প্রতিদিন কুরআন পাঠে মিলবে মুক্তি

প্রতিদিন কুরআন পাঠে মিলবে মুক্তি

অনলাইন ডেস্ক

আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘অবশ্যই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও সুস্পষ্ট গ্রন্থ এসেছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথ দেখান, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে এবং তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করেন। আর তাদেরকে সরল পথের দিকে হিদায়াত দেন’। সূরা মায়িদাহ ১৫,১৬

প্রতিদিন কুরআন পাঠের গুরুত্ব অনেক বেশি।

এই বিষয়ে আলোচনা করতে হলে প্রথমেই আমাদের কে জানতে হবে কুরআন কি? কুরআন আসমানি গ্রন্থ। যা হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর সুদীর্ঘ ২৩ বছরে জিবরিল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে নাজিল হয়েছিল।

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন-

- أَقِمِ الصَّلاَةَ لِدُلُوكِ الشَّمْسِ إِلَى غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْآنَ الْفَجْرِ إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا

সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করুন এবং ফজরের কোরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কোরআন পাঠ মুখোমুখি হয়।

' (সুরা বনি-ইসরাঈল : আয়াত ৭৮)

কুরআন পড়লে যা হবে – 

১. কুরআন মানবজাতির জন্য হেদায়াত : আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবন কীভাবে পরিচালিত হবে, তার প্রতিটি বিষয় কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন : ‘আমি তোমার নিকট কিতাবটি নাজিল করেছি। এটি এমন যে তা সবকিছুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, আর এটা হেদায়াত, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ স্বরূপ’। সূরা আননাহল : ৮৯

২. কুরআন তিলাওয়াত ঈমান বৃদ্ধি করে : কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বান্দার ঈমান বৃব্ধি পায়। এ বিষয়ে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন : ‘মুমিন তো তারা, যাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং যারা তাদের রবের উপরই ভরসা করে’। সূরা আনফাল : ২


অভাব দুর হবে, বাড়বে ধন-সম্পদ যে আমলে

সূরা কাহাফ তিলাওয়াতে রয়েছে বিশেষ ফজিলত

করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণে বাধা নেই ইসলামে

নামাজে মনোযোগী হওয়ার কৌশল


৩. কুরআন মানুষের অন্তরকে প্রশান্তি দেয় : মানব জীবনে অর্থ বা অন্যান্য কারণে জাগতিক তৃপ্তি আসলেও প্রকৃত তৃপ্তি ও শান্তি কুরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘যারা ঈমান আনে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়’। সূরা আর-রা‘দ : ২৮

৪. কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে : কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে। এটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কারণ, কুরআন কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে’। মুসলিম : ১৯১০

৫. কুরআন হচ্ছে সকল জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস: কুরআন যে নির্দেশনা দিয়েছে তা নির্ভুলভাবে প্রমাণিত। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘ইয়া-সীন। বিজ্ঞানময় কুরআনের শপথ’। সূরা ইয়াছিন : ১-২

৬. জান্নাতে যাওয়ার জন্য কুরআন : প্রত্যেক মুমিনের সর্বোচ্চ কামনা হলো জান্নাতে যাওয়া। তাই জান্নাতে যাওয়ার জন্য কুরআন পড়তে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘সিয়াম ও কুরআন কিয়ামাতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ সিয়াম পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি।

তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে’। মুসনাদে আহমাদ: ৬৬২৬

কুরআনের গুরুত্ব তুলে ধরে মহান আল্লাহ তাআলা হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে বলেন-

إِنَّا سَنُلْقِي عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيلًا

'আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। ' (সুরা মুযাম্মিল : আয়াত ৫)

এ আয়াতে 'গুরুত্বপূর্ণ বাণী' বলতে মহান আল্লাহ বুঝাতে চাচ্ছেন- ইহা (কুরআন) এতই গুরুত্ববহ যে দুনিয়ার কোনো শক্তিই এর একটি শব্দ বা অক্ষরের সংশোধন, পরিবর্তন বা স্থানান্তরের ক্ষমতা রাখে না। আর তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রতিদিন নিয়মিত কুরআন অধ্যয়ন, তেলাওয়াত, অনুশীলন ও যথাযথ মূল্যয়ন করার তাওফিক দান করুন। কুরআনের সমাজ বিনির্মাণে তাওফিক দান করুন। আমিন।

news24bd.tv/আলী