বিদেশি শত্রু দমনে ১৭৯৮ সালে 'এক্ম-ওয়াই-জেড' ফর্মুলার জন্ম!

বিদেশি শত্রু দমনে ১৭৯৮ সালে 'এক্ম-ওয়াই-জেড' ফর্মুলার জন্ম!

Other

'এক্ম', 'ওয়াই', 'জেড'।  ইংরেজী বর্ণমালার শেষ তিনটি অক্ষর। কিন্তু এর অত্যধিক ব্যবহার সর্বপরিসরে পৃথিবীব্যাপী। আমরা কতজন জানি শব্দগতভাবে 'ত্রি' বর্ণের প্রয়োগ বৃটিশ-ফ্রান্স যুদ্ধকে কেন্দ্র করে।

কুটনৈতিকভাবে এ ফর্মূলা অনেকটা কুটকৌশলগত, যা সর্বব্যাপী ব্যবহারিক একটি কৌশল মাত্র।  

একটি স্বীকৃত ব্যাপারও বটে। কিন্তু ফর্মুলাটির জনক কে? কবে, কোন দেশে, কি উদ্দেশ্য প্রথম এর প্রয়োগ হয়? তেমনি প্রশ্ন এর ফলাফল বা কি ছিলো? 

আজ থেকে দুই শতাব্দীকালেরও আগে অর্থাৎ ১৭৯৮ সালে এ ফর্মুলাটির আবিস্কার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস। জর্জ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে আমেরিকা স্বাধীনতা অর্জনের কয়েক বছরের মধ্যে।

 

উল্লেখ্য, ১৭৭৬  সালের ১৭ মার্চ বৃটিশ বাহিনীকে আমেরিকা ত্যাগে বাধ্য করা হলেও ১৭৮১ সালে বৃটিশ বাহিনী প্রধান সেনাপতি কর্ণওয়ালিশকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করানোর মাধ্যমে আমেরিকা স্বাধীনতা অর্জিত হয়। জর্জ ওয়াশিংটন ১৭৮৭ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট হলেও শাসনতন্ত্রের অধীনে হন ১৭৮৯ সালের ৪ মার্চ।  

৩০ এপ্রিল শপথ নিয়ে জর্জ ওয়াশিংটনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন জন অ্যাডামস। ফেডারেলস্টিরা তৃতীয় দফাও প্রেসিডেন্ট করতে চাইলে ওয়াশিংটন অপরাগতা জানান এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামসের কাছে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব অর্পণ করেন। আগেই বলেছি, ১৭৯৭ সালের ৩ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে কুটনৈতিক পর্যায়ে জন অ্যাডামস এ ত্রি-শব্দের ব্যবহার করলেও এখন তার ব্যবহারিক চরিত্র 'ক্ষেত্র বিশেষ' নয়।  


যে কারণে অভিনয় ছেড়েছিলেন প্রয়াত নায়ক শাহীন আলম

কলকাতায় বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুন, নিহত ৯

নামাজে মুস্তাহাব কাজগুলো কী জেনে নিন

কেয়ামতের দিন যে সূরা বান্দার হয়ে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে


বিশেষ গন্ডী পেরিয়ে তা পৃথিবীর সর্বত্র রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিমন্ডলও ছুঁয়েছে। বিষয়ভিত্তিক কুট-কৌশলী ফর্মুলারূপে ব্যবহৃত হচ্ছে। জনপ্রিয় এ শব্দ কথন যত্রতত্র হলেও এর আবিস্কারক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস করেছিলেন একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। কুটনৈতিক পরিচয়ের নিরাপত্তামুলক কৌশল হিসাবে ফ্রান্সে নিযুক্ত মার্কিন কুটনৈতিক হিসাবে হটেনগুয়ারকে -'এক্ম', বেলামীকে 'ওয়াই' ও হটেভালকে 'জেড' নামে চিহ্নিত করা হয়েছিলো।  

ফ্রান্স ও বৃটিশ যুদ্ধে আমেরিকার ভুমিকা কী হবে, সেনিয়ে মার্কিন কংগ্রেস পক্ষে বিপক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছিলো। আমেরিকান জাতির পিতা জর্জ ওয়াশিংটন প্রেসিডেন্ট থাকাকালেই ফ্রান্স ও বৃটিশ যুদ্ধের দাবানল বেজে ওঠে। ওয়াশিংটন নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করতে চাইলেও তার প্রভাবশালী দুই মন্ত্রী  প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আলেকজান্ডার হ্যামিলটন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী টমাস জেফারসন পক্ষে - বিপক্ষে অবস্থানগ্রহণ করেন।

হ্যামিলটন ওয়াশিংটনের পক্ষ নিলে রিপাবলিকান পন্থী নেতা টমাস জেফারসন এর তীব্র বিরোধী হয়ে ওঠেন। যদিও দল বলতে তখনও ফেডারেলিস্ট। তা ভেঙ্গে রিপাবলিকান পার্টি ও ডেমোক্রেট পার্টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শাসনতন্ত্র তখন স্বাধীনতার পতাকাবহনকারী ফেডারেলিস্ট পার্টি সরকারের ভিতকে শক্ত করতে পারেনি। বরং কোন্দল দেখা দেয়।  

ওয়াশিংটন  কংগ্রেসে প্রদত্ত প্রেসিডেন্ট অ্যাডামসের যুদ্ধের নীতিকৌশলসুলভ বানীকে " পাগলামী' বলে ঠাট্টা করলে অনেক গোপনীয় বিষয় উঠে আসে। ফ্রান্স ও বৃটিশের যুদ্ধে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রশ্মে জাতিকে রক্ষার জন্য প্রেসিডেন্ট অ্যাডামস মার্কিন কংগ্রেসে স্পর্শকাতর বিষয়ে অস্পষ্ট উচ্চারণ অব্যাহত রেখে এই তিনটি বর্ণের একত্রীকরণ রূপ ও এর ব্যবহারিক দিকটি প্রথম প্রকাশ করেন।

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন কুটনীতিকের চিঠি চালাচালিও 'এক্ম-ওয়াই-জেড' মর্মে হওয়ার বিষয়টি কংগ্রেসে তোলেন এমন একটা দিন যেদিন ১৭৯৮ সালের ৪ মার্চ ফেডারেলিস্ট পন্থী প্রেসিডেন্ট হিসাবে অ্যাডামসের কেবল এক বছর পূর্ণ হয়।  

উল্লেখ্য জেফারসন ছিলেন ফরাসী সমর্থক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এ্যাডামসের পরে সেই টমাস জেফারসনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।  

সোহেল সানি, লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

news24bd.tv আয়শা