করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এখন যা জানা দরকার

আনোয়ার সাদী

করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এখন যা জানা দরকার

Other

বৃহস্পতিবার রাতে আমার বউ হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো, তার বান্ধবী এস এম এস পাঠিয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দেওয়া নাকি নরওয়ে ও ডেনমার্ক বন্ধ করে দিয়েছে! বিবিসিতে খবরটা দেখাচেছ! আমরা তাড়াতাড়ি আল জাজিরা ধরলাম।  

দেখি, টিকারে ডেনমার্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে লেখা আছে রক্ত জমাট বাঁধার সঙ্গে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের কোনো যোগসূত্র আছে কী না তা খতিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎ অক্সফোর্ডের টিকা রক্তকে ঘন করে জমাট বেঁধে দেয় এমন কোনো প্রমাণ কেউ হাজির করেনি। একটা সন্দেহ হাজির করা হয়েছে।

আমরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলাম।  

করোনা ভাইরাসের যে সব টিকা এখন বিশ্বে আছে তার মধ্যে অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে আমাদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। কারণ আমরা এরিমধ্যে এই টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে বসে আছি। এমনকী আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ থেকে শুরু করে দেশের প্রথম সারির বুদ্ধিজীবী, সমরনায়ক, পেশাজীবী ও শিল্পপতিদের অনেকেই টিকা নিয়েছেন।

 

আমরা সম্মিলিতভাবে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার অপেক্ষায় আছি। কারণ আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসির মতো মনে করি, ভ্যাকসিন নেওয়া, মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা ও হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখা অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা মহামারিকে পরাস্ত করা সম্ভব।  


শিশুকে বেধড়ক পেটানো বন্ধ করুন  

বাঁচতে চাইলে মেনে চলুন

পরিচিত অনেকে মরে যাচ্ছে

নোয়াখালীর ঘটনা পশুদেরও লজ্জা দেবে


যাহোক শুক্রবার থাইল্যান্ডে অক্সফোর্ডের টিকা দেওয়া শুরু করার কথা ছিলো। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী টিকা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করতেন। সেটি স্থগিত করা হয়েছে। আমরা বলছি স্থগিত করা হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। মানে এই স্থগিতের অর্থ হলো সাবধানতা অবলম্বন করা।   

বিবিসি জানাচ্ছে  ইউরোপের প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষ এরিমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন। এদের মধ্যে  প্রায় ত্রিশটি ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাধার মতো লক্ষণের খবর প্রকাশ পেয়েছে। তবে ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় রক্ত জমাট বাধার কোন লক্ষণ তারা পায়নি।

অ্যাস্ট্রাজেনেকাও বলছে, ব্যাপক ভিত্তিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে এই টিকার নিরাপত্তা সম্পর্কে সমীক্ষা করা হয়েছে।

থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউরোপের সঙ্গে  থাইল্যান্ডে আসা টিকার ব্যাচ আলাদা, আর রক্ত জমাট বাধার সমস্যা এশিয়ানদের মধ্যে সাধারণভাবে দেখা যায়নি।   

এদিকে, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া টিকা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে।    ডেনমার্ক, নরওয়ে ও আইসল্যান্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা দেয়া আপাতত স্থগিত করেছে। তারা ঘটনা খতিয়ে দেখছে।  

বিবিসির খবরে আরো বলা হয়েছে ইতালি ও অস্ট্রিয়া অবশ্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচের টিকার ব্যবহার পূর্ব সতর্কতা হিসেবে বন্ধ করেছে।

ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি জানিয়েছে, ডেনমার্কের সিদ্ধান্ত পূর্বসতর্কতা হিসেবে নেয়া এবং রক্ত জমাট বাধার যেসব খবর এসেছে সেগুলোর বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত হচ্ছে।


ছাত্রীর দুঃখজনক মৃত্যু, দিহান ও ভরসার প্রেম

আপনি কী শেখ হাসিনার ফোন পেয়েছেন?

যুক্তরাষ্ট্রে মারামারি কী হবেই?


যাহোক, অক্সফোর্ডের  এই টিকা নেওয়ার পর কার কী সমস্যা হচেছ তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষন করছে টিকা প্রস্তুতকারীরা।   এই খবর এর আগেও আমরা পড়েছি। এখন পর্যবন্ত বাংলাদেশে টিকা নেওয়ার পর জ্বর, শরীরে ব্যাথার মতো নানা মৃদু উপসর্গের কথা আমরা জেনেছি।   কারো কোনো বড় ধরনের সমস্যা হয়নি বলে  আমাকে জানিয়েছেন ডা.মুশতাক আহমেদ। তিনি  আইইডিসিআরের  উপদেষ্টা।   

তিনি বলছেন, এখন আমরা যে টিকা নিচ্ছি বিশ্বজুড়ে তাও এক ধরনের ট্রায়াল। যাকে বলে পোস্ট প্রোডাকশন ট্রায়াল। তবে অক্সফোর্ডের টিকা নিরাপদ, এটা নিয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডা.মুশতাক আহমেদ, প্রফেসর শুভাগত চৌধুরী এবং প্রফেসর কামরুল হাসান।  

যাহোক, লং স্টোরি শর্ট করি। এই টিকা নিলেই সঙ্গে সঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরী হয়ে গেলো তা নয়। নির্দিষ্ট সময় টিকাকে কাজ করার জন্য সময় দিতে হবে। এরসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে পুরো মাত্রায়। অর্থাৎ এখনো অসচেতন হওয়ার বা মাস্ক ব্যবহার না করা মানে নিজের ক্ষতি নিজের জন্য ডেকে আনা।  

আনোয়ার সাদী, সিনিয়র নিউজ এডিটর, নিউজ টোয়েন্টিফোর।

news24bd.tv নাজিম