প্রাণকে বাঁচাও

প্রাণকে বাঁচাও

Other

পিএইচডি করার সময় বহুদিন ল‍্যাব থেকে বেরিয়েছি রাত দশটা-এগারোটায়। স্টকহোমে উইন্টারের সময় এমনিতেই খুব ছোট দিন। তিনটা-চারটায় সন্ধ‍্যা হয়ে যেতো। দিনের পর দিন সূর্য উঠতো না।

সূর্যের আলো চোখে না পড়লে মানুষ এমনিতেই বিষন্নতায় ভুগে। ভয়াবহ বিষন্নতা! 

স্টকহোম ইউনিভার্সিটিতে থাকার সময় এই শীতের সময়টা পাড়ি দেয়া অনেক কঠিন ছিলো।  

আমার সুপারভাইজর ভাগ‍্য খুবই ভালো। পিএইচডি এবং পোস্টডক সুপারভাইজর দুজনই ছিলেন অসাধারণ।

সময় নিয়ে কোন চাপাচাপি ছিলো না। আমি এমনিতেই কাজপ্রিয়। গত দশবছর ধরে গবেষণাটা করেছি নিজের আনন্দে, নিজে চাপ নিয়ে। আমার উপর সুপারভাইজরদের কোন চাপ ছিলো না। তবুও ক্লান্তি বহুবার এমনভাবে গ্রাস করতো, মনে হতো হারিয়ে যাচ্ছি কোথাও। প্রকট বিষন্নতায় কখনো কখনো মুষড়ে পড়তাম।  


আন্ডারওয়ার্ল্ডে স্পর্শিয়া!

নগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে তরুণীর দুই বিয়ে ভাঙ্গলেন ভণ্ড প্রেমিক

আন্দোলনের ভিডিও করায় দুই নারী সাংবাদিককে কারাদণ্ড

সুইমিং পুলে সৃজিত-মিথিলার ছবি ভাইরাল


বাংলাদেশের অসংখ‍্য ছেলে-মেয়ে এখন বিদেশে যায়। পড়াশুনা করে। গবেষণা করে। গবেষণা একটা ভয়াবহ মানসিক চাপ। এক্সপেরিমেন্টাল সাইন্স হলে তো আরো চাপ! এক্সপেরিমেন্ট করা, এনালাইসিস, প্রেজেন্টেশন, টিচিং, পাবলিকেশন ইত‍্যাদি বহুমুখী চাপে একটা স্টুডেন্টের প্রাণ যায় যায় দশা হয়। সেটার সাথে যুক্ত হয় আবহাওয়ার পরিবর্তনের সমস‍্যা (SAD)। হোম-সিকনেস। পারিবারিক সমস‍্যা। অনেকের আবার সুপারভাইজদের (PI) সাথে সমস‍্যা থাকে। অনেকে কাজটাকে পছ্ন্দ করতে পারে না। কাজের সাথে, ল‍্যাবের সাথে এডজাস্ট করতে পারে না। —এমন বহুমুখী চাপে, বহু স্টুডেন্ট অসম্ভব বিষন্ন হয়ে পড়ে। সেসব বিষন্নতা হয়তো কারো সাথে শেয়ারও করতে পারে না। দেশ থেকে পরিবার-পরিজন বা বন্ধুরা হয়তো সেসব স্টুডেন্টদের মুখে হাসিটুকু দেখে কিন্তু ভেতরের নীল বিষন্নতাটুকু বুঝে না।  

আমি এখন অনেক স্টুডেন্টদের কাছ থেকে সুপারভাইজদের নিয়ে অভিযোগ শুনি। সম্প্রতি জাপান থেকে বেশ কয়েকজন যোগাযোগ করেছে। জাপানি সংস্কৃতিতে একজন স্টুডেন্টকে সারাদিন ল‍্যাবে পড়ে থাকতে হয়। কি জানলো কি শিখলো সেটা বড়ো বিষয় না। সেখানের স্টুডেন্টরা হলো “ল‍্যাবরেটরি রোবট”। অনেকেই সেরকম পরিবেশের সাথে ম‍্যাচ করতে পারে না। গবেষণার সংস্কৃতিও কিন্তু অঞ্চল ভিত্তিক বেশ তফাৎ হয়।  

স্টুডেন্টদের উচিত পিএইচডি-পোস্টডক শুরুর আগে সুপারভাইজর/ল‍্যাব সম্পর্কে অনেক বেশি তথ‍্য নেয়ার চেষ্টা করা। যদি কেউ বুঝতে পারে, তার সুপারভাইজর খারাপ, তাহলে শুরুতেই একটা সিদ্ধান্ত নেয়া ভালো। অনেক ইউনিভার্সিটিতে কাউন্সিলিং করার সুযোগ থাকে। সেসকল সুযোগ নেয়া উচিত। কাজের ক্ষেত্র ভালো না লাগলে, সময় নিয়ে নিজের পছন্দমত এরিয়াতে কাজ করার অপেক্ষা করতে পারে। যেসকল ফ‍্যামিলির ছেলে-মেয়েরা বিদেশে কাজ করছে, সেসব ফ‍্যামিলির সদস‍্যদের উচিত খুবই সাপোর্টিভ হওয়া।  

আমরা মানুষ হিসেবে প্রত‍্যেকেই আলাদা। ইউনিক। কেউ নিজেকে বেশি পুশ করতে পারে। কেউ হয়তো খুব বেশি পারে না। কেউ বিষন্নতাকে সামাল দিতে পারে। কেউ পারে না। কেউ অনেক চাপ নিতে পারে। কেউ পারে না। সুতরাং আমাদের জীবন ও জীবনের আনন্দকে প্রাধান‍্য দিয়েই সেভাবে নিজেকে সেট করতে হবে। জীবন থাকলে সুযোগ আসে। জীবন থাকলে সম্ভাবনারা ধরা দিবেই।   Your life is the most valuable asset and nourish it! 


রউফুল আলম, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র

news24bd.tv/আলী