সৃজনশীলদের সাফল্যের সূত্র

সৃজনশীলদের সাফল্যের সূত্র

অনলাইন ডেস্ক

সৃজনশীল কাজে সফলতা সবার কাছে ধরা দেয় না। এজন্য প্রয়োজন হয় বেশ কিছু গুণের। সৃজনশীলরা যখন এসব গুণ নিয়ে চর্চা করে তখন সাফল্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। সৃজনশীলতা নিয়ে আমাদের মধ্যে নানা ধরনের ভুল ধারণা আছে।

কেউ ভাবেন, সৃজনশীলেরা বুঝি একদম শূন্য থেকে কোনো কিছু তৈরি করেন। আবার কেউ মনে করেন, সৃজনশীল হতে গেলে বুঝি সব জেনে-বুঝে অনেক জ্ঞান অর্জন করে তবেই শুরু করতে হয়।

লেখক, কবি, কপিরাইটার ও ওয়েব ডিজাইনার অস্টিন ক্লেয়নের লেখা বিখ্যাত বই—স্টিল লাইক অ্যান আর্টিস্ট পড়লে বিষয়গুলো আপনার কাছে অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে। বইটিতে লেখক বেশ সৃজনশীলভাবে সৃজনশীলতার কথা বলেছেন।

তাঁর পরামর্শ বা ভাবনাগুলো পড়ে আপনার মনে হতে পারে—ইশ, আগে যদি জানতাম!

পৃথিবীতে কোনো কিছুই একদম শূন্য থেকে আসে না। প্রতিটি নতুন ধারণা বা আইডিয়াই আগের এক বা একাধিক আইডিয়ার সংমিশ্রণ। শিল্পী তাঁর চারপাশের পরিবেশ ও সমাজ থেকে ধারণা নেন। তবে তিনি যে চারপাশের সবকিছু নিয়ে নেন, ব্যাপারটা তেমন নয়। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন, সেরাটা বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং নিজের মতো করে উপস্থাপন করেন।  

তাই যে কান বিষয় খুব ভাল করে পড়া এবং সব সময় সঙ্গে একটি নোটবুক রাখা। যেখানে টুকে রাখা যায় মাথায় আসা মাত্র। একজন শিল্পী অন্যদের চেয়ে বেশ সৃজনশীলতা নিয়ে কাজ করেন। তিনি যা করেন, তা কিন্তু প্লেজারিজম বা অন্যের কাজ নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া নয়।


ঋণ থেকে মুক্তির দু’টি দোয়া

মেসি ম্যাজিকে সহজেই জিতল বার্সা

দোয়া কবুলের উত্তম সময়

রোনালদোর গোলেও হোঁচট খেল জুভেন্টাস


পৃথিবীর এই রঙ্গমঞ্চে আমরা সবাই অভিনেতা। যতক্ষণ না আপনি আপনার ক্ষেত্রে সফল হচ্ছেন, ততক্ষণ অভিনয় করা যেতেই পারে। ধরা যাক, আপনি একজন লেখক হতে চান। তাহলে বসে পড়ুন এক কাপ চা আর কাগজ-কলম নিয়ে! অনুশীলনের ক্ষেত্রে অন্যের কাজ কপি করা একটি ভালো উপায়।  

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি যদি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হতে চান, তবে আপনার কাজ হবে বড় বড় ডিজাইনারদের কাজ দেখে ঠিক সে রকমটা আবার তৈরি করা। আশা করা যায়, এমনটা করতে করতেই আপনি একসময় নিজের স্টাইল বা ধরন তৈরি করে ফেলতে পারবেন।

আপনি যে জিনিসটি চান, সেটিই তৈরি করুন। এমন ছবি আঁকুন, যা আপনি নিজে দেখতে ভালোবাসেন। এমন বই লিখুন, যা আপনি পড়তে চান। এমন পণ্য তৈরি করুন, যা আপনি ব্যবহার করতে চান। মোট কথা, আপনি যে জিনিসটি তৈরি অবস্থায় দেখতে চান, সেটি নিয়ে কাজ করুন।

অস্টিন ক্লেয়নের পরামর্শ—এমন কিছু করো, যা তোমাকে সত্যিকারের কিছু তৈরি করার স্বাদ দেয়। হাতে-কলমে আইডিয়া নিয়ে কাজ করে তারপর সেই আইডিয়াকে কম্পিউটারে তুলে ফেলা যেতে পারে। লেখক নিজের অফিসকে দুই ভাগে ভাগ করেন: অ্যানালগ ও ডিজিটাল। অ্যানালগ অংশে কাজ হয় শুধুই কাগজ-কলমে। আর ডিজিটাল অংশে তিনি কাজ করেন কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল যন্ত্র নিয়ে।

লেখক মনে করেন, আপনি একসঙ্গে একাধিক প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে পারেন। এর ফলে যখন একটা প্রকল্পে আটকে যাবেন, কাজ এগোতে চাইবে না, তখন চাইলে অন্য একটি প্রকল্পে মন দিতে পারেন। আপনার একই সঙ্গে দু-তিনটা শখ বা প্যাশনের জায়গা থাকতেই পারে; একটাই মাত্র প্যাশন থাকতে হবে এমন চিন্তায় আটকে যাওয়া ঠিক হবে না।

শিল্প নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন। কোনো ক্ষেত্রে পা রাখা মাত্রই আপনি খ্যাতিমান হয়ে যাবেন না। কিন্তু এই খ্যাতি না থাকারও বেশ কিছু সুবিধা আছে। সেগুলোকে কাজে লাগান। আপনি কারও আতশি কাচের নিচে নেই। ফলে কে কী ভাবল, তা নিয়ে আপনাকে খুব বেশি মাথা ঘামাতে হচ্ছে না। নিয়মিত ভালো কাজ করে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আর এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে এই ‘শেয়ার’ করা তো বেশ সহজ হয়ে গেছে।

যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির কারণে দূরত্ব এখন আর কোনো বাধা নয়। ঘর ছেড়ে বের হোন, ভ্রমণ করুন। ভ্রমণের ফলে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে মেশা যায়। নতুন পরিস্থিতি আমাদের মস্তিষ্ককে স্বস্তি (কমফোর্ট জোন) থেকে বের করে আনে। ফলে আমরা নতুন করে পৃথিবীকে দেখতে শিখি।

সৃজনশীল বন্ধু তৈরি করুন। তাঁদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসরণ করুন। দেখুন তাঁরা কী নিয়ে কাজ করছেন; তাঁদের কাজ থেকে শেখার চেষ্টা করুন, বোঝার চেষ্টা করুন তাঁরা কী নিয়ে কথা বলছেন। প্রয়োজন প্রচুর কৌতূহল, ভালো স্বাস্থ্য ও উদারতা। আপনার কাজ সম্পর্কিত ইতিবাচক আলোচনাগুলো সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। যখন ভালো লাগবে না, তখন এসব দেখলে আপনি কাজের অনুপ্রেরণা পাবেন।

সৃজনশীল ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ ব্লক বা সৃজনশীল কিছু তৈরি না করতে পারার সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হতে পারে সীমিত আকারে কাজটি চালিয়ে যাওয়া।

মোটকথা আপনি কোন বিষয়ে যদি গভীর মনযোগ দেন এবং যত্নসহকারে কাজটি তেকে কিছু সৃষ্টিশীল করতে চান তাহলে অবশ্যই পারবেন। একটু সময় লাগবে এই যা। তবে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে পারলে সাফল্য নিশ্চিত। পৃথিবীতে যারাই সাফল্য পেয়েছে, দেখা গেছে তারা সবাই খুবই ধৈর্যশীল। সাফল্য না আসা পর্যন্ত চেষ্টা করে যাওয়া।   

news24bd.tv/আয়শা