কোরআনের অসংখ্য আয়াতে ও হাদিসে কেয়ামত ও কেয়ামতের নিদর্শনবলী বর্ণিত হয়েছে। এই নিদর্শনাবলী পাঠে রয়েছে বহুবীধ কল্যান। প্রথমত, হাদিসে বর্ণিত ভবিষ্যৎবাণীগুলো সত্য হতে দেখলে ঈমান দৃঢ় হয়, এবং মন আমলের প্রতি উৎসাহী হয়। দ্বিতীয়ত, ফিতনাকে চেনা সহজ হয় এবং আগত নতুন ফিতনার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
কেয়ামতের আলামতগুলো দু’প্রকার। ক্ষুদ্রতম আলামত ও বৃহত্তম আলামত। ক্ষুদ্রতম আলামতের সংখ্যা অসংখ্য। এর মধ্যে কিছু আলামত ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে, যেমন- রাসূল (সাঃ)- এর আবির্ভাব, চন্দ্র বিদারণ, বিভিন্ন ভণ্ড নবী দাবীদারদের আগমন ইত্যাদি।
আল্লাহ তাআলা বান্দার সতর্কতা জন্য দেড় হাজার বছর আছে কুরআনুল কারিমে সব বলে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘একমাত্র আপনার মহিমায় এবং মহানুভব পালনকর্তার সত্তা ছাড়া পৃথিবীর সবকিছুই ধ্বংসশীল। ’ (সুরা আর-রাহমান : আয়াত ২৬-২৭)
তাছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া হাদিসে পাকে কেয়ামতের আগে সংঘটিত অনেকগুলো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। যার অনেক কিছুই সমাজে দেখা যাচ্ছে। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে যে, কেয়ামত খুবই সন্নিকটে। মানুষ চরম বাড়াবাড়িতে লিপ্ত। তাই কেয়ামত সম্পর্কে সজাগ থাকতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত আলামতগুলো তুলে ধরা হলো।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
*মানুষ যখন অবৈধভাবে সম্পদ উপার্জনে প্রতিযোগিতা করবে;
*গচ্ছিত সম্পদের তথা আমানতে খেয়ানত করবে;
*জাকাত দেয়াকে জরিমানা মনে করবে;
*ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিয়ে (জাগতিক) বিদ্যা অর্জন করবে;
*পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে;
*মায়ের সঙ্গে (সন্তান) খারাপ আচরণ করবে;
*বাবাকে বাদ দিয়ে (সন্তান তার) বন্ধুকে আপন করে নেবে;
*মসজিদে শোরগোল (বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি) করবে;
*জাতির দূর্বল ব্যক্তি সমাজের নেতৃত্ব দেবে;
*নিকৃষ্ট ব্যক্তিরা জনপ্রতিনিধি হবে;
*খারাপ কাজে সুনাম-সুখ্যাতি অর্জন করবে এবং এ খারাপ কাজের ভয়ে ঐ ব্যক্তিকে সম্মান করা হবে;
অভাব দুর হবে, বাড়বে ধন-সম্পদ যে আমলে
সূরা কাহাফ তিলাওয়াতে রয়েছে বিশেষ ফজিলত
করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণে বাধা নেই ইসলামে
*বাদ্যযন্ত্র ও নারী শিল্পীর অবাধ বিচরণ বেড়ে যাবে;
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, অবশ্যই আমার উম্মতের একদল মদ্যপানে লিপ্ত হবে। (ব্যবসার সুবিধার্থে) মদের নামকে তারা পরিবর্তন করে দেবে। তাদের মাথার উপর গান-বাজনা এবং নর্তকীদের নৃত্যানুষ্ঠান শোভা পাবে। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেবেন। কতিপয়কে বানর-শুকরে পরিবর্তন করে দেবেন।
*বংশের শেষ প্রজন্মের লোকজন আগের প্রজন্মকে অভিশাপ দেবে।
সে সময়ে তীব্র বাতাস প্রবাহিত হবে, যার ফলশ্রুতিতে একটি ভূমিকম্প ভূমিকে তলিয়ে দেবে। (তিরমিজি)
যখনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। সে সময় কী ঘটবে? কুরআনের কারিমে তাও বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের আগে ভূমিকে এমনভাবে প্রকম্পিত করবেন যে, জমিন তার গর্ভে ধারণ করা সব বস্তুকে বের করে দেবেন। কুরআনুল কারিমে এ কথা এভাবে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন-
‘যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে। যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে। ' (সুরা যিলযাল : আয়াত ১-২)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগে নিজের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে জীবনের শেষ মুহূর্তভেবে উল্লেখিত কাজগুলো থেকে বিরত থাকা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কেয়ামতের সব আলামত ও তার ভয়াবহতা থেকে হেফাজত করুন। ঈমান ও নেক আমলের ওপর জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
news24bd.tv/আলী