কাজ করলে একসঙ্গে করতে হবে এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য

কাজ করলে একসঙ্গে করতে হবে এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য

Other

১. চীনে উইঘুর মুসলমানদের উপর চীন সরকারের নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হাউজ অব কমন্সে প্রস্তাব তুলেছিলো কানাডার কনজারভেটিভ পার্টি। সংসদের প্রধান বিরোধী দলের তোলা প্রস্তাবটির ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান আগেই জানিয়ে দিয়েছিলো ক্ষমতাসীন  লিবারেল পার্টি। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পুরো ক্যাবিনেট এই প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে পক্ষে বা বিপক্ষে থাকবে না- সেটি ঘোষণা দেয়াই ছিলো।

শেষ পর্যন্ত হাউজ অব কমন্সে ভোটাভুটিতে সর্বসম্মতি ক্রমেই প্রস্তাবটি পাশ হয়।

প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা ভোট দানে বিরত থাকলেও লিবারেল পার্টির প্রায় সব এমপিই ভোটে অংশ নেন এবং কনজারভেটিভ পার্টির প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। ভোটের হিসেবে ২৬৬ টি ভোট পরে প্রস্তাবের পক্ষে, বিপক্ষে একটি ভোটও পরেনি।

২.জাস্টিন ট্রুডো এবং তার মন্ত্রীরা কেন এই প্রস্তাবের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিলেন না? জাস্টিন ট্রুডো ব্যাখ্য দিয়েছেন, তিনি অন্যান্য দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে এ ব্যাপারে কাজ করতে চান। গ্রহণযোগ্য এবং যথাযথ আন্তর্জাতিক সংস্থার তদন্তের পরই তিনি এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেয়ার পক্ষে।

জাস্টিন ট্রুডোর কথায় যুক্তি আছে অবশ্যই। রাষ্ট্র যখন অন্য একটি দেশের ব্যাপারে কোনো অবস্থান নেয়- তখন সেটি আন্তর্জাতিক ফোরামের যাচাই করা তথ্যের ভিত্তিতে হওয়াই সমীচীন। নিদেনপক্ষে নিজেদের উদ্যোগে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগও হতে পারে। কনজারভেটিভ পার্টি প্রস্তাবটি এনেছে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য এবং মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে।  

৩. প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে লিবারেল পার্টির এমপিরা এই ভোটে অংশ নিয়েছেন এবং বিরোধীদলের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পার্লামেন্টারি সেক্রেটারিও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এটিই হচ্ছে কানাডীয়ান গণতন্ত্রের সংস্কৃতি। সংসদীয় কার্যক্রমে এমপিরা নিজেদের মতো করে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং তার প্রয়োগ ঘটাতে পারেন।

আরও পড়ুন:


আচরণগত অর্থনীতি: উভয়সঙ্কটের নৈতিক সমস্যা

ঢাকার সাত কলেজের পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ

ভারত থেকে এলো আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা

৬ ঘণ্টা পর খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক


৪. কানাডার কনজারভেটিভ পার্টি এবং কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ও টুল উইঘুর মুসলমানদের প্রতি আন্তরিকতার কারণে বা মানবাধিকারের চেতনা থেকে এই প্রস্তাবটি এনেছেন- রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তা মনে করছেন না। কনজারভেটিভের নতুন এই  নেতা এরিন ও টুল শুরু থেকেই প্রবল চীন বিরোধী এবং ছোটোখাটো নানা ইস্যুতেই তিনি প্রবলভাবে চীনের বিরোধীতা করছেন।

কানাডার সাথে চীনের সম্পর্কে যে টানাপড়েন চলছে, সেটিকে আরো উসকে দেয়ার একটা চেষ্টা তার মধ্যে আছে। চীনের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পরলে ট্রুডোর লিবারেল চাপে পরবে- এমন একটি চিন্তা তার মনে কাজ করে থাকতে পারে বলেও অনেকে মনে করেন। কানাডার মিডিয়া অবশ্য অনেক আগেই তাকে ‘কানাডার ডোনাল্ড ট্রাম্প’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ

news24bd.tv আহমেদ

সম্পর্কিত খবর