অর্থনীতির চাকায় শক্তি যোগিয়েছে নারীও

অর্থনীতির চাকায় শক্তি যোগিয়েছে নারীও

Other

বাংলাদেশে নারী অধিকার বিষয়টি বটম আপ এপ্রোচে এসেছে বলেই এটি টেকসই হয়েছে এবং এগিয়েও যাবে।

দেশে নারীদেরকে প্রথমে ঘরের বাইরে এসে অর্থনীতির চাকায় শক্তি যোগানোতে যেসব ফ্যাক্টর খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সেগুলো হলো এনজিও এবং গার্মেন্ট। ড. ইউনূস তাঁর চানক্য বুদ্ধিতে ক্ষুদ্রঋণ নারীদের হাতে দেয়ার মাধ্যমে তাঁর ঋণকে যেভাবে নিরাপদ করেছেন একই ভাবে গ্রামের লাখ লাখ নারীকে 'গুরুত্বপূর্ণ' ভাবতে সহায়তা করেছেন।

একই বিষয় গার্মেন্ট সেক্টরেও।

অব্যবহৃত জনশক্তি হিসেবে সস্তায় পাওয়া যাবে ভেবে গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা যে শুরুতেই নারীদেরকে সম্পৃক্ত করেছেন সেটি যতই তাঁদের নিজের স্বার্থে হোক, এই বিষয়টি আমাদের দেশে নারীদরকে ঘরের বাইরে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমে যুক্ত করতে একটি মাইলফলক উদ্যোগ।  

গ্রামের হাজার হাজার তরুণি বাসে চড়ে, লঞ্চে চেপে এই ঢাকা শহরে জীবনে প্রথমবারের মতো এসেছেন, একটা ঘিঞ্জি ঘরে গাদাগাদি করে জীবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছেন- এই জীবন সুখের ছিল না, কিন্তু এই জীবন স্বাধীনতার ছিল। আমি ইনাদের সাথে একটা সময় কাজ করেছি।

দেখেছি যে তাঁদের অধিকাংশই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিজেরা নিয়েছেন।

একটা শাড়ি-চুড়ি-মোবাইল ফোন নিজের পয়সায় কিনেছেন, নিজের সহকর্মীকে নিজের সিদ্ধান্তেই বিয়ে করেছেন।
 
নারী অগ্রযাত্রায় প্রত্যেকটি সরকারই সাধ্যমতো ভূমিকা রেখেছে, একথা স্বীকার না করলে পাপ হবে। এর সম্মিলিত এফেক্টেই জন্ম থেকেই একটি ভঙুর অর্থনীতির, অশিক্ষা প্রবন দেশেও নারীরা আজকে যতদূর এগিয়েছেন সেটাকে খারাপ অর্জন বলা যাবে না। এই দেশ গণতন্ত্রের সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে নেতা মেনেছে, তাঁদেরকে ভোট দিয়ে সরকারের শীর্ষে বসাতে দ্বিধা করে নি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আশি ও নব্বই দশকের বড় অর্জন এগুলো।


হবু শ্বশুরকে আউট করে লজ্জায় পড়ে গেলেন শাহীন আফ্রিদি (ভিডিও)!

সেই বাস চালক- হেলপার রিমান্ডে

সরকারি চাকরিজীবিরা আরও ছাড় পাচ্ছেন!

কোম্পানীগঞ্জের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না: কাদের


কষ্টের বিষয় হচ্ছে, আমার এই অর্জনগুলো এরপর থমকে গেছে। আমরা এগুতে তো পারছিই না, বরং নারী অধিকার এখন বড় আকারের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। ধর্ষনের খবর বেড়েছে, তৃণমূলে নারীবিদ্বেষী ওয়াজের মাধ্যমে নারীদেরকে চাপিয়ে রাখার প্রবনতা আরও বিস্তৃত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে নারী নিগৃহ এখন ফ্যাশন হয়ে গেছে।

এতো কিছুর পরেও, এই দেশের নারীদেরকে আটকে রাখা যাবে না-এই বাস্তবতা সবাই মেনে নিলেই ভালো করতেন। গার্মেন্টের নারী, ধানের চাতালে কাজ করা নারী, সাইকেল চেপে স্কুলে যাওয়া নারী, কলসিন্দুর গ্রামের ফুটবলার তরুণি, আমার গ্রামের যে মেয়েটি এবার নার্সিং পাশ করে ফেলল, যে মেয়েটা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা হবে আগামী বছর, আমার অফিসের সামনের ফুটপাতে বসে চা বিক্রি করা খালা- এরা চরম তুফানের প্রতিকূলে জীবনের হাল শক্ত করে ধরে বসে আছে।

নারী অধিকারের এই যাত্রা হয়তো কখনো স্থিমিত হবে, কখনো দ্রুত গতিতে এগুবে, কিন্তু সে এগুবেই। যারা এর বাধা সৃষ্টি করতে  চাইবে, ইতিহাসের নর্দমায় এরা কীট হিসেবেই অন্ধকারে রয়ে যাবে মাত্র। নারীর অধিকারকে নারী-পুরুষের সমান মানবিক অধিকারে রূপান্তর করাটাই এই শতাব্দীতে আমাদের চ্যালেঞ্জ। আসুন, সেই ‌চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমি আপনি আমাদের ভূমিকাটুকু রেখে যাই।

নারী দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে।

(ফেসবুক থেকে)

news24bd.tv / কামরুল