় বড় ভাষণ, উন্নয়নের ফুলঝুড়ি নয়, নাগরিকের সেবা নিশ্চিতে পছন্দের প্রার্থীকে এবার মেয়র হিসেবে দেখতে চান তারা। একটি পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে তাকেই জয়যুক্ত করতে চান তারা। যিনি বর্ষায় জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, মশার উপদ্রব লাঘবে সহায়ক হবেন। ড্রেনেজ সিষ্টেমের উন্নয়ন ঘটিয়ে শহরকে রাখবেন ময়লা আবর্জনা মুক্ত। শহরে থাকবে নিরবিচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ। জনজট মুক্ত সড়ক হবে নাগরিকের পায়ে হাঁটা চলার পথ। কলাপাড়া পৌরসভার ৪র্থ ধাপের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। কাউন্সিলর পদে মোট ৪৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে পুরুষ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের পৌর সভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল চন্দ্র হাওলাদার। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র হাজী হুমায়ুন সিকদার।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কলাপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সদ্য বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র হাত পাখা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন মো. সেলিম মিয়া। কাউন্সিলর পদে বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই রয়েছে একাধিক প্রার্থী। পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বিন্দ্বিতা করছেন দু’সহোদর। মো. কালাম সরদার ও বর্তমান কাউন্সিলর মো. আল-আমিন সরদার। অপর দুই সহোদর মো. জাকি হোসেন জুকু ৩নং ওয়ার্ড হতে ও তার ছোট ভাই মো. খালিদ খান ৪নং ওয়ার্ড হতে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। শহরে তাদের নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। গত দশ বছরে রহস্যজনকভাবে কোটিপতি বনে গেছেন তারা। একাধিক ফৌজদারী অপরাধের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
কলাপাড়া নির্বাচন অফিসার আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে এখন উৎসবের আমেজ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা। তবে নির্বাচন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রচারণায় বাঁধা প্রদানের কটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেগুলো তদন্তের জন্য থানা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আবদুর রশিদ আরও জানান, কলাপাড়ায় এই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠানের জন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। আচরণবিধি লংঘন রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে। পৌরসভায় মোট ১২হাজার ৮৯১ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে মহিলা ভোটার রয়েছে ৬ হাজার ৫৫৭ জন ও পুরুষ ভোটার রয়েছে ৬ হাজার ৩৩৪ জন।
news24bd.tv তৌহিদ