বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের মতো উদার মনের মানুষ পৃথিবীতে বিরল

বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের মতো উদার মনের মানুষ পৃথিবীতে বিরল

Other

ছোটবেলায় স্কুলজীবনে প্রায়ই আমি সর্দি, ঠাণ্ডা, গলা ব্যথা ও কানপাকা সমস্যায় ভুগতাম। তখন ভাবতাম, বড় হয়ে নাক, কান ও গলার ডাক্তার হব। ১৯৭২ সালে মেডিকেল কলেজে ভর্তির পর আমার মা হৃদরোগে এবং চোখের ছানি রোগে আক্রান্ত হন। হৃদরোগের চিকিৎসা অত উন্নত মানের না হওয়ায় তখনকার চক্ষু চিকিৎসকরা মায়ের চোখের অপারেশন করতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন।

মেডিকেল কলেজে পঞ্চম বর্ষে থাকাকালীন আমার মা মারা যান। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম চোখের ডাক্তার হব।

১৯৮৩ সালের জানুয়ারি মাসে চক্ষু চিকিৎসক হওয়ার পর থেকে সর্বসাধারণের জন্য একটা চক্ষু হাসপাতাল করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করি। এটা ছিল আমার স্বপ্ন।

আমার এই স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেন বসুন্ধরা গ্রুপের মান্যবর চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। তাঁর মতো উদার মানুষ পৃথিবীতে বিরল।

তাঁর সহায়তায় ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ হয়। বসুন্ধরা গ্রুপ ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ হাসপাতাল নির্মাণে আমরা দেশ-বিদেশের বহু চক্ষু হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছি। একটা আধুনিক চক্ষু হাসপাতালের অবকাঠামো এবং এর ফাংশনাল দিকগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। আমাদের এই হাসপাতাল ও অপারেশন থিয়েটার বিশ্বের যেকোনো চক্ষু হাসপাতালের সমকক্ষ বলে আমরা দাবি করতে পারি। আমাদেরই আছে একমাত্র চক্ষু অপারেশন থিয়েটার, যেখানে আউটার জোন, ইনার জোন, এসেপটিক জোন ও ডিসপোজাল বে জোন রয়েছে। এসেপটিক চক্ষু থিয়েটার ও সেপটিক থিয়েটার পুরোপুরি আইসোলেটেড। এসেপটিক অপারেশন থিয়েটারটিতে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ রিলেটিভ হিউমিডিটি ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিশেষ এয়ারকন্ডিশনারের মাধ্যমে ইনফেকশন ফ্রি অ্যাটমসফিয়ার মেইনটেইন করা যায়। সার্বক্ষণিক দূষিত বায়ু দূর করে বিশুদ্ধ বায়ু প্রবেশ করানো যায়। এটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া সত্ত্বেও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেব অর্থায়ন করেছেন এবং শুরু থেকে প্রতি মাসে আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

আরও পড়ুন


শত্রুর হুমকি ও ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ ব্যর্থ হয়েছে: প্রেসিডেন্ট রুহানি

‘মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব প্রতিহত করতে চায় আমেরিকা’

দেশের বেশ কয়েক জেলায় বজ্রসহ শিলাবৃষ্টির আভাস

ট্রেনের টিকিট কাটতে হবে নতুন নিয়মে


২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রয়াত মুফতি আব্দুর রহমান (র. আ.) সাহেবের দোয়ার মাধ্যমে হাসপাতালের কাজ শুরু হয়। আমাদের হাসপাতালটি দেশের একমাত্র চক্ষু হাসপাতাল, যেখানে বিনা মূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য একই মানের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। মুসলমানদের জন্য আমাদের জাকাত ফান্ড আছে, যা সম্পূর্ণ শরিয়াহভিত্তিক। অন্যান্য ধর্মের জন্য ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ফান্ড আছে। আমরা বিভিন্ন চক্ষুশিবিরের মাধ্যমে ১০ হাজার ৫০০ রোগীর ফ্রি চিকিৎসা করেছি। হাসপাতালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৯ হাজার ৯৯৪ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি।

বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যান এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের যাঁরা এই সৎকর্মে জড়িত, আল্লাহ তাঁদের সবাইকে কবুল করুন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন।

প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমেদ, অবৈতনিক পরিচালক, বসুন্ধরা আই হসপিটাল এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট

news24bd.tv আহমেদ